আমি ভাই মুসলমান । আমার মঙ্গল চাওয়ার জন্য নামাজে দোয়া করলে হয় । শোভাযাত্রা করা লাগে না । আপনি যদি মুসলমান না হয়ে হিন্দু হন, আমি আপনাকে সম্মান করি । আপনি মঙ্গল শোভাযাত্রা করেন।
আমার লাল সাদা রঙ এ কোন এলার্জি নাই। কেউ যদি বলে লাল রঙ মানে সিদুর আর সাদা রঙ মানে শাখা , তাহলে আমি বলব লাল রঙ মানে রক্ত আর সাদা মানে কাফন। তবে আপনি যদি আমাকে বলেন ভোরবেলা যখন সুর্য উঠবে উঠবে করছে তখন রমনার বটমুলে বাদ্যযন্ত্র নিয়ে বসে যেতে আর সবাই মিলে এসো এসো করতে তাহলে আমার সমস্যা আছে । কারন তখন আমার ফজরের ওয়াক্ত । তখন আমার সোজা হয়ে দাড়ানোর সময়, সৃস্টিকর্তার সাথে কথা বলার সময় । আপনার যদি সৃস্টিকর্তার সাথে কথা বলার ইচ্ছা না থাকে আপনি যেতে পারেন। আমি শুধু মনে করিয়ে দিতে পারি ।
আমি আর বৈশাখের ইতিহাসে যাব না । সে ইতিহাস ঘাটলে আপনি ই বিপদে পরবেন যদি আপনি মুসলমান হয়ে থাকেন। আমি শুধু বলব দশ থেকে পনের বছর আগে এই দিনটি আমরা কিভাবে পালন করতাম ? ধরে নিলাম এটা আমাদের সংস্কৃতির অংশ । সংস্কৃতি যদি আমার ধর্মের অনুকুলে যায় সেটা মেনে নিতে আমার কোন আপত্তি নাই । দশ পনের বছর আগেও এমন সংস্কৃতি ছিল না । এই দিনটিতে আক্ষরিক অর্থে হালখাতাই হত । দেনা পাওনা শোধ করা হত । প্রতিবেশীদের বাসায় খবর নেয়া হত, খাবার আদান প্রদান হত, গরীবদের খাওয়ানো হত। এইগুলো আমার ধর্মের বিরুদ্ধে না । আমি এভাবে পহেলা বৈশাখ পালন করতেই পারি ।
আমি কবিগুরুর মত অগ্নিস্নান করতে পারব না , ওযু করতে পারব। আপনার যদি অগ্নিস্নান করতে ইচ্ছা করেন আপনি বটমুলে অধীর আগ্রহে বসে থাকুন কখন সুর্য অগ্নিস্নান করায়।
আমার বউ নিয়ে ঘুরতে যেতে আপত্তি থাকার কথা নয় । বউ তো প্রায় বলে আমি নাকি কোথাও নিয়ে যাই না। বন্ধের দিন যখন পাওয়াই গেল আমার ঘুরতে যেতে আপত্তি নেই। আসেন আমরা ঘুরতে যাই রাংগামাটি, বান্দরবন , কক্সবাজার ,সিলেট । পারিবারিক বন্ধন দৃঢ করি । কিন্তু আপনি যদি আমাকে বলেন শাহবাগ ,টিএসসিতেই যেতে হবে এবং মংগল শোভাযাত্রায় অংশ নিতে হবে, তাহলে আমার এলার্জি আছে ভাই । মঙ্গল যদি ভাই অই একদিনে এভাবেই আসত, তাহলে সারাবছর এতো অমংগল হত না।
যারা বলেন, আরে এগুলা হচ্ছে আমাদের বাংগালি সংস্কৃতি । এসবের মধ্যে কেন যে তুই ধর্ম টর্ম টেনে আনতেসস আমি বুঝতেসিনা । তুই নিজেও তো একসমইয় পহেলা বৈশাখে টিএসসি তে যাইতি ।
গতবারের কথা মনে আছে ?
কিভাবে আমরা এখন পালন করি তা কি আবার মনে করিয়ে দিতে হবে ? ভীড়ের মধ্যে ঠেলাঠেলি করার আগে চিন্তা করে দেখুন আপনি সেইফ কিনা । সেই পশুগুলো যে এইবারো ওত পেতে নেই সেটা আপনি কিভাবে শিওর হলেন ? আপনি "বখাটে ছেলের ভীড়ে ললনারা হেটে যায় " গাইতে গাইতে মেলায় যাবেন আর বখাটে ছেলেরা আপনাকে ছেড়ে দিবে সেটা কিভাবে ভাবলেন ?
কি দরকার শিরক করার যদি আপনি মুসলিম হয়ে থাকেন ? সংস্কৃতির কোন কাজ যদি ধর্ম পালন করতে বাধা হয়ে থাকে তাহলে আপনাকে আগে ঠিক করতে হবে কোনটিকে আপনি প্রাধান্য দিচ্ছেন ।
পরিশেষে বলবো, সংস্কৃতির নামে শিরক করা থেকে নিজে বিরত থাকুন, নিজের পরিবারকে বিরত রাখুন।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে শিরক থেকে বাঁচিয়ে রাখুন।
আমিন।।
0 মন্তব্যসমূহ