সোস্যাল মিডিয়ায় বহুল প্রচলিত একটি জাল হাদিস ও কিছু ভ্রান্ত ধারনা !!!

সোস্যাল মিডিয়ায় বহুল প্রচলিত একটি জাল হাদিস ও কিছু ভ্রান্ত ধারনা !!!
_________________

● অমুক তারিখে শবে বরাত!
● অমুক তারিখে মাহে রমজান শুরু!
● অমুক তারিখে ঈদুল ফিতর!
● অমুক তারিখে ঈদুল আজহা!
.
‘‘হযরত মুহাম্মদ (স:) বলেছেন, যে ব্যক্তি এ খবর প্রথম কাউকে দিবে , তার জন্য জাহান্নামের আগুন হারাম হয়ে যাবে।’’
__
.
‘‘অমুক কালেমা ১০জন ফ্রেন্ডকে মেসেজে পাঠান, আগামি ৩দিনের মধ্যে একটি সুঃসংবাদ পাবেন । আর না পাঠালে আগামী ১০ বছরেও কোন ভাল সংবাদ পাবেন না।"
.
______
.
এসব কি ভাই...? অজ্ঞতারও তো একটা লিমিট আছে নাকি। একবার ভেবে দেখারও প্রয়োজন মনে করলেন না যে কিসের ভিত্তিতে প্রচার করছেন আর কার নামে মিথ্যা প্রচার করছেন? কোনরূপ যাচাই-বাছাই না করেই সবাই এগুলো প্রচার করেই যাচ্ছেন!
.
এই মেসেজ পাঠিয়ে কেউ যদি সুখবর না পায় তাহলেতো মানুষ ইসলামকেই দায়ী করবে।
.
আসলেই কি ইসলামে এধরণের কোন সুখবর প্রচার করার ভিত্তি আছে কিনা এবং শুধুমাত্র রমাদ্বানের খবরের নামে তার আগাম তারিখ পৌছে দিলেই জাহান্নামের আগুন হারাম হয়ে যেত তাহলে তো সালাত, সিয়াম, হজ্জ, যাকাত সহ অন্যান্য সুন্নাতের কোন প্রয়োজনই হতো না সকলে রমজানের খবর পৌছে দিয়েই জান্নাত হাসিল করে ফেলতো? রাসূল সাঃ এই ধরনের কোন হাদিস তার ‍উম্মাতকে প্রচার করতে বলেছেন অথবা তার কোন সাহাবী প্রচার করেছেন কি কোন কালেমা ৩দিনের মধ্যে ভাল সংবাদ পাবার আশায়? কোথায় আছে এসব, কোন হাদীছগ্রন্থে পাওয়া যাবে? রেফারেন্স টা জানার কোন প্রয়োজন মনে হয়না আপনাদের?
.
আপনার/আমার এই অজ্ঞতার কারণে যখন কোন মুসলিম কালেমা বা আল্লাহর পবিত্র নাম গুলো ১০জন কে পাঠায় এবং ৩দিনের মধ্যে সে যদি কোন সুসংবাদ না পায় তবে কালেমা বা আল্লাহর নামের প্রতি তার আস্থা বিনষ্ঠ হতে পারে। সে ভাবতে পারে, হয়তো আল্লাহর নাম বা কালেমার সুসংবাদ দেয়ার কোন ক্ষমতা নেই... (নাউজুবিল্লাহ!)
.
ঠিক একইভাবে ঈহুদী- নাসারা’রা ইসলামকে ধংস করার জন্য (যদিও কস্মিনকালেও সম্ভব নয়) ও মুসলিমদের ঈমানকে দুর্বল করার জন্য সর্বদা বিভিন্ন ফন্দি-ফাঁদ পেতে চলেছে। আর রাসূল (সা.) এর নামে কোন কথা বলতে সাহাবীগণ (রা.) কতটা সাবধানতা অবলম্বন করেছেন আপনার জানা আছে? আমাদের জেনে রাখা উচিত যে রাসূল সা. এর নামে মিথ্যারোপ করা অন্য কোন সাধারণ ব্যক্তির ন্যায় সমান নয় কারণ তার প্রতি মিথ্যারোপ করার প্রতিফল সরাসরি জাহান্নাম!
.
.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,
.
ﺑﺎﺏ ﺇِﺛْﻢِ ﻣَﻦْ ﻛَﺬَﺏَ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻣَﻜِّﻲُّ ﺑْﻦُ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴﻢَ، ﻗَﺎﻝَ ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻳَﺰِﻳﺪُ ﺑْﻦُ ﺃَﺑِﻲ ﻋُﺒَﻴْﺪٍ، ﻋَﻦْ ﺳَﻠَﻤَﺔَ، ﻗَﺎﻝَ ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳَﻘُﻮﻝُ " ﻣَﻦْ ﻳَﻘُﻞْ ﻋَﻠَﻰَّ ﻣَﺎ ﻟَﻢْ ﺃَﻗُﻞْ ﻓَﻠْﻴَﺘَﺒَﻮَّﺃْ ﻣَﻘْﻌَﺪَﻩُ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ
.
‘‘যে ব্যক্তি আমার নামে মিথ্যারোপ করল, সে তার ঠিকানা জাহান্নামে বানিয়ে নিল" তিনি আরো বলেন, "যে ব্যক্তি আমার নামে এমন কোন কথা বলল যা আমি বলিনি, সে যেন তার বাসস্থান জাহান্নামে বানিয়ে নিল’’ [বুখারী হা/১১০, মুসলিম হা/৩, তিরমিযী হা/২৬৬২, আহমাদ হা/৮০৬৭]
.
.
রাসূল (সাঃ) আরো বলেন,
ﺑَﺎﺏُ ﺍﻟْﺤَﺚِّ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﺘَّﺜَﺒُّﺖِ ﻓِﻴْﻤَﺎ ﻳَﻘُﻮْﻟُﻪُ ﻭَﻳَﺤْﻜِﻴْﻪِ ﻭَﻋَﻦْ ﺃَﺑﻲ ﻫُﺮَﻳﺮَﺓَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻪُ : ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗَﺎﻝَ : ‏« ﻛَﻔَﻰ ﺑِﺎﻟﻤَﺮْﺀِ ﻛَﺬِﺑﺎً ﺃَﻥْ ﻳُﺤَﺪِّﺙَ ﺑِﻜُﻞِّ ﻣَﺎ ﺳَﻤِﻊَ ‏» . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
.
‘‘কোন ব্যক্তির মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা শুনবে (সত্যতা যাচাই না করে) তাই প্রচার করবে’’ [মুসলিম হা/৫, আবু দাউদ হা/৪৯৯২, মিশকাত হা/১৫৬, রিয়াযুস স্বা-লিহীন হা/১৫৫৫]
______
.
.
আর সেজন্যই আসুন আমার মুসলিম ভাই ও বোনেরা আমরা ইসলাম প্রচারে আরো বেশী সতর্ক ও সচেতন হই! শুধুমাত্র ফজিলত আর সওয়াবের আশায় ইসলামের নাম দিয়ে এমন কোন সংবাদ প্রচার না করি যার পরিণাম হয়ে যাবে সেই ভয়াবহ জাহান্নাম!
▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ