বিদআত কি, বিদআত কাকে বলে, বিদআতের পরিনতি পরিনাম কি?



বিদআত: বিদআত হচ্ছে দিনের মধ্যে নতুন কিছু সৃষ্টি।
 বিদআত হল, ধর্মের নামে ধর্মের মধ্যে নতুন আবিস্কৃত বিষয়। যা আল্লাহ বলেননি, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহ দ্বারা যা প্রমাণিত নয় , সাহাবায়ে কেরামের কেউ যা করেননি তা দীনি বা সওয়াবের কাজ বলে আমল করার নাম হল বিদআত বিদআত যেমন কর্মে হয় তেমনি আকীদা- বিশ্বাসেও হয়ে থাকে
আল্লাহ তাআলা বলেন -
অতঃপর সত্যের পর ভ্রষ্টতা ছাড়া কী থাকে? (সূরা ইউনুস আয়াত: 3২)
অর্থাৎ, ইসলাম পূর্ণতা লাভ করার পর ইসলামের নামে দীনের মধ্যে যা কিছু সংযোজিত , আবিস্কৃত ও প্রচলিত হবে সব কিছুই ভ্রান্ত বলে প্রত্যাখ্যাত হবে আর তা বিদআত বলে গণ্য হবে।
আল্লাহ তাআলা অন্যত্র বলেন -
আমি এ কিতাবে কোন কিছু বাদ রাখিনি। (সূরা আনআম, আয়াত: 38)
অর্থাৎ, আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারীমে সব কিছু যখন বলে দিয়েছেন তখন ধর্মে নতুন কোন বিষয় সংযোজন বা বিয়োজন করার প্রয়োজন নেই যে কোন ধরনের সংযোজন ও বিয়োজনই বিদআত বলে গণ্য হবে
আল্লাহ তাআলা আরও বলেন -
অতঃপর কোন বিষয়ে যদি তোমরা মতবিরোধ কর তাহলে তা আল্লাহ ও রাসূলের দিকে প্রত্যার্পণ করাও (সূরা নিসা, আয়াত: 59)
 আল্লাহ তালাআ বলেন, (সূরা হাশর 59/7 নংআয়াত)
।। "রাসূল তোমাদের যা দিয়েছেন তা গ্রহন কর দ তিনি যা নিষেধ করেছেন তা বর্জনকর আর আল্লাহকে ভয় করো নিশ্চয়ই তিনি কঠিন শাস্তিদাতা ..
হে ঈমানদারগন তোমরা আল্লাহকে মান্য কর। আর রাসূলের আনুগত্য কর। তোমরা তোমাদের আমল বাতিল করো না।
(মুহাম্মদ 47/33)
নবী হে! তুমি বল, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালবাসতে চাও, তাহলে আমার অনুসরন কর। আল্লাহ তোমাদের ভালবাসেন এবং তোমাদের পাপ ক্ষমা করে দিবেন। আল্লাহ বড় ক্ষমাশীল ও দয়াশীল। (আলে ইমরান 3/31)
আয়েশা রাঃ বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাঃ বলেছেন, "যে ব্যাক্তি আমাদের এই দ্বীনের মধ্যে নতুশ কিছুর উদ্ভব ঘটাল, যা তার মধ্যে নেই, তা প্রত্যাখ্যাত। (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত হা / 140)>
জাবের রাঃ বলেন, রাসূল ছাঃ হামদ ও ছালাতের পর বলেন, নিশ্চয়ই শ্রেষ্ঠ বানী হল আল্লাহর কিতাব এবং শ্রেষ্ঠ হেদায়াত হল মুহাম্মাদের হেদায়াত। আর নিকৃষ্টতম কাজ হল দীনের মধ্যে নতুন সৃষ্টি এবং প্রত্যেক সৃষ্টিই হল ভ্রষ্টতা (মুসলিম, মিশকাত হা / 141) আর নাসাঈতে রয়েছে ভ্রষ্টতার পরিনতি জাহান্নাম। (নাসাঈ হা / 1578)
আয়েশা রাঃ বলেন, রসূলুল্লাহ ছাঃ বলেছেন, যে ব্যক্তি এমন আমল করল যাতে আমার কোন নির্দেশনা নেই, তা পরিাজ্য। (মুসলিম হাদীস 1718)
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, "যে ব্যক্তি এমন আমল করবে যার ব্যাপারে আমার শরীতের নির্দেশনা নেই, উহা প্রত্যাখ্যাত।" (মুসলিম হা / 3২43)
তিনি আরো বলেন- "নিঃসন্দেহে সর্বোত্তম কথা হচ্ছে আল্লাহ্র কিতাব, সর্বোত্তম পদ্ধতি হচ্ছে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর পদ্ধতি। আর নিকৃষ্ট কাজ হচ্ছে শরীয়াতে নতুন কিছু সৃষ্টি করা, এবং প্রত্যেক বিদ'আত হচ্ছে ভ্রষ্টতা। (মুসলিমঃ 768)
"রাসুল (সাঃ) আরো বলেছেন-যে আমার সুন্নাহ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে সে আমার দলভুক্ত নয় । [বুখারীঃ 5063]
অর্থাৎ যে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর পদ্ধতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে নতুন নতুন ইবাদাত আবিষ্কার করবে অথবা আল্লাহ্র নৈকট্যের জন্য নতুন নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করবে সে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর পদ্ধতিকে তুচ্ছ মনে করল।
যে কোন সাধারন মানুষকে যদি জিজ্ঞাস করা হয় যে- আল্লাহ্ যথাযথ ইবাদের জন্য এবং আল্লাহ্র নৈকট্য লাভের জন্য রাসুল (সাঃ) এর দেখিয়ে দেয়া পদ্ধতি এবং ইবাদাত সমূহ উত্তম নাকি কোন বড় আলেমের দেখিয়ে দেয়া পদ্ধতি এবং ইবাদাত সমূহ উত্তম ???
-নিঃসন্দেহে রাসুল (সাঃ) -এর দেখিয়ে দেয়া পদ্ধতি-ই এবং ইবাদাত সমূহ-ই উত্তম হবে।
অতএব কেউ যদি আর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর রাসুল (সাঃ) -এর দেখিয়ে দেয়া পদ্ধতি এবং ইবাদাত সমূহকে উত্তম মনে না করে, বর্তমান যুগের আলেমদের দেখিয়ে দেয়া পদ্ধতি এবং ইবাদাত সমূহকে উত্তম মনে করে তবে উপরের হাদিস অনুযায়ী সেই ব্যক্তি আর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর উম্মত-ই থাকবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ