.
সত্যি বলতে আমাদের দেহের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দুটি নসিহত করে:
১) আমরা আল্লাহর অনুগত গোলাম, তোমার নয়।
২)
আমাদের ভুল পথে পরিচালিত করো না, নচেৎ আমাদের শক্তি কেড়ে নেয়া হবে।
.
আল্লাহ বলেন, 'বলো, "তোমরা কি ভেবে দেখেছ, আল্লাহ যদি তোমাদের শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নেন এবং তোমাদের অন্তরে মোহর এটে দেন, তবে আল্লাহ ছাড়া আর কোনো মাবুদ কি আছে যে তোমাদেরকে এগুলো ফিরিয়ে দেবে?"' [সূরা আনআম, ৪৬]
.
ইমাম ইবনুল-জাওযী রহ. বলেন,
'চোখ, কান—এগুলো অন্তরের অঙ্গ। এ দিয়ে অন্তর অনুভব করে, ধারণ করে। গোটা জগতের যা কিছুই এই দুইয়ের সামনে আসে, তারা অন্তরের কাছে সেসব বিষয় মেলে ধরে। কিন্তু আল্লাহ যদি তাদেরকে নিষেধ করে দেন, অন্তর বা মস্তিষ্কে কোনো খবর পৌঁছুবে না।
এর দ্বারাই স্রষ্টার অস্তিত্বের প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত হয়। অর্থাৎ চোখ, কান এগুলো স্রষ্টার আনুগত্যেরই প্রকাশ ঘটায় এবং তাঁর অবাধ্যতার ব্যাপারে ব্যক্তিকে শাস্তির ভয় দেখায়।'
[সাইদুল খতির, পৃঃ ১৯৬ , কিঞ্চিৎ পরিমার্জিত]
.
আমাদের দেহের প্রতিটি অঙ্গই আমাদের অন্তরের চিত্র ফুটিয়ে তোলে। আমাদের সাবধান করে। জানিয়ে দেয় আসন্ন বিপদের পূর্বাভাস। কিন্তু আমাদের ক্ষীণ বোধশক্তি দিয়ে সবসময় তা বুঝতে পারি না। এ জন্য দেখবেন, অনেকে সিনেমার নায়ক নায়িকাদের মাঝে সৌন্দর্য খুঁজে পায়, তাদের মতো হতে চায়। আবার প্রিয়জনদের মৃত্যু দেখে। তাদের কবরে রেখে আসে। তবুও কোনো পরিবর্তন নেই।
.
সত্যি বলতে তাদের অন্তরের দৃষ্টিশক্তি নেই। অন্তর জুড়ে অন্ধকার ছড়িয়ে গেছে। আর এই অন্ধকারে দীর্ঘদিন বসবাসের ফলে সে ভুলে গেছে প্রকৃত আলোর সংজ্ঞা। তাই সব কিছুই তার কাছে সমান। গভীর অন্ধকারে যাকেই হাতের নাগালে পায়, তাকেই পথপ্রদর্শক ভেবে আগায়। ফলে হারিয়ে যায় অন্ধকারের অতল গহ্বরে।
.
এই জন্যই ইমাম ইবনুল-কাইয়্যিম রহ. বলতেন,
'আল্লাহ তা'আলা কুরআনকে করেছেন অন্তরের জন্য প্রাণস্বরূপ, বানিয়েছেন দ্যুতিময়। তাই কুরআনের অপর নাম রূহ (আত্মা) এবং নূর (আলো)। যে এই আলোয় আলোকিত হলো, সে প্রকৃত জীবন পেল। আর যে থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলো, তার মৃত্যু ঘটবে অন্ধকারের অতল গহ্বরে।'
[নূরুন আলা নূর, পৃঃ ১৬, সীরাত পাবলিকেশন]
#মহিউদ্দিন_রূপম
শেয়ার করুন ইনশাআল্লাহ।
--- Islamic Thinking Bangladesh (Way to Jannah)
0 মন্তব্যসমূহ