সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত অধিক ফজিলতপূর্ণ কিছু সুরা ও আয়াত
===========================
১- সুরা ইখলাসের ফজিলতঃ
#রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুরা ইখলাস সম্পর্কে বলেছেনঃ
“নিঃসন্দেহে এটি কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমান”।
মুসলিম ৮১২, তিরমিযী ২৮৯৯, ইবনু মাজাহ ৩৭৮৭, আহমাদ ৯২৫১।
#রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবীগণকে বললেন, “তোমরা কি এক রাতে এক তৃতীয়াংশ কুরআন পড়তে পারনা”? প্রস্তাবটি সাহাবাদের জন্য কঠিন মনে হল। তাই তাঁরা বলে উঠলেন, “হে আল্লাহর রসুল! এই কাজ আমাদের মধ্যে কে করতে পারবে”? (অর্থাৎ কেউ পারবে না।)
তিনি বললেন, “ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদ, আল্লাহুস স্বামাদ” (সুরা ইখলাস) কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমান”। (অর্থাৎ এই সুরা পড়লে এক তৃতীয়াংশ কুরআন পড়ার সমান নেকী পাওয়া যাবে)।
সহীহুল বুখারী ৫০১৫, নাসায়ী ৯৯৫, আবু দাউদ ১৪৬১, আহমাদ ১০৬৬৯।
#এক সাহাবী এসে বলল, “হে আল্লাহর রসূল! আমি এই (সূরা) ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদকে ভালবাসি”। তিনি বললেন, “এর ভালবাসা তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে”।
বুখারীর ৭৭৪নং হাদীসের পরবর্তী অধ্যায়, তিরমিযী ২৯০১, আহমাদ ১২০২৪
#রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
“যে ব্যক্তি সুরা ইখলাস ১০ বার পাঠ করবে, তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর বানানো হবে”।
সহীহ আল-জামি আস-সগীর ৬৪৭২।
#রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক ব্যক্তিকে সুরা ইখলাস তেলাওয়াত করতে শুনলেন। তিনি বললেন “এটা তার অধিকার”। সাহাবারা জিজ্ঞাস করলেন, তার অধিকার কি? তিনি উত্তর দিলেন, “তার অধিকার হচ্ছে জান্নাত”।
মুসনাদে আহমাদঃ ৭৬৬৯।
***দিনে রাতে যতবার ইচ্ছা, বেশি বেশি করে সুরা ইখলাস পড়া যাবে।
===================================
২- *সুরা মুলকের ফজিলত*
🍃
➖আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
“নিশ্চয় পবিত্র কুরআনে একটি সূরা, যাতে আছে তিরিশটি আয়াত। উহা পাঠকারীর জন্য সুপারিশ করবে, যে পর্যন্ত তাকে ক্ষমা না করা হয়। সূরাটি হচ্ছে “তাবারাকাল্লাযী বি ইয়াদিহিল মুল্কু..”।
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন আবু দাউদ, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, ইবনে হিব্বান এবং হাকেম। হাদীছের বাক্য তিরমিযীর, তিনি হাদীছটিকে হাসান বলেছেন। আর হাকেম বলেছেন, এর সনদ সহীহ)
➖আবদুল্লাহ্ বিন মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
“কবরস্থিত ব্যক্তির নিকট পায়ের দিকে দিয়ে ফেরেশতারা শাস্তির জন্য আসতে চাইবে। তখন তার পদদ্বয় বলবে, আমার দিক দিয়ে আসার রাস্তা নেই। কেননা সে সূরা ‘মুলক’ পাঠ করত। তখন তার সীনা অথবা পেটের দিক দিয়ে আসতে চাইবে। তখন সীনা অথবা পেট বলবে, আমার দিকে দিয়ে আসার কোন রাস্তা তোমাদের জন্য নেই। কেননা সে আমার মধ্যে সূরা ‘মুলক’ ভালভাবে ধারণ করে রেখেছিল। অতঃপর তার মাথার দিক দিয়ে আসার চেষ্টা করবে। মাথা বলবে এ দিক দিয়ে আসার রাস্তা নেই। কেননা সে আমার দ্বারা সূরা ‘মুলক’ পাঠ করেছিল। সূরা মুলক হচ্ছে বাধাদানকারী। কবরের আযাব থেকে বাধা দিবে। তাওরাতেও সূরা ‘মুলক’ ছিল। যে ব্যক্তি উহা রাত্রে পাঠ করে, সে অধিক ও পবিত্র-উৎকৃষ্ট আমল করবে।”
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন হাকেম, তিনি বলেন, এর সনদ সহীহ।)
➖নাসাঈতে হাদীছটি সংক্ষিপ্তভাবে এসেছেঃ
“যে ব্যক্তি প্রতি রাতে তাবারাকাল্লাযী বি ইয়াদিহিল মুলকু.. পাঠ করবে, আল্লাহ্ তাকে কবরের আযাব থেকে রক্ষা করবেন।”
ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ্(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর যুগে সূরাটিকে মানেআ’ বা বাধাদানকারী সূরা বলে আখ্যা দিতাম। উহা আল্লাহ তা’আলার কিতাব কুরআনের মাঝে একটি গুরুত্বপূর্ণ সূরা, যে ব্যক্তি প্রতি রাতে উহা পাঠ করবে সে অধিক ও উৎকৃষ্ট আমল করবে।
শায়খ আলবানী বলেন, হাদীছটি হাসান। দ্র: সহীহ তারগীব ও তারহীব, হা/ ১৪৭৫ ও ১৪৭৬।
*সন্ধ্যার পর ঘুমানোর পূর্বে যে কোন সময় সূরাটি পড়তে পারেন। কোন অসুবিধা নেই।*
~শাইখ আব্দুল্লাহ আল কাফী।
==================================
৩- আয়াতুল কুরসির ফজিলত
কুরআন মাজিদের সর্বশ্রেষ্ঠ আয়াত- আয়াতুল কুরসি, যার ফজিলত এতো বেশি যে, রাসুল সাঃ বলেছেন, প্রত্যেক ফরজ নামাযের পর এই আয়াত পাঠ করলে মৃত্যু ছাড়া জান্নাত যাওয়ার পথে পাঠকারীর জন্য আর কোন বাধা থাকে না। (সহীহ জামে’ ৫/৩৩৯, সি: সহীহাহ্ ৯৭২)
================================
৪- সূরা কাহাফ এর ফযিলত----
'
১। হযরত বারা (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাতে সূরা কাহাফ তেলাওয়াত
করছিলেন। তার কাছে দুটি রশি দিয়ে একটি ঘোড়া বাঁধা ছিল। এরই মধ্যে
একটি মেঘখণ্ড এসে তাকে ঢেকে ফেলল। এরপর যখন মেঘখণ্ডটি তার কাছে চলে আসছিল, তখন তার ঘোড়া ছোটাছুটি করতে লাগল। অতঃপর
সকালে ওই ব্যক্তি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে
রাতের ঘটনা বললেন। তিনি বললেন, ওটা ছিল সাকিনা (রহমত), যা কোরআন তেলাওয়াতের বরকতে নাজিল হয়েছিল। (সহিহ বুখারি ৫০১১, ৩৬১৪; সহিহ মুসলিম ৭৯৫)
২। আবু সাইদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যে ব্যক্তি জুমু‘আর দিন সূরা কাহাফ তিলাওয়াত করবে, আল্লাহ তা‘আলা এ জুমু‘আ থেকে পরবর্তী জুমু‘আ পর্যন্ত তার
জন্য নূরের আলো দ্বারা আলোকিত করে রাখবেন”। বাইহাকী, হাদিস: ৬০৬,
৩। হযরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত আছে, যে সূরা কাহাফের প্রথম ১০ আয়াত মুখস্ত করে সে দাজ্জালের ফিৎনা হতে নিরাপদ
থাকবে। তাঁর থেকে আরেকটি রেওয়ায়েতে শেষ ১০ আয়াতের ব্যাপারে উল্লিখিত ফজিলতের বর্ণনা রয়েছে। (মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজি, নাসাঈ ও মুসনাদে আহমদ)
সুতরাং প্রথম বা শেষ ১০ আয়াত অথবা উভয় দিক দিয়ে মোট ২০ আয়াত যে মুখস` করবে সেও উল্লিখিত ফজিলতের অন্তর্ভুক্ত হবে।
==================================
৫- সুরা বাকারার শেষ ২ আয়াতের ফজিলত-
***রাতের বেলা সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত তেলাওয়াত করলে তাহাজ্জুদের সমান সওয়াব পাওয়ার আশা করা যেতে পারেঃ
রাসুলুলাহ (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি রাতের বেলা সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পড়বে সেটা তার জন্য যথেষ্ঠ হবে”।
বুখারি ৫০১০, মুসলিম ৮০৭।
বিখ্যাত হাদীস গ্রন্থ “রিয়াদুস সালেহীন” এর লেখক ও সহীহ মুসলিমের ভাষ্যকার, ইমাম আন-নববী (রহঃ) বলেন,“এর অর্থ কেউ বলেছেনঃ কিয়ামুল লাইল বা তাহাজ্জুদ নামাযের জন্য যথেষ্ঠ হবে। কেউ বলেছেনঃ শয়তানের ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য যথেষ্ঠ হবে। কেউ বলেছেনঃ বালা-মুসিবত থেকে নিরাপত্তা পাওয়া যাবে। তবে সবগুলো অর্থ সঠিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। [শারহুন নববী আ’লা সহিহ মুসলিমঃ ৬/৩৪০, হাদীস ৮০৭।]
আবু মাসউদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন,“যে ব্যক্তি সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত রাতে পাঠ করবে,তার জন্য এ দুটি আয়াত যথেষ্ট হবে। (অর্থাৎ সারারাত সে জিন ও মানুষের অনিষ্ট থেকে নিরাপদ থাকবে এবং প্রতিটিঅপ্রিয় বিষয় থেকে তাকে হেফাজত করা হবে)।
(সহীহ বুখারি, মুসলিম)
بسم الله الرحمن الرحيم
آمَنَ الرَّسُولُ بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْهِ مِنْ رَبِّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ كُلٌّ آمَنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِنْ رُسُلِهِ وَقَالُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ
لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا رَبَّنَا وَلَا تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِنَا رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهِ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا أَنْتَ مَوْلَانَا فَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
সুরা বাকারাহঃ ২৮৫-২৮৬।
==============================
৬- সূরা ইখলাস, ফালাক ও নাসের ফজিলত :
প্রতি ফরজ সালাতের পর সূরা ইখলাস ফালাক ও নাস এ তিনটি সূরা একবার করে পাঠ করতে হবে । ফজর আর মাগরিবের ফরজ সালাতের পর এ তিনটি সূরা তিনবার করে মোট নয়বার পাঠ করা সুন্নত আর বাকী ফরজ সালাতের পর একবার করে পড়তে হবে ।(আবু দাউদ হা:১৩৬৩)
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি রাতে যখন ঘুমাতে যেতেন, তখন নিজের উভয় হাত এক সঙ্গে মিলাতেন। তারপর উভয় হাতে ফুঁক দিতেন এবং সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক, সূরা নাস পড়তেন। তারপর দেহের যতটুকু অংশ সম্ভব হাত বুলিয়ে নিতেন। তিনি মাথা, মুখমণ্ডল ও শরীরের সামনের অংশ থেকে শুরু করতেন। তিনি এরূপ তিনবার করতেন। -সহি বুখারি ৫০১৭, সুনানে আবু দাউদ : ৫০৫৮, জামে তিরমিজি, হাদিস নং-৩৪০২
===========================
১- সুরা ইখলাসের ফজিলতঃ
#রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুরা ইখলাস সম্পর্কে বলেছেনঃ
“নিঃসন্দেহে এটি কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমান”।
মুসলিম ৮১২, তিরমিযী ২৮৯৯, ইবনু মাজাহ ৩৭৮৭, আহমাদ ৯২৫১।
#রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবীগণকে বললেন, “তোমরা কি এক রাতে এক তৃতীয়াংশ কুরআন পড়তে পারনা”? প্রস্তাবটি সাহাবাদের জন্য কঠিন মনে হল। তাই তাঁরা বলে উঠলেন, “হে আল্লাহর রসুল! এই কাজ আমাদের মধ্যে কে করতে পারবে”? (অর্থাৎ কেউ পারবে না।)
তিনি বললেন, “ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদ, আল্লাহুস স্বামাদ” (সুরা ইখলাস) কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমান”। (অর্থাৎ এই সুরা পড়লে এক তৃতীয়াংশ কুরআন পড়ার সমান নেকী পাওয়া যাবে)।
সহীহুল বুখারী ৫০১৫, নাসায়ী ৯৯৫, আবু দাউদ ১৪৬১, আহমাদ ১০৬৬৯।
#এক সাহাবী এসে বলল, “হে আল্লাহর রসূল! আমি এই (সূরা) ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদকে ভালবাসি”। তিনি বললেন, “এর ভালবাসা তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে”।
বুখারীর ৭৭৪নং হাদীসের পরবর্তী অধ্যায়, তিরমিযী ২৯০১, আহমাদ ১২০২৪
#রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
“যে ব্যক্তি সুরা ইখলাস ১০ বার পাঠ করবে, তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর বানানো হবে”।
সহীহ আল-জামি আস-সগীর ৬৪৭২।
#রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক ব্যক্তিকে সুরা ইখলাস তেলাওয়াত করতে শুনলেন। তিনি বললেন “এটা তার অধিকার”। সাহাবারা জিজ্ঞাস করলেন, তার অধিকার কি? তিনি উত্তর দিলেন, “তার অধিকার হচ্ছে জান্নাত”।
মুসনাদে আহমাদঃ ৭৬৬৯।
***দিনে রাতে যতবার ইচ্ছা, বেশি বেশি করে সুরা ইখলাস পড়া যাবে।
===================================
২- *সুরা মুলকের ফজিলত*
🍃
➖আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
“নিশ্চয় পবিত্র কুরআনে একটি সূরা, যাতে আছে তিরিশটি আয়াত। উহা পাঠকারীর জন্য সুপারিশ করবে, যে পর্যন্ত তাকে ক্ষমা না করা হয়। সূরাটি হচ্ছে “তাবারাকাল্লাযী বি ইয়াদিহিল মুল্কু..”।
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন আবু দাউদ, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, ইবনে হিব্বান এবং হাকেম। হাদীছের বাক্য তিরমিযীর, তিনি হাদীছটিকে হাসান বলেছেন। আর হাকেম বলেছেন, এর সনদ সহীহ)
➖আবদুল্লাহ্ বিন মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
“কবরস্থিত ব্যক্তির নিকট পায়ের দিকে দিয়ে ফেরেশতারা শাস্তির জন্য আসতে চাইবে। তখন তার পদদ্বয় বলবে, আমার দিক দিয়ে আসার রাস্তা নেই। কেননা সে সূরা ‘মুলক’ পাঠ করত। তখন তার সীনা অথবা পেটের দিক দিয়ে আসতে চাইবে। তখন সীনা অথবা পেট বলবে, আমার দিকে দিয়ে আসার কোন রাস্তা তোমাদের জন্য নেই। কেননা সে আমার মধ্যে সূরা ‘মুলক’ ভালভাবে ধারণ করে রেখেছিল। অতঃপর তার মাথার দিক দিয়ে আসার চেষ্টা করবে। মাথা বলবে এ দিক দিয়ে আসার রাস্তা নেই। কেননা সে আমার দ্বারা সূরা ‘মুলক’ পাঠ করেছিল। সূরা মুলক হচ্ছে বাধাদানকারী। কবরের আযাব থেকে বাধা দিবে। তাওরাতেও সূরা ‘মুলক’ ছিল। যে ব্যক্তি উহা রাত্রে পাঠ করে, সে অধিক ও পবিত্র-উৎকৃষ্ট আমল করবে।”
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন হাকেম, তিনি বলেন, এর সনদ সহীহ।)
➖নাসাঈতে হাদীছটি সংক্ষিপ্তভাবে এসেছেঃ
“যে ব্যক্তি প্রতি রাতে তাবারাকাল্লাযী বি ইয়াদিহিল মুলকু.. পাঠ করবে, আল্লাহ্ তাকে কবরের আযাব থেকে রক্ষা করবেন।”
ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ্(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর যুগে সূরাটিকে মানেআ’ বা বাধাদানকারী সূরা বলে আখ্যা দিতাম। উহা আল্লাহ তা’আলার কিতাব কুরআনের মাঝে একটি গুরুত্বপূর্ণ সূরা, যে ব্যক্তি প্রতি রাতে উহা পাঠ করবে সে অধিক ও উৎকৃষ্ট আমল করবে।
শায়খ আলবানী বলেন, হাদীছটি হাসান। দ্র: সহীহ তারগীব ও তারহীব, হা/ ১৪৭৫ ও ১৪৭৬।
*সন্ধ্যার পর ঘুমানোর পূর্বে যে কোন সময় সূরাটি পড়তে পারেন। কোন অসুবিধা নেই।*
~শাইখ আব্দুল্লাহ আল কাফী।
==================================
৩- আয়াতুল কুরসির ফজিলত
কুরআন মাজিদের সর্বশ্রেষ্ঠ আয়াত- আয়াতুল কুরসি, যার ফজিলত এতো বেশি যে, রাসুল সাঃ বলেছেন, প্রত্যেক ফরজ নামাযের পর এই আয়াত পাঠ করলে মৃত্যু ছাড়া জান্নাত যাওয়ার পথে পাঠকারীর জন্য আর কোন বাধা থাকে না। (সহীহ জামে’ ৫/৩৩৯, সি: সহীহাহ্ ৯৭২)
================================
৪- সূরা কাহাফ এর ফযিলত----
'
১। হযরত বারা (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাতে সূরা কাহাফ তেলাওয়াত
করছিলেন। তার কাছে দুটি রশি দিয়ে একটি ঘোড়া বাঁধা ছিল। এরই মধ্যে
একটি মেঘখণ্ড এসে তাকে ঢেকে ফেলল। এরপর যখন মেঘখণ্ডটি তার কাছে চলে আসছিল, তখন তার ঘোড়া ছোটাছুটি করতে লাগল। অতঃপর
সকালে ওই ব্যক্তি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে
রাতের ঘটনা বললেন। তিনি বললেন, ওটা ছিল সাকিনা (রহমত), যা কোরআন তেলাওয়াতের বরকতে নাজিল হয়েছিল। (সহিহ বুখারি ৫০১১, ৩৬১৪; সহিহ মুসলিম ৭৯৫)
২। আবু সাইদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যে ব্যক্তি জুমু‘আর দিন সূরা কাহাফ তিলাওয়াত করবে, আল্লাহ তা‘আলা এ জুমু‘আ থেকে পরবর্তী জুমু‘আ পর্যন্ত তার
জন্য নূরের আলো দ্বারা আলোকিত করে রাখবেন”। বাইহাকী, হাদিস: ৬০৬,
৩। হযরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত আছে, যে সূরা কাহাফের প্রথম ১০ আয়াত মুখস্ত করে সে দাজ্জালের ফিৎনা হতে নিরাপদ
থাকবে। তাঁর থেকে আরেকটি রেওয়ায়েতে শেষ ১০ আয়াতের ব্যাপারে উল্লিখিত ফজিলতের বর্ণনা রয়েছে। (মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজি, নাসাঈ ও মুসনাদে আহমদ)
সুতরাং প্রথম বা শেষ ১০ আয়াত অথবা উভয় দিক দিয়ে মোট ২০ আয়াত যে মুখস` করবে সেও উল্লিখিত ফজিলতের অন্তর্ভুক্ত হবে।
==================================
৫- সুরা বাকারার শেষ ২ আয়াতের ফজিলত-
***রাতের বেলা সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত তেলাওয়াত করলে তাহাজ্জুদের সমান সওয়াব পাওয়ার আশা করা যেতে পারেঃ
রাসুলুলাহ (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি রাতের বেলা সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পড়বে সেটা তার জন্য যথেষ্ঠ হবে”।
বুখারি ৫০১০, মুসলিম ৮০৭।
বিখ্যাত হাদীস গ্রন্থ “রিয়াদুস সালেহীন” এর লেখক ও সহীহ মুসলিমের ভাষ্যকার, ইমাম আন-নববী (রহঃ) বলেন,“এর অর্থ কেউ বলেছেনঃ কিয়ামুল লাইল বা তাহাজ্জুদ নামাযের জন্য যথেষ্ঠ হবে। কেউ বলেছেনঃ শয়তানের ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য যথেষ্ঠ হবে। কেউ বলেছেনঃ বালা-মুসিবত থেকে নিরাপত্তা পাওয়া যাবে। তবে সবগুলো অর্থ সঠিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। [শারহুন নববী আ’লা সহিহ মুসলিমঃ ৬/৩৪০, হাদীস ৮০৭।]
আবু মাসউদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন,“যে ব্যক্তি সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত রাতে পাঠ করবে,তার জন্য এ দুটি আয়াত যথেষ্ট হবে। (অর্থাৎ সারারাত সে জিন ও মানুষের অনিষ্ট থেকে নিরাপদ থাকবে এবং প্রতিটিঅপ্রিয় বিষয় থেকে তাকে হেফাজত করা হবে)।
(সহীহ বুখারি, মুসলিম)
بسم الله الرحمن الرحيم
آمَنَ الرَّسُولُ بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْهِ مِنْ رَبِّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ كُلٌّ آمَنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِنْ رُسُلِهِ وَقَالُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ
لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا رَبَّنَا وَلَا تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِنَا رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهِ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا أَنْتَ مَوْلَانَا فَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
সুরা বাকারাহঃ ২৮৫-২৮৬।
==============================
৬- সূরা ইখলাস, ফালাক ও নাসের ফজিলত :
প্রতি ফরজ সালাতের পর সূরা ইখলাস ফালাক ও নাস এ তিনটি সূরা একবার করে পাঠ করতে হবে । ফজর আর মাগরিবের ফরজ সালাতের পর এ তিনটি সূরা তিনবার করে মোট নয়বার পাঠ করা সুন্নত আর বাকী ফরজ সালাতের পর একবার করে পড়তে হবে ।(আবু দাউদ হা:১৩৬৩)
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি রাতে যখন ঘুমাতে যেতেন, তখন নিজের উভয় হাত এক সঙ্গে মিলাতেন। তারপর উভয় হাতে ফুঁক দিতেন এবং সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক, সূরা নাস পড়তেন। তারপর দেহের যতটুকু অংশ সম্ভব হাত বুলিয়ে নিতেন। তিনি মাথা, মুখমণ্ডল ও শরীরের সামনের অংশ থেকে শুরু করতেন। তিনি এরূপ তিনবার করতেন। -সহি বুখারি ৫০১৭, সুনানে আবু দাউদ : ৫০৫৮, জামে তিরমিজি, হাদিস নং-৩৪০২
0 মন্তব্যসমূহ