আজকের সবক (২৪ শে সফর)
-------------------------------------------------------------------------
রিয়ার কুফল ও উত্তরণের পথ
++++++++++++++++++++++++++++++++++++
গত সবকে আলোচনা হয়েছে যে, রিয়া এমনি একটি মানসিক প্রবৃত্তি যা নেক আমলকে সমূলে ধ্বংস করে দেয়। রিয়াকে নবী সা. বলেছেন, গোপন শিরক। এজন্য কেয়ামতের ময়দানে শুধু রিয়াযুক্ত হওয়ার কারণে অনেক মানুষের আমল বরবাদ হয়ে যাবে। একটি হাদিসে উল্লিখিত আছে যে, এমন কিছু ব্যক্তির আমল কেয়ামতের ময়দানে আল্লাহর সামনে উপস্থাপিত হবে যাদের ব্যাপারে তিনি বলবেন, এর এই সব আমল ফেলে দাও। ফেরেশতাগণ জিজ্ঞেস করবেন, আল্লাহ! আমরা তো এই সমস্ত আমলনামার মধ্যে ভালো ব্যতীত অন্য কিছু দেখি নাই। আল্লাহ তাআলা বলবেন, তারা এই সমস্ত আমল আমার জন্য করেনি, আর আমি আজকের দিনে শুধু সেই আমলই কবুল করব যা একমাত্র আমারর সন্তুষ্টির জন্য করা হয়েছিল। অপর একটি হাদিসে রাসূলে কারিম সা. এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি দুনিয়াতে নাম যশের পোশাক পরিধান করবে, আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের দিন তাকে অপমানের পোশাক পরিধান করিয়ে আগুন ধরিয়ে দিবেন।- ইবনে মাজাহ (অর্থাৎ জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন)
সুতরাং বোঝা যাচ্ছে রিয়া অতি মারাত্মক একটি পাপ। এই পাপ দেখা যায় না তবুও এর ধ্বংসাত্মক পরিণতি অত্যন্ত শোচনীয়। এখন প্রশ্ন হলো রিয়ার ব্যাধি থেকে বাঁচার পথ কী? রিয়ার ব্যাধি থেকে বাঁচার জন্য বিশেষ ভাবে তিনতি কাজ করতে হবে। একটি হলো এবাদতে ইহসান পয়দা করতে হবে। রাসূল সা. বলেছেন, ইহসান হলো তুমি এমন অনুভূতি নিয়ে এবাদত কর যেন তুমি আল্লাহকে দেখছ, নয়তো অন্তত এতটুকু কল্পনা করো যে, আল্লাহ তোমাকে দেখছেন। একটি সহজ বিষয় আমরা বুঝতে পারি, যদি কোন চাকুরিজীবী দেখে যে, তার মালিক তাকে কাজ করার সময় দেখতে থাকে তাহলে তার পক্ষে কি কোন ধরনের ত্রুটি ও গড়িমসি করা সম্ভব? মোটেই নয়। ঠিক তেমনি আমি-আপনি যখন মনে করব আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে এবাদত করছি তখন অন্য কোন চিন্তাই আমার আপনার মাঝে আসা সম্ভব নয়। দ্বিতীয় করণীয় হলো ইহসানের দরজা হাসিল করতে হলে আমাদেরকে আহলুল্লাহ তথা আল্লাহওয়ালা বুযুর্গদের সোহবতে যেতে হবে। আল্লাহওয়ালাদের সংস্পর্শে গেলে ধীরে ধীরে হৃদয়ের কালি ও কালিমা মুছে যায়। ফলে একসময় ইহসানের গুণ হাসিল হয়। রিয়া থেকে বাঁচতে তৃতীয় যে কাজটি করতে হবে তা হলো দোয়া। নিজে দোয়া করা, অপরের নিকটও দোয়া চাওয়া। দোয়ার ফলে আল্লাহ তাআলা দিলে ইখলাছ দান করেন। রিয়া থেকে হেফাজত করেন। এজন্য রাসূল সা. উম্মতকে দোয়া শিক্ষা দিয়েছেন, اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ أَنْ أُشْرِكَ بِكَ وَأَنَا أَعْلَمُ، وَأَسْتَغْفِرُكَ لِمَا لاَ أَعْلَمُ অর্থ হলো- হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি জানা অবস্থায় আপনার সাথে শিরক করা থেকে। আর যে বিষয়ে আমার জানা নেই তাতে শিরক হয়ে গেলে আপনার সমীপে ক্ষমার দরখাস্ত করছি।
আল্লাহ আমাদেরকে আমল করার তাওফিক দান করুন
0 মন্তব্যসমূহ