ফতোয়া: কুরবানী

ফতোয়া নং: ৬৩৭৬
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমরা সাত ভাই। প্রতি বছর আমরা সবাই মিলে একটি গরু...

প্রশ্ন
আমরা সাত ভাই। প্রতি বছর আমরা সবাই মিলে একটি গরু কুরবানী করে থাকি। গত বছর আমরা প্রত্যেকে সমানভাবে টাকা দিয়ে দুইটি গরু খরিদ করেছি। উভয়টি সবার পক্ষ থেকে কুরবানী করে উভয়টির গোশত একত্র করে সবাই সমানভাবে ভাগ করে নিয়েছি। আমাদের এই কুরবানী কি সহীহ হয়েছে?
উত্তর
হ্যাঁ, আপনাদের সকলের কুরবানী সহীহ হয়েছে।
-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৮; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪৫৬; রদ্দুল মুহতার ৬/৩১৬
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৩৪২
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানী কার উপর ওয়াজিব হয়? জানালে কৃতজ্ঞ হব।

প্রশ্ন
কুরবানী কার উপর ওয়াজিব হয়? জানালে কৃতজ্ঞ হব।
উত্তর
প্রাপ্তবয়ষ্ক, সুস্থমস্তিষ্কসম্পন্ন প্রত্যেক মুসলমান নর-নারী মুকীম ব্যক্তি, যে ১০ যিলহজ্ব সুবহে সাদিক থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজন অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব হবে। নেসাব হল : স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি। আর রুপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি। আর অন্যান্য বস্ত্তর ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার সমমূল্যের সম্পদ। স্বর্ণ বা রুপার কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ না হয় তবে স্বর্ণ-রুপা উভয়টি মিলে কিংবা এর সাথে প্রয়োজন-অতিরিক্ত অন্য বস্ত্তর মূল্য মিলে সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার সমমূল্যের হয়ে গেলে সেক্ষেত্রেও কুরবানী ওয়াজিব হবে। স্বর্ণ-রুপার অলঙ্কার, নগদ অর্থ, যে জমি বাৎসরিক খোরাকীর জন্য প্রয়োজন হয় না এবং প্রয়োজন অতিরিক্ত আসবাবপত্র-এ সবই কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।
-বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৬
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৩৪১
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমার কাছে একটি জমি আছে। ঐ জমির উপার্জন দ্বারা আমার...

প্রশ্ন
আমার কাছে একটি জমি আছে। ঐ জমির উপার্জন দ্বারা আমার এবং আমার পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করে থাকি। জানার বিষয় হল, ঐ জমির কারণে কি আমার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে?
উত্তর
না, উক্ত জমির কারণে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে না। কেননা তা আপনার প্রয়োজনের অতিরিক্ত নয়; বরং এর আয়ের উপর আপনার পরিবারের খরচ নির্ভরশীল। তাই কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে তা ধর্তব্য হবে না।
-রদ্দুল মুহতার ৬/৩১২; আলবিনায়াহ ১৪/৩৫০; ফাতাওয়া খানিয়া ৬/২৮৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৫৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪০৬; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৪; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৪০৯
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৩৩৬
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

এক ব্যক্তি উমরা করতে যায়। কিন্তু সে উমরার তাওয়াফ সাঈ...

প্রশ্ন
এক ব্যক্তি উমরা করতে যায়। কিন্তু সে উমরার তাওয়াফ সাঈ করার পর মাথা হলক না করে জিদ্দায় চলে আসে এবং জিদ্দাতেই মাথা হলক করে নেয়। এখন তার কী করণীয়? এ কারণে তাকে কোনো জরিমানা দিতে হবে কি?
উত্তর
হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে হেরেমের এলাকায় হলক না করে জিদ্দায় হলক করার কারণে জরিমানা স্বরূপ তাকে একটি দম দিতে হবে। অর্থাৎ কুরবানীর উপযুক্ত একটি ছাগল/দুম্বা হেরেমের ভিতরে যবাই করতে হবে। অবশ্য এক্ষেত্রে ঐ লোক যদি হেরেমে ফিরে এসে মাথা হলক করত তাহলে তার উপর দম ওয়াজিব হত না।
-গুনয়াতুন নাসিক পৃষ্ঠা : ১৭৫
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৩১৬
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমি প্রতি বছর একা একটা গরু কুরবানী করি। গত বছরও...

প্রশ্ন
আমি প্রতি বছর একা একটা গরু কুরবানী করি। গত বছরও একা কুরবানী করার নিয়তে গরু কেনার জন্য হাটে যাই। কিন্তু অস্বাভাবিক চড়ামূল্যের কারণে একা ক্রয় করা সম্ভব হয়নি। তাই গরু ক্রয়ের সময় শরিক নেওয়ার নিয়ত করে নেই এবং পরে আরেকজনকে শরিকে নিয়ে কুরবানী করি। প্রশ্ন হল, ঐভাবে কুরবানী করার দ্বারা কি আমার কুরবানী আদায় হয়েছে?
উত্তর
হ্যাঁ, আপনার কুরবানী সহীহ হয়েছে।
-কিতাবুল আছল ৫/৪০৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১০; হেদায়া ৪/৪২৯; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৭
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৩০৮
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের একটা গরু আছে। কোনো এক রোগের কারণে যার লেজের...

প্রশ্ন
আমাদের একটা গরু আছে। কোনো এক রোগের কারণে যার লেজের সামান্য অংশ লম্বা পশমসহ ঝরে পড়েছে। আগামী ঈদুল আযহায় গরুটি কুরবানী দিতে চাচ্ছি। শরীয়তের দৃষ্টিতে তা বৈধ হবে কি?
উত্তর
হ্যাঁ, ঐ গরু দ্বারা কুরবানী করা জায়েয হবে। কেননা কোনো গরুর লেজ যদি অর্ধেকের বেশি অবশিষ্ট থাকে তবে তা দ্বারা কুরবানী করা জায়েয।
-মুখতাছারুত তহাবী ৭/৩৫৫; হেদায়া ৮/৪৩৩; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫৩; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৪; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৮; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৩
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২৬৭
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের এলাকায় কিছু লোক আছে, যারা সামর্থ্য না থাকার কারণে...

প্রশ্ন
আমাদের এলাকায় কিছু লোক আছে, যারা সামর্থ্য না থাকার কারণে কুরবানী দিতে পারে না। তাদের মধ্যে কিছু লোক এমন আছে, যারা কুরবানীর দিন মুরগী বা হাঁস যবাই করে থাকে। আমি জানতে চাই, কুরবানীর দিন হাঁস-মুরগী ইত্যাদি যবাই করা জায়েয আছে কি?
উত্তর
কুরবানীর দিনেও কুরবানীর নিয়ত না করে কেবল খাওয়ার উদ্দেশ্যে হাঁস, মুরগী ইত্যাদি যবাই করা জায়েয। এতে দোষের কিছু নেই।
তবে কুরবানীর নিয়তে কিংবা কুরবানীর সাদৃশ্য অবলম্বনের উদ্দেশ্যে হাঁস, মুরগী যবাই করা যাবে না।
-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০০; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৩/২৯০; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৩; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাদ্দুর ৪/১৬০
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২৬০
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমার বন্ধু ইফতেখার ও ইহতেশাম প্রতি বছর কুরবানীর ঈদে পঞ্চাশ...

প্রশ্ন
আমার বন্ধু ইফতেখার ও ইহতেশাম প্রতি বছর কুরবানীর ঈদে পঞ্চাশ হাজার করে এক লক্ষ টাকা দিয়ে চামড়া ব্যবসা করে। এবার তারা আমাকে পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়ে তাদের ব্যবসায় শরিক হতে বলে। কিন্তু আমার কাছে এত টাকা না থাকায় আমি বিশ হাজার টাকা ও চামড়া বেচাকেনার কাজে শ্রম দিতে সম্মত হই। এরপর আমাদের মাঝে এভাবে চুক্তি হয় যে, ইফতেখার পঞ্চাশ হাজার টাকা ও শ্রম দিবে। আর বিনিময়ে সে লভ্যাংশের ৪০% পাবে। ইহতেশাম শ্রমহীন পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়ে লভ্যাংশের ৩০% পাবে। আর আমি বিশ হাজার টাকা ও শ্রম দিয়ে পাব লভ্যাংশের ৩০%। আর ব্যবসায় লোকসান হলে সবাই নিজ নিজ লভ্যাংশ হারে দায়ভার বহন করবে। জানার বিষয় হল, আমাদের উক্ত চুক্তিটি কি শরীয়তসম্মত হয়েছে? জানিয়ে বাধিত করবেন।
উত্তর
প্রশ্নোক্ত কারবারে লভ্যাংশ বণ্টনের চুক্তিটি সহীহ হয়েছে। কেননা শরিকানা কারবারে যে অংশিদার শ্রম দিবে তার লভ্যাংশ মূলধনের আনুপাতিক হারের চেয়ে বেশি নির্ধারণ করা জায়েয আছে। তবে প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে লোকসানের দায়ভার বহনের চুক্তিটি শরীয়তসম্মত হয়নি। কেননা লোকসানের ক্ষেত্রে নিয়ম হল, প্রত্যেক অংশিদার তার মূলধন অনুপাতে লোকসানের দায়ভার বহন করবে। লভ্যাংশের হার অনুপাতে নয়। তাই আপনাদের ঐ চুক্তিতে লোকসানের দায়ভার লভ্যাংশের হার অনুযায়ী হবে না; বরং মূলধন অনুপাতেই লোকসান বহন করতে হবে। অতএব আপনাদের ঐ চুক্তিটি এ নিয়মে সংশোধন করে নিতে হবে।
-মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়্যা ২৬৩; আলবাহরুর রায়েক ৫/১৭৪; আদ্দুররুল মুখতার ৪/৩১১-৩১২
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২৫৮
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

এক লোক গরু যবাই করার জন্য আমাকে তার বাসার কাছে...

প্রশ্ন
এক লোক গরু যবাই করার জন্য আমাকে তার বাসার কাছে নিয়ে যায়। কসাইরা গরুটাকে উত্তর দিকে মাথা ও পূর্ব দিকে পা দিয়ে শুইয়ে দেয় এবং আমিও অজ্ঞতাবশত ঐভাবে যবাই করে দেই। যবাইয়ের সময় কুরবানীদাতা উপস্থিত ছিলেন না। পরে সে জানতে পেরে আমাকে খুব বকাঝকা করে এবং বলতে থাকে, তুমি আমার কুরবানী নষ্ট করেছ। এখন তুমি জরিমানা দিবা ইত্যাদি। এখন আমার প্রশ্ন হল, উক্ত কুরবানী কি সহীহ হয়েছে? জানিয়ে বাধিত করবেন।
উত্তর
হ্যাঁ, ঐ কুরবানী সহীহ হয়ে গেছে। পশু যবাইয়ের সময় পশুর মাথা দক্ষিণ দিকে এবং সীনা কিবলামুখী করে যবাই করা উত্তম।
হাদীস শরীফে আছে, জাবির রা. বলেন, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর দিন হৃষ্টপুষ্ট শিং বিশিষ্ট দুটি ভেড়া যবাই করেছেন। তিনি ভেড়া দুটির সীনা কিবলামুখী করে শুইয়ে দিলেন এবং বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলে যবাই করলেন।-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২৭৮৮; বাযলুল মাজহূদ ১৩/১৬
সহীহ মুসলিমের ভাষ্যগ্রন্থ ‘‘আলমিনহাজে’’ ইমাম নববী রাহ. বলেন, এ ব্যাপারে আলেমগণ একমত এবং মুসলমানদের আমলও এভাবে চলে আসছে যে, যবাইয়ের সময় পশুকে বাম পার্শ্বদেশের উপর শোয়াবে। কেননা এ পদ্ধতিতে যবাইকারীর জন্য ডান হাতে ছুরি নেওয়া এবং বাম হাত দিয়ে পশুর মাথা চেপে ধরে যবাই করা অধিকতর সহজ। (শরহে মুসলিম, নববী ১৩/১২২)
তাই ইচ্ছাকৃত এর ব্যতিক্রম করা উচিত নয়। ভুলবশত বা বেখেয়ালে হয়ে গেলে অসুবিধা নেই।
-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১১
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২৫৩
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমি একটি মসজিদের মুয়াযযিন। আমাদের এলাকার প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী যে...

প্রশ্ন
আমি একটি মসজিদের মুয়াযযিন। আমাদের এলাকার প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী যে কুরবানীর পশু যবাই করে দেয় তাকে এর বিনিময়ে কিছু হাদিয়াও দেওয়া হয়। জানতে চাই, কুরবানীর পশু যবাই করে বিনিময় নেওয়া জায়েয হবে কি?
উত্তর
হ্যাঁ, কুরবানীর পশু যবাই করে এর বিনিময় নেওয়া জায়েয আছে।
-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৪৫৪; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৩২; ইমদাদুল আহকাম ৪/২৬৪; কিফায়াতুল মুফতী ৮/২৪৩
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২৩৪
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের পার্শ্ববর্তী সমাজের কয়েকজন দ্বীনদার লোকের সাথে আমি শরিকে কুরবানী...

প্রশ্ন
আমাদের পার্শ্ববর্তী সমাজের কয়েকজন দ্বীনদার লোকের সাথে আমি শরিকে কুরবানী করে থাকি। আমাদের ঈদগাহে ঈদের নামায একটু বিলম্বে হয়। পাশের সমাজে সকাল সাতটার দিকেই হয়ে যায়। আমার শরিকরা তাদের সমাজে ঈদের জামাত হওয়ার পরপরই আমাদের কুরবানীর পশুটি যবাই করে ফেলে। তখনো আমাদের ঈদগাহে ঈদের নামায অনুষ্ঠিত হয়নি। জানার বিষয় হল, আমি ঈদের নামায পড়ার আগে তারা আমার কুরবানী করে ফেলার কারণে কোনো অসুবিধা হয়েছে কি? এক্ষেত্রে আমার কুরবানী কি আদায় হয়েছে?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার কুরবানী আদায় হয়ে গেছে। কেননা এক এলাকার কোনো এক স্থানে ঈদের নামায হয়ে গেলে ঐ এলাকাবাসী সকলের জন্য কুরবানী করা সহীহ হয়ে যায়। তাই যে ব্যক্তি পরবর্তী জামাতে নামায পড়বে তার জন্যও কুরবানী করা সহীহ।
-কিতাবুল আছল ৫/৪০৫; শরহু মুখতাছারিত তহাবী ৭/৩৩৭; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১১; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৫; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৬/৪৭৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯৫; ইমদাদুল ফাতাওয়া ৩/৫৯৭
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২৩৩
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

খালেদ এবং তার ছোট চার ভাই মোট পাঁচ জন মিলে...

প্রশ্ন
খালেদ এবং তার ছোট চার ভাই মোট পাঁচ জন মিলে প্রতিবছরই একটি গরু কুরবানী করে থাকে। খালেদ বলছে, কুরবানীর পশুর অর্ধেক মূল্য সে একাই দেয়। আর বাকি অর্ধেক মূল্য বাকি চারজন মিলে পরিশোধ করে। যার ফলে বাকি চারজনকে পূর্ণ এক সপ্তমাংশের কম মূল্য আদায় করতে হয়। খালেদ টাকা বেশি দিলেও গোশত বেশি দাবি করে না। সকলের মাঝে সমান বণ্টনই হয়। বরং এক ভাইয়ের পরিবারের সদস্য বেশি বিধায় তাকে সবচেয়ে বেশি গোশত দেওয়া হয়। এখন জানতে চাই এভাবে কুরবানী করা কি সহীহ হবে?
উত্তর
প্রশ্নের বর্ণনা দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, যিনি টাকা বেশি দেন তিনি অন্য ভাইদের অংশের অবশিষ্ট টাকা নিজ থেকে পরিশোধ করে দেন তাই এমনটি হলে তাদের সকলের কুরবানী আদায় হয়ে যাবে।
তবে এক্ষেত্রে যদি প্রত্যেকের টাকা অনুযায়ী অংশ বণ্টন করা এবং সে অনুপাতে গোশত নেওয়া উদ্দেশ্য হয় তাহলে কারো কুরবানীই সহীহ হবে না। কারণ এক্ষেত্রে চারজনের প্রত্যেকের অংশ পশুর এক সপ্তমাংশের কম হয়ে যায়।
-আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৫; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৪; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৮
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২২০
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমার পিতা গত বছর ইন্তেকাল করেছেন। আমি তার নামে কুরবানী...

প্রশ্ন
আমার পিতা গত বছর ইন্তেকাল করেছেন। আমি তার নামে কুরবানী করার নিয়ত করেছি। প্রশ্ন হল, মৃত ব্যক্তির নামে দেওয়া কুরবানীর গোশত কী করতে হবে? তার অংশের পুরো গোশতই কি সদকা করতে হবে, নাকি নিজেরাও তা খেতে পারব? জানিয়ে বাধিত করবেন।
উত্তর
মৃত ব্যক্তি যদি কুরবানীর জন্য ওসিয়ত না করে থাকে তবে তার পক্ষ থেকে দেওয়া কুরবানীর গোশতের হুকুম সাধারণ কুরবানীর মতো; নিজেরাও খেতে পারবে অন্যদেরকেও দিতে পারবে। পুরোটা সদকা করা জরুরি নয়। তবে মৃত ব্যক্তি যদি অসিয়ত করে যায় এবং তার সম্পদ দ্বারাই কুরবানী করা হয়ে থাকে তাহলে এ কুরবানীর পুরো গোশত সদকা করা জরুরি। এ থেকে নিজেদের খাওয়া জায়েয হবে না।
-ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৯৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭৩; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫২; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩৩৫
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২১৯
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমরা গরুর ভুঁড়ি খাই না। তাই আমার বাবা প্রতি বছর...

প্রশ্ন
আমরা গরুর ভুঁড়ি খাই না। তাই আমার বাবা প্রতি বছর তা বিক্রি করে দেন। আম্মা কুরবানীর গরু ও খাসির চর্বি জমা করে ফেরিওয়ালার কাছে বিক্রি করেন। জানতে চাই, এই টাকা কি আমাদের ব্যবহার করা হালাল হবে?
উত্তর
নিজের কুরবানীর পশুর ভুঁড়ি, চর্বি, গোশত কিছুই বিক্রি করা জায়েয নেই। এতে কুরবানী ত্রুটিযুক্ত হয়ে যায়। বিগত দিনে নিজেদের কুরবানীর পশুর চর্বি, ভুড়ি বিক্রি করে যত টাকা পেয়েছেন তা গরীবদেরকে সদকা করে দিতে হবে। আর আল্লাহ তাআলার দরবারে ইস্তিগফার করতে হবে। ভুঁড়ি, চর্বি নিজেরা খেতে না পারলে সরাসরি গরীবদেরকে দান করে দিবে, বিক্রি করবে না।
-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০১; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৮
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২১৩
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমরা জানি, কিরান ও তামাত্তুকারী হাজ্বীর যদি দমে শোকর আদায়ের...

প্রশ্ন
আমরা জানি, কিরান ও তামাত্তুকারী হাজ্বীর যদি দমে শোকর আদায়ের সামর্থ্য না থাকে তবে তাকে দশটি রোযা রাখতে হবে। জানতে চাই, এই দশটি রোযা রাখার সময় কখন? আরাফার দিনে কি রোযা রাখা জরুরি? আরাফার দিন পর্যন্ত নাকি তিনটি শেষ করতে হয়। তাহলে এ কথার অর্থ কী? এ রোযা কখন থেকে শুরু করা যাবে? বিস্তারিত জানালে কৃতজ্ঞ হব।
উত্তর
তামাত্তু ও কিরানকারীর হজ্বের কুরবানী দেওয়ার সামর্থ্য না থাকলে এর পরিবর্তে তাকে দশটি রোযা রাখতে হবে। সেগুলোর তিনটি রাখতে হবে ৯ যিলহজ্বের (আরাফার) মধ্যেই। আর বাকিগুলো হজ্বের পরে রাখবে এবং তা দেশে ফেরার পরও হতে পারে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, (তরজমা) কারো যদি কুরবানী করার সামর্থ্য না থাকে তবে সে হজ্বের দিনে তিনটি রোযা রাখবে এবং সাতটি রোযা রাখবে সে সময় যখন তোমরা বাড়িতে প্রত্যাবর্তন করবে।-সূরা বাকারা : ১৯৬
উল্লেখ্য, উপরোক্ত তিনটি রোযা রাখার ক্ষেত্রে সামর্থ্যবান ও রোযা রেখে দুর্বল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা নেই এমন ব্যক্তির জন্য উত্তম হল হজ্বের ইহরাম বাঁধার পর থেকে আরাফার দিনের মধ্যেই রোযাগুলো শেষ করা। আর আরাফার দিন এ রোযা রাখা জরুরি নয়। এর আগে শেষ করলেও চলবে। অবশ্য কারও যদি রোযা রেখে হজ্বের আমল করতে কষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা হয় তাহলে সে এ সময় রোযা রাখবে না। বরং সে হজ্বের সফরে উমরার ইহরাম বাঁধার পর থেকে নিয়ে নয় তারিখ তথা আরাফার দিন পর্যন্ত সময়ের মধ্যে তিনটি রোযা রেখে নিবে। মোটকথা উমরার ইহরামের পর থেকে দশ তারিখের পূর্বেই ঐ তিনটি রোযা আদায় করে নিতে হবে। অন্যথায় তার জন্য দমে শোকর আদায় করা অপরিহার্য হয়ে যাবে।
-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ৮/৬৩৪; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৬১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩০৩; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩৮৬; আলমাবসূত, সারাখসী ৪/১৮১; ফাতহুল কাদীর ২/৪১৮; মানাসিক, মোল্লা আলী কারী ২৬৪
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২০২
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের এলাকায় প্রসিদ্ধ আছে যে, বাকিতে কুরবানীর পশু ক্রয় করলে...

প্রশ্ন
আমাদের এলাকায় প্রসিদ্ধ আছে যে, বাকিতে কুরবানীর পশু ক্রয় করলে কুরবানী সহীহ হয় না। কুরবানীর পশু নগদমূল্যে ক্রয় করতে হবে। বাকিতে ক্রয় করলেও কুরবানীর আগে তার মূল্য পরিশোধ করতে হবে। অন্যথায় কুরবানী সহীহ হবে না। এই কথাটি কতটুকু সঠিক? দয়া করে জানাবেন।
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ধারণা সম্পূর্ণ ভুল ও ভিত্তিহীন। বাকিতে পশু ক্রয় করলেও তা দ্বারা কুরবানী জায়েয। আর বাকিতে ক্রয় করলে কুরবানীর আগেই মূল্য পরিশোধ করতে হবে এ কথাও ঠিক নয়। নগদ বা বাকি যেভাবেই পশু ক্রয় করা হোক তা দ্বারা কুরবানী করা সহীহ হবে।
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২০১
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমি প্রতিবছরই কুরবানী করি। গত বছর কুরবানীর জন্য আঠারো হাজার...

প্রশ্ন
আমি প্রতিবছরই কুরবানী করি। গত বছর কুরবানীর জন্য আঠারো হাজার টাকা দিয়ে একটি গাভি ক্রয় করি। পরে দেখা গেল, গাভিটি অন্তসত্ত্বা। বাচ্চা হওয়ার সময় অতি নিকটবর্তী হয়ে গেছে। আমাদের কেউ কেউ গাভিটি কুরবানী করতে বাধা দিল। তখন বিশ হাজার টাকা দিয়ে আরেকটি গরু কিনে কুরবানী করি। প্রথম ক্রয়কৃত গাভিটি কুরবানী না করে নতুন গরু কিনে কুরবানী করাতে কোনো সমস্যা হয়েছে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন। এছাড়া ঐ গাভি ও তার বাচ্চার মালিক কি আমি, নাকি তা সদকা করতে হবে?
উত্তর
প্রথম ক্রয়কৃত গাভিটির বাচ্চা হওয়ার সময় যেহেতু নিকটবর্তী ছিল তাই তা কুরবানী না করে অন্য গরু দ্বারা কুরবানী করা ঠিকই হয়েছে। কেননা বাচ্চা হওয়ার সময় নিকটবর্তী এমন গাভি দ্বারা কুরবানী করা মাকরূহ। তাই আপনার ঐ সিদ্ধান্ত মাসআলা সম্মতই হয়েছে। এখন ঐ গাভি ও বাছুরের মালিক আপনি। তা সদকা করতে হবে না।
-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৮৭; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭১; রদ্দুল মুহতার ৬/৩০৪; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০০
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২০০
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর পশুর নাড়ি-ভুঁড়ি আমরা নিজেরা পরিষ্কার করতে পারি না বলে...

প্রশ্ন
কুরবানীর পশুর নাড়ি-ভুঁড়ি আমরা নিজেরা পরিষ্কার করতে পারি না বলে সাধারণত এলাকার কোনো মহিলাকে এ ভিত্তিতে পরিষ্কার করতে দেই যে, পারিশ্রমিক হিসাবে তাকে ৫০ টাকা এবং নাড়ি-ভুঁড়ির এক তৃতীয়াংশ দেওয়া হবে। জানার বিষয় হল, এ ধরনের চুক্তি করা কি বৈধ? জানালে কৃতজ্ঞ হব।
উত্তর
কুরবানীর পশুর কোনো অংশ বিনিময় বা পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া জায়েয নয়। আলী রা. বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর চামড়া ছাড়ানোর পারিশ্রমিক হিসেবেও চামড়ার কোনো অংশ প্রদান করতে নিষেধ করেছেন।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৭১৭
অতএব প্রশ্নোক্ত চুক্তি সহীহ নয়। নাড়ি-ভুঁড়ি পরিষ্কারের পারিশ্রমিক হিসেবে ভুড়ির অংশবিশেষও দেওয়া যাবে না। বিগত বছরগুলোতে এমন করে থাকলে যে পরিমাণ অংশ পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া হয়েছে তার ন্যায্যমূল্য সদকা করে দিতে হবে।
আর সামনে থেকে ভুঁড়ি পরিষ্কারের পারিশ্রমিক হিসেবে ভুড়ির অংশবিশেষ দেওয়ার শর্ত করবে না। বরং তার শ্রমের বিনিময়ে টাকা দিয়ে দিবে। চুক্তির সময় গোশত বা ভুড়ি দেওয়ার শর্ত না থাকলে ন্যায্য পারিশ্রমিক দেওয়ার পর কুরবানীর পশুর ভুড়ি বা গোশত হাদিয়া হিসেবে দেওয়া যাবে। এতে কোনো অসুবিধা নেই।
-সহীহ মুসলিম ৩/৩৫০; সহীহ বুখারী (ফাতহুল বারী) ৩/৬৫০; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৮; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫৪; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৮; আলমাবসূত, সারাখসী ১২/১৪; ইলাউস সুনান ১৭/২৬৩
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৯৪
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমার আববু কুরবানীর পশু ঈদের আগের দিন ক্রয় করেন। গত...

প্রশ্ন
আমার আববু কুরবানীর পশু ঈদের আগের দিন ক্রয় করেন। গত বছর ঈদের দুদিন আগে আমাদের বাসায় ডাকাতি হয়। তাই আববু গত বছর কুরবানী দিতে পারেননি। তবে তখন আববুর হাতে নগদ টাকা না থাকলেও বাড়িতে দেড় বিঘা জমি আছে, যা থেকে বাৎসরিক আয় আসে বিশ হাজার টাকা। ঐ বিশ হাজার টাকা না হলেও আমাদের সংসার ভালোভাবেই চলে যায়। গত বছর কি আববুর উপর কুরবানী করা ওয়াজিব ছিল? যদি হয়ে থাকে তাহলে এখন কী করবে?
উত্তর
প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ঐ দেড় বিঘা জমির আয় না হলেও যেহেতু আপনাদের সংসার চলে যায় তাই ঐ দেড় বিঘা জমি প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ। এ সম্পদের কারণে আপনার পিতার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। কিন্তু তিনি যেহেতু গত বছর কুরবানী করেননি তাই ঐ বছরের জন্য নূন্যতম এক বছর বয়সী একটি ছাগল বা তার মূল্য সদকা করে দিতে হবে।
-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০২; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩০৯; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১২; রদ্দুল মুহতার ৬/৩১২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪০৬
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৯৩
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

একজনকে বলতে শুনেছি, ছয় মাসের ছাগল যদি এমন হৃষ্টপুষ্ট হয়...

প্রশ্ন
একজনকে বলতে শুনেছি, ছয় মাসের ছাগল যদি এমন হৃষ্টপুষ্ট হয় যে, দেখতে এক বছর বয়সী ছাগলের মতো দেখায় তাহলে তা দ্বারা কুরবানী করা জায়েয। এই কথাটি কতটুকু সঠিক? দয়া করে জানাবেন।
উত্তর
আপনার শোনা কথাটি ঠিক নয়। ছাগল দ্বারা কুরবানী সহীহ হওয়ার জন্য তা অন্তত এক বছর বয়সী হওয়া জরুরি। হৃষ্টপুষ্ট হওয়ার কারণে এক বছরের ছাগলের মতো দেখালেও ১২ মাসের কম বয়সী ছাগল দ্বারা কুরবানী করা জায়েয হবে না। অবশ্য ছয় মাস বয়সী ভেড়া বা দুম্বা যদি হৃষ্টপুষ্ট হওয়ার কারণে এক বছর বয়সীর মতো দেখায় তাহলে তা দ্বারা কুরবানী করা জায়েয হবে। হাদীস শরীফে জাবের রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, উট পাঁচ বছর পূর্ণ হয়ে ষষ্ঠ বছরে উপনীত না হলে আর গরু-মহিষ দু বছর পূর্ণ হয়ে তৃতীয় বছরে পদার্পণ না করলে আর ছাগল-ভেড়ার এক বছর পূর্ণ না হলে তোমরা তা দ্বারা কুরবানী করো না। তবে এ বিষয়টি যদি তোমাদের জন্য কঠিন হয় তাহলে ছয়মাসের দুম্বা, ভেড়া কুরবানী করতে পারবে।
-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১৪৩৪৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১৯৬৩; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪২৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬৬; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৭; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২২
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৭৭
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

গত বছর আমাদের কুরবানীর পশুটি ট্রাক থেকে নামানোর সময় এক...

প্রশ্ন
গত বছর আমাদের কুরবানীর পশুটি ট্রাক থেকে নামানোর সময় এক পায়ে আঘাত পেয়ে তা ফুলে যায়। যার ফলে স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে একটু কষ্ট হয় এবং হাঁটাচলার সময় ঐ পাটি তুলনামূলক কম ব্যবহার করে। আমার প্রশ্ন হল, উক্ত পশু দ্বারা আমাদের কুরবানী সহীহ হয়েছে কি?
উত্তর
হ্যাঁ, উক্ত পশু দ্বারা কুরবানী করা সহীহ হয়েছে। কেননা পশুটির পা একেবারে ভেঙ্গে যায়নি; বরং আঘাতের কারণে হাঁটতে কষ্ট হত। আর এ ধরনের পশুর কুরবানী সহীহ।
-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২৮০২; জামে তিরমিযী, হাদীস : ১৪৯৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬৬; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৩; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪২৬; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৬; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৬
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৭৬
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের পরিবারে আম্মা ও আমরা তিন ভাই আছি। পিতার মৃত্যুর...

প্রশ্ন
আমাদের পরিবারে আম্মা ও আমরা তিন ভাই আছি। পিতার মৃত্যুর পর সম্পদ বণ্টন করা হয়নি। ছোট ভাইদের লেখাপড়ার খরচসহ সংসারের সকল আয়-ব্যয় অভিন্ন। এ অবস্থায় আমাদের সকলের পক্ষ থেকে কি একটি কুরবানী যথেষ্ট হবে, না প্রত্যেকের উপর কুরবানী করা ওয়াজিব?
উত্তর
আপনাদের পরিবার যৌথ হলেও এবং পিতার সম্পদ এখনো বণ্টন করা না হলেও কুরবানীর ক্ষেত্রে প্রত্যেকের প্রাপ্ত অংশ হিসাবযোগ্য। অতএব এ হিসাবে যে প্রাপ্ত বয়স্ক সদস্য প্রয়োজন অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপরই পৃথকভাবে কুরবানী করা ওয়াজিব হবে।
প্রাপ্ত বয়স্কদের কেউ নেসাব থেকে কম সম্পদের মালিক হলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে না। তদ্রূপ কেউ অপ্রাপ্ত বয়স্ক হলে তার উপরও কুরবানী ওয়াজিব নয়।
-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/২৪২; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৫; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৬/৪৭৫; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৪৪
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৭৫
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

প্রতি বছর আমরা ছয় ভাই মিলে একটি গরু কুরবানী করি।...

প্রশ্ন
প্রতি বছর আমরা ছয় ভাই মিলে একটি গরু কুরবানী করি। একটি গরুতে যেহেতু সাতজন শরিক হতে পারে তাই এবার আমরা পশুর ৭ম ভাগটি ইছালে সওয়াবের উদ্দেশ্যে মৃত পিতার পক্ষ থেকে কুরবানী দিতে চাচ্ছি। এভাবে মৃত পিতার পক্ষ থেকে তা কুরবানী করলে তা সহীহ হবে কি এবং ঐ অংশের গোশত কি আমরা খেতে পারব?
উত্তর
হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত অবস্থায় ৬ জন মিলে ৭ম অংশ পিতার পক্ষ থেকে কুরবানী করলে তা সহীহ হবে। তবে এটি উত্তম পদ্ধতি নয়। উত্তম হল, সবাই মিলে এক অংশের টাকা এক ভাইকে মালিক বানিয়ে দিবে। অতপর সে ভাই পিতার পক্ষ থেকে কুরবানী করবে। এতে কাজটি নিয়মসম্মত হবে এবং সকলে সওয়াবও পেয়ে যাবে। আর উভয় অবস্থায় মৃত পিতার জন্য দেওয়া অংশের গোশত নিজেরা খেতে পারবে এবং সদকাও করতে পারবে।
-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৩৮৫; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৯; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭৮; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৯৫
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৭৪
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের এলাকায় কুরবানীর সময় পশুর চামড়া ছিলা, গোশত কাটা ও...

প্রশ্ন
আমাদের এলাকায় কুরবানীর সময় পশুর চামড়া ছিলা, গোশত কাটা ও অন্যান্য কাজ এলাকার গরীব লোকেরা করে থাকে। বিনিময় হিসেবে তাদেরকে কিছু গোশত দেওয়া হয়। টাকা দিলে তারা টাকা নিতে চায় না। বরং কিছু গোশত পাওয়ার জন্যই তারা এ কাজ করে থাকে। প্রশ্ন হল, এভাবে তাদেরকে কাজের বিনিময়ে গোশত দেওয়া জায়েয হবে কি?
উল্লেখ্য, ঐ সময় পেশাদার কসাইও পাওয়া যায় না, যারা টাকার বিনিময়ে এ কাজ করবে।
উত্তর
কুরবানীর গোশত, চামড়া বা অন্য কিছু বিনিময় হিসেবে দেওয়া জায়েয নয়। কেননা হাদীস শরীফে এ ব্যাপারে নিষেধ করা হয়েছে। আলী রা. বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে আদেশ করেছেন কুরবানীর উটের কাছে থেকে তার গোশত ও চামড়া সদকা করতে এবং কসাইকে তা থেকে কিছু না দিতে। তিনি আরও বলেছেন, আমরা কসাইকে নিজেদের পক্ষ থেকে পারিশ্রমিক দিতাম। (সহীহ বুখারী ১/২৩২)
তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে তাদের কাজের বিনিময়ে টাকা বা অন্য কিছু দিতে হবে। কোনো অবস্থায় কুরবানীর গোশত বিনিময় হিসেবে দেওয়া যাবে না। তবে টাকা বা অন্য কিছু দ্বারা পরিপূর্ণ পারিশ্রমিক দিয়ে দেওয়ার পর হাদিয়া হিসেবে কুরবানীর গোশত দিতে পারবে এবং দেওয়া উচিত।
-সহীহ মুসলিম ১/৪২৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩২১; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪৪২
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৭৩
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

প্রতি বছর আমরা নির্দিষ্ট পাঁচ শরিক মিলে কুরবানী করি। এ...

প্রশ্ন
প্রতি বছর আমরা নির্দিষ্ট পাঁচ শরিক মিলে কুরবানী করি। এ বছরও কুরবানীর এক সপ্তাহ আগে ৫জন মিলে একটি গরু ক্রয় করি। কুরবানীর আগের দিন আমাদের এক প্রতিবেশী তাতে শরিক হতে চাইলে আমরা তাকে শরিক করে নেই। জানার বিষয় হল, এভাবে শরিক করাতে কুরবানী আদায় হয়েছে কি? জানালে উপকৃত হব।
উল্লেখ্য, কুরবানীদাতা প্রত্যেক শরিকই স্বচ্ছল ও নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক।
উত্তর
প্রশ্নোক্ত অবস্থায় সকলের কুরবানী সহীহ হয়েছে। তবে পশু ক্রয়ের পর নতুন করে শরিক নেওয়া অনুত্তম হয়েছে। এক্ষেত্রে নতুন শরিক থেকে প্রাপ্ত টাকা প্রত্যেক সদস্যের জন্য সদকা করে দেওয়া উত্তম হবে।
-আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৭; আলমাবসূত, সারাখসী ১২/১৫; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫০
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৭০
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমি এবার হজ্বে যাচ্ছি। তামাত্তু হজ্ব করার ইচ্ছা আছে। কিন্তু...

প্রশ্ন
আমি এবার হজ্বে যাচ্ছি। তামাত্তু হজ্ব করার ইচ্ছা আছে। কিন্তু দমে শোকর দেওয়ার সামর্থ্য আমার নেই। তাই দমের পরিবর্তে রোযা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রশ্ন হল, ক) দমের পরিবর্তে রোযা রাখলে কয়টি রোযা রাখতে হবে এবং কী নিয়মে রাখতে হবে? ঐ রোযার নিয়ত কখন করতে হবে? সুবহে সাদিকের পর ঐ রোযার নিয়ত করলে কি তা আদায় হবে?
উত্তর
কিরান ও তামাত্তুকারী দমে শোকর আদায়ের সামর্থ্য না রাখলে এর পরিবর্তে তাকে দশটি রোযা রাখতে হবে। তিনটি রোযা ইহরামের পর থেকে আরাফার দিন পর্যন্ত শেষ হতে হবে। বাকি সাতটি পরবর্তীতে সুযোগমতো রাখলেও চলবে। এই সাতটি রাখার নির্ধারিত মেয়াদ নেই। এগুলো দেশে এসেই আদায় করা উত্তম। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, (তরজমা) অতপর যখন তোমরা নিরাপদ হয়ে যাবে তখন যে ব্যক্তি হজ্বের সাথে উমরার সুবিধাও গ্রহণ করবে সে (আল্লাহর উদ্দেশ্যে পেশ করবে) যে কুরবানী সহজলভ্য হয় তা আদায় করবে। কারও যদি সে সামর্থ্য না থাকে তবে সে হজ্বের সময়ে তিনটি রোযা রাখবে এবং সাতটি (রোযা রাখবে) যখন বাড়িতে প্রত্যাবর্তন করবে। এভাবে মোট দশটি রোযা হবে। -সূরা বাকারা : ১৯৬
আর দমের পরিবর্তে রোযা রাখলে এর নিয়ত সুবহে সাদিকের পূর্বেই করতে হবে। সুবহে সাদিকের পর নিয়ত করলে ঐ রোযা দম আদায়ের জন্য যথেষ্ট হবে না।
-আলবাহরুর রায়েক ২/২৬২; আদ্দুররুল মুখতার ২/৩৭৭
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৬৮
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমি কুরবানীর ঈদের তিন মাস আগে কুরবানীর উদ্দেশ্যে একটি গাভী...

প্রশ্ন
আমি কুরবানীর ঈদের তিন মাস আগে কুরবানীর উদ্দেশ্যে একটি গাভী ক্রয় করেছি। কুরবানীর আগে সেই গাভীটার একটি বাচ্চা হয়েছে। জানার বিষয় হল, এ বাচ্চাটির ব্যাপারে শরীয়তের হুকুম কী?
উত্তর
উক্ত বাচ্চাকে সদকা করে দিতে হবে। অবশ্য জবাই না করে জীবিত সদকা করে দেওয়া উত্তম। আর যদি জবাই করে দেয় তবে তার গোশত সদকা করে দেওয়া ওয়াজিব হবে।
-আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪৪৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩২২
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১২৩
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

গত বছর কুরবানীর উদ্দেশ্যে আমি একাই গরু ক্রয় করি। ঈদের...

প্রশ্ন
গত বছর কুরবানীর উদ্দেশ্যে আমি একাই গরু ক্রয় করি। ঈদের নামায শেষে কয়েকজন মিলে যবেহ করার জন্য গরুটাকে শোয়াতে গেলে ধস্তাধস্তি করতে গিয়ে গরুটির একটি পা সম্পূর্ণ ভেঙ্গে যায়। তা সত্ত্বেও এক ভাইয়ের পরামর্শক্রমে আমরা সেটিকে যবেহ করি। এখন জানার বিষয় হল, এ অবস্থায় আমার পক্ষ থেকে কুরবানীর ওয়াজিব আদায় হয়েছে কি?
উত্তর
যবহের জন্য পশু শোয়ানোর সময় পশুর পা ভেঙ্গে গেলেও তা কুরবানী করা জায়েয। সুতরাং আপনার ঐ কুরবানী সহীহ হয়েছে।
-আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৫; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৬/৪৮৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯৯; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬৭
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬০০০
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমি একজন আমেরিকা প্রবাসী। দীর্ঘদিন যাবত সপরিবারে এখানে আছি। কুরবানী...

প্রশ্ন
আমি একজন আমেরিকা প্রবাসী। দীর্ঘদিন যাবত সপরিবারে এখানে আছি। কুরবানী দেশেই করে থাকি। এর একটা কারণ হল আমরা জানি যে, কুরবানীর গোশত তিন ভাগে ভাগ করতে হয়। এক ভাগ নিজের, এক ভাগ আত্মীয়স্বজনের আর এক ভাগ মিসকিনদের। আর মিসকিনদের অংশ কুরবানীদাতারা কেউ খেতে পারবে না। যদি খেতে হয় তাহলে ঐ পরিমাণ গোশতের মূল্য সদকা করে দিতে হবে।
উল্লেখ্য, আমাদের এখানে গরীবের অংশ গ্রহণ করার মতো কেউ নেই, তাই আমি এখানে কুরবানী না করে দেশে কুরবানী করে থাকি।
একজন আলেমের কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের কুরবানী তিন ভাগে ভাগ করতেন। আবার আরেক হাদীসে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা যা ইচ্ছা দান কর, যা ইচ্ছা নিজেরা খাও। আমার জানার বিষয় হল-
ক) তিন ভাগ করাটা কি বাধ্যতামূলক?
খ) যদি বাধ্যতামূলক হয় তাহলে মিসকিনদের অংশের হুকুম কী?
গ) যদি বাধ্যতামূলক না হয় তাহলে কুরবানীদাতা কি মিসকীনদের অংশ খেতে পারবেন?
ঘ) আর উপরে উল্লেখিত উভয় হাদীসই কি সহীহ? সহীহ হলে দুই হাদীসের মাঝে সমন্বয় হবে কীভাবে?
আমার মতো এখানের অনেকেরই একই প্রশ্ন। দলীলসহ জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।
উত্তর
কুরবানীর গোশত তিন ভাগ করে একভাগ নিজের জন্য রাখা, এক ভাগ আত্মীয়-স্বজনকে আর এক ভাগ ফকীর মিসকীনকে দেওয়া মুস্তাহাব। তবে এভাবে তিন ভাগে বণ্টন করা জরুরি নয়। কেউ পুরো গোশত নিজের জন্য রেখে দিলেও তার কুরবানী আদায় হয়ে যাবে। তাই আপনি চাইলে যেখানে আছেন সেখানেই কুরবানী করতে পারেন। সেখানে গোশত দেওয়ার মতো কাউকে পাওয়া না গেলেও কোনো অসুবিধা হবে না।
আর প্রশ্নে যে দুটি হাদীসের কথা উল্লেখ করা হয়েছে উভয় হাদীসই নির্ভরযোগ্য সূত্রে বর্ণিত আছে। প্রথম হাদীসটি হল : হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কুরবানীর গোশত বণ্টন সম্পর্কে বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর গোশত তিন ভাগ করে একভাগ নিজ পরিবারের জন্য রাখতেন, এক ভাগ গরীব প্রতিবেশীকে দিতেন আর এক ভাগ অন্যান্য গরীব-মিসকীনকে দান করতেন।-আল ওযায়েফ, আবু মুসা আলআসবাহানী, মুগনী ইবনে কুদামা ১৩/৩৭৯-৩৮০
দ্বিতীয় হাদীসটি হল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমরা কুরবানীর গোশত যে পরিমাণ ইচ্ছা খাও, অন্যদেরকে খাওয়াও এবং যতটুকু ইচ্ছা জমা করে রাখ।-সুনানে তিরমিযী, হাদীস : ১৫১০
দ্বিতীয় হাদীস দ্বারা বোঝানো হয়েছে যে, কুরবানীর গোশত বণ্টনের বিষয়টি কুরবানীদাতার ইচ্ছাধীন। অন্যকে না দিলেও গুনাহ হবে না। আর প্রথম হাদীসে কুরবানীর গোশত বণ্টনের উত্তম পদ্ধতি বর্ণনা করা হয়েছে। তাই উভয় হাদীসের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই।
-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১৯৭২; মুয়াত্তা, ইমাম মুহাম্মাদ পৃ. ২৮১-২৮২; হিদায়া ৪/৪৫০; উমদাতুল কারী ১০/৫৭-৫৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৪; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০০; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৭-৩২৮
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৯৭৬
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

এ বছর হজ্বের কাফেলায় এক ব্যক্তি হলক করে হালাল হওয়ার...

প্রশ্ন
এ বছর হজ্বের কাফেলায় এক ব্যক্তি হলক করে হালাল হওয়ার পর তাওয়াফে যিয়ারতের আগেই স্ত্রীর সাথে থেকেছে এবং স্ত্রীসূলভ আচরণ করেছে। এরপর তারা তাওয়াফে যিয়ারত ও তাওয়াফে বিদা করার পর দেশে চলে আসে। এখন তাদের উক্ত ভুলের কারণে জরিমানা দিতে হবে কি? এক ব্যক্তি বলেছে, তাদের উপর উট কুরবানী করা ওয়াজিব। এটা কি ঠিক?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ভুলের কারণে স্বামী-স্ত্রী প্রত্যেককে একটি করে জরিমানা-দম ছাগল বা দুম্বা মক্কার হেরেম এলাকায় জবাই করতে হবে। এক্ষেত্রে তাদের উপর উট কুরবানী করা ওয়াজিব প্রশ্নের এ মন্তব্য ঠিক নয়। কেননা মাসআলা হল, উকূফে আরাফার পর হালাল হওয়ার আগে স্ত্রী মিলন হয়ে গেলে প্রত্যেককে একটি করে উট বা গরু জরিমানা দিতে হয়। আর যদি হালাল হওয়ার পর তাওয়াফে যিয়ারতের আগে এই ভুল হয়ে যায় তবে একটি করে ছাগল বা দুম্বা জরিমানা দিতে হয়।
-মানাসিক, পৃ. ৩৩৯; ইলাউস সুনান ১০/৩৪০
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৯৬০
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের পরিবারে আম্মু এবং আমরা তিন ভাই আছি। পিতার মৃত্যুর...

প্রশ্ন
আমাদের পরিবারে আম্মু এবং আমরা তিন ভাই আছি। পিতার মৃত্যুর পর সম্পদ বণ্টন করা হয়নি। ছোট ভাইদের লেখাপড়ার খরচসহ সংসারের সকল আয়-ব্যয় অভিন্ন। এমন অবস্থায় আমাদের সকলের পক্ষ থেকে কি একটি ছাগল কুরবানী যথেষ্ট হবে নাকি প্রত্যেকের উপর কুরবানী করা ওয়াজিব?
উত্তর
একটি ছাগল দ্বারা এক ব্যক্তির পক্ষ থেকে কুরবানী করা যায়। একাধিক ব্যক্তি বা পরিবারের সকল সদস্যের পক্ষ থেকে একটি ছাগল কুরবানী দিলে তা যথেষ্ট হবে না। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যৌথ সম্পত্তি যদি এ পরিমাণ হয় যে, বণ্টন করলে প্রত্যেক সদস্য প্রয়োজন অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়ে যায় তাহলে প্রত্যেকের উপর কুরবানী করা ওয়াজিব হবে।
অবশ্য আপনাদের কেউ নেসাব থেকে কম সম্পদের মালিক হলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে না। তদ্রূপ কেউ অপ্রাপ্ত বয়স্ক হলে তার উপরও কুরবানী ওয়াজিব নয়।
-মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস : ৭৬৩৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৮১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/২৪২; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৬/৪৭৫
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৯৩৭
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর পশুর কান বা লেজ কী পরিমাণ না থাকলে বা...

প্রশ্ন
কুরবানীর পশুর কান বা লেজ কী পরিমাণ না থাকলে বা কাটা থাকলে এর দ্বারা কুরবানী সহীহ হয় না?
উত্তর
কুরবানীর পশুর কান বা লেজ অর্ধেক বা এরচেয়ে বেশি না থাকলে এর দ্বারা কুরবানী করা সহীহ নয়। যদি অর্ধেকের চেয়ে বেশি অংশ থাকে তাহলে এর দ্বারা কুরবানী করা সহীহ হবে।
-শরহু মাআনিল আছার ২/২৭১; কিতাবুল আসল ২/৪৯৪; শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ৭/৩৫৫; ইলাউস সুনান ১৭/২৪০
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৯৩৬
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

এক ব্যক্তি কুরবানীর পশু ক্রয়ের পর ১২ যিলহজ্বের মধ্যে তা...

প্রশ্ন
এক ব্যক্তি কুরবানীর পশু ক্রয়ের পর ১২ যিলহজ্বের মধ্যে তা কুরবানী করতে পারেনি। এখন তার কী করণীয়? আর কেউ যদি পশু ক্রয়ই না করে এবং কুরবানীর সময় শেষ হয়ে যায় তখন তার কী করণীয়?
উত্তর
কুরবানীর পশু ক্রয়ের পর ১২ যিলহজ্বের মধ্যে কুরবানী করতে না পারলে ঐ পশু জীবিত সদকা করে দিবে। আর কোনো ব্যক্তির উপর কুরবানী ওয়াজিব হওয়া সত্ত্বেও যদি সে কুরবানীর পশু ক্রয় না করে এবং কুরবানীও না করে থাকে তাহলে এভাবে কুরবানীর সময় শেষ হয়ে গেলে তার উপর কুরবানীর যোগ্য একটি ছাগলের মূল্য সদকা করে দেওয়া ওয়াজিব। আর উভয় ব্যক্তি যথাসময়ে কুরবানী না করার কারণে তাওবা-ইস্তিগফার করবে।
-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪২৩; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২১; তুহফাতুল ফুকাহা ৩/৮৩; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০২
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৯৩৫
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের গ্রামের এক ব্যক্তি কুরবানী করার জন্য ঈদের দুদিন আগে...

প্রশ্ন
আমাদের গ্রামের এক ব্যক্তি কুরবানী করার জন্য ঈদের দুদিন আগে হাট থেকে একটি গাভি ক্রয় করে আনে। ঘটনাক্রমে বাড়ির আরেকটা গাভির সাথে ঐ গাভির লড়াই লেগে ক্রয়কৃত গাভির একটি শিং ভেঙ্গে যায়। প্রশ্ন হচ্ছে, এমন শিং ভাঙ্গা গাভি দ্বারা কুরবানী করলে কুরবানী হবে কি না?
উত্তর
গাভিটির শিং যদি একেবারে গোড়া থেকে ভেঙ্গে যায়, যার দরুণ মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে যায় তাহলে এ পশু দ্বারা কুরবানী সহীহ হবে না। পক্ষান্তরে শিং ভাঙ্গার কারণে মস্তিষ্কে যদি আঘাত না পৌঁছে তাহলে সেই পশু দ্বারা কুরবানী জায়েয হবে।
উল্লেখ্য যে, কুরবানীদাতা যদি গরিব হয় অর্থাৎ কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার মতো নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক না হয় তাহলে এ ত্রুটিপূর্ণ গাভিটিই সে কুরবানী করতে পারে। তার জন্য ভিন্ন পশু কুরবানী করার প্রয়োজন নেই।
-মুসনাদে আহমদ ১/৯৫, হাদীস : ৭৩৪; জামে তিরমিযী ১/২৭৬, হাদীস : ১৫০৪; ইলাউস সুনান ১৭/২৩৭; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯৭
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৯৩৪
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমরা সহোদর তিনভাই মিলে প্রতি বছর একটি গরু কুরবানী করি।...

প্রশ্ন
আমরা সহোদর তিনভাই মিলে প্রতি বছর একটি গরু কুরবানী করি। বড় ভাই এক ভাগ আর আমরা দুই ভাই তিন অংশ করে মোট ছয় ভাগ নিয়েছি। আমরা দুই ভাই সমান সমান টাকা দিয়ে অংশগ্রহণ করি। কিন্তু বড়ভাই আমাদের মধ্যে তুলনামূলক অসচ্ছল হওয়ায় তিনি তার অংশের পুরো টাকা দেন না। আমরা দুই ভাই বলেছি, আপনি যা পারেন দেন, বাকিটা আমরা দুজনে দিয়ে দিব। অবশ্য গোশত সকলের অংশ হারেই বণ্টন করা হয়। টাকা কম-বেশির কারণে তাতে ব্যবধান করা হয় না; বরং ধরে নেওয়া হয় যে, আমরা ছোট দুই ভাই বড় ভাইয়ের টাকার আংশিক আদায় করে দিই।
জানতে চাই, উল্লেখিত পদ্ধতিতে আমাদের কুরবানী কি সহীহ হচ্ছে?
উত্তর
হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাদের কুরবানী সহীহ হয়েছে। গরু-মহিষে শরিকে কুরবানী দেওয়ার জন্য শর্ত হল, কারো অংশ এক সপ্তমাংশের কম না হওয়া। প্রশ্নোক্ত অবস্থায় বড় ভাই যদিও তার অংশের চেয়ে কম দিচ্ছেন কিন্তু অন্য দুই ভাই তার অংশের বাকিটা দিয়ে দিবেন বলে উল্লেখ করেছেন। তাই বড় ভাইয়ের অংশ এক সপ্তমাংশের কম হয় না।
-ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৯০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭৮
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৯২৪
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমি গতবার হজ্ব করি। হজ্বের মূল কার্যক্রম শেষ করে বিদায়ী...

প্রশ্ন
আমি গতবার হজ্ব করি। হজ্বের মূল কার্যক্রম শেষ করে বিদায়ী তাওয়াফ না করে আমার বিভিন্ন বন্ধুর বাসায় এক মাস থাকি। অতপর কোনো তাওয়াফ না করে দেশে ফিরে আসি। আমার জানার বিষয় হল-
ক) হজ্বের মূল কাজ সম্পন্ন করার পর কেউ যদি দেশে না ফিরে কোনো উদ্দেশ্যে মক্কায় কিছুদিনের জন্য থাকে তাহলে বিদায়ী তাওয়াফ জরুরি কি না?
খ) তার জন্য বিদায়ী তাওয়াফ জরুরি হলে তা কখন আদায় করবে?
গ) তাওয়াফ না করে ফিরে আসার কারণে বর্তমানে আমার করণীয় কী? দয়া করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়ে উপকৃত করবেন।
উত্তর
ক) হজ্বের যাবতীয় কার্যক্রম শেষ করার পর মক্কায় কিছুদিন অবস্থান করে দেশে ফেরার ইচ্ছা থাকলেও বিদায়ী তাওয়াফ করা ওয়াজিব। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, হাজিরা বায়তুল্লাহর সাথে শেষ সাক্ষাৎ না করে যেন ফিরে না আসে।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১৩২৭
খ) তাওয়াফে যিয়ারত (ফরয তাওয়াফ) আদায়ের পর থেকে যে কোনো সময় বিদায়ী তাওয়াফ আদায় করা যায়।তবে উত্তম হল, দেশে ফিরার আগ দিয়ে বিদায়ী তাওয়াফ করা।
হযরত উমর ইবনে আবদুল আযিয রাহ. একবার বিদায়ী তাওয়াফ আদায় করে এক অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যান। এরপর তিনি আবার বিদায়ী তাওয়াফ আদায় করেন।-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১৬০৫৮
গ) প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি যদি তাওয়াফে যিয়ারতের পর কোনো নফল তাওয়াফ করে থাকেন তাহলে উক্ত তাওয়াফ করার দ্বারাই বিদায়ী তাওয়াফের ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে বর্তমানে আপনাকে আর কিছুই করতে হবে না। কিন্তু ফরয তাওয়াফ করার পর যদি কোনো তাওয়াফ না করে থাকেন তাহলে যখন সুযোগ হয় নিজে উমরার উদ্দেশ্যে গিয়ে উমরার কাজ শেষ করে ছুটে যাওয়া তাওয়াফটি আদায় করে নিবেন। বিলম্বে করার কারণে কোনো দম ওয়াজিব হবে না। আর যদি এভাবে সেখানে গিয়ে তাওয়াফ করা সম্ভব না হয় তাহলে তিনি কারো দ্বারা হেরেম এলাকার মধ্যে একটি ছাগল/দুম্বা জরিমানা দম হিসেবে কুরবানি করতে পারেন।-ফাতহুল কাদীর ২/৩৯৭; রদ্দুল মুহতার ২/৫২৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪৫৪-৪৫৫; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩৩৪; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৫১
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৯০০
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমি কুরবানীর পশু খরিদ করার জন্য হাটে যাই। অসতর্কতাবশত একটি...

প্রশ্ন
আমি কুরবানীর পশু খরিদ করার জন্য হাটে যাই। অসতর্কতাবশত একটি গরুর পায়ের নিচে পা পড়ে আমার পায়ের অগ্রভাগ মারাত্মক যখম হয়। ডাক্তার ক্ষতস্থানে ব্যান্ডেজ করে দিয়েছেন। তিনি ব্যান্ডেজ খোলা ও সেখানে পানি লাগাতে নিষেধ করেছেন। এ অবস্থায় আমি কীভাবে অযু করব?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত অবস্থায় সুস্থ হওয়া পর্যন্ত অযু-গোসলের জন্য এ ব্যান্ডেজের উপর মাসেহ করবেন এবং পায়ের অবশিষ্ট সুস্থ অংশটুকু সম্ভব হলে অন্যান্য অঙ্গের ন্যায় ধুয়ে নিবেন। আর যদি তা ধুতে গেলে ব্যান্ডেজ ভিজে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে তাহলে তার উপরও মাসেহ করবেন।
-সুনানে বায়হাকী ১/২২৮; আলমুহীতুল বুরহানী ১/৩৫৭; বাদায়েউস সানায়ে ১/৯০; শরহুল মুনইয়া ১১৬-১১৭; আলবাহরুর রায়েক ১/১৮৭
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮২২
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

জনৈক ব্যক্তির উপর কুরবানী ওয়াজিব হয়েছে। কিন্তু এবার কুরবানীর পশু...

প্রশ্ন
জনৈক ব্যক্তির উপর কুরবানী ওয়াজিব হয়েছে। কিন্তু এবার কুরবানীর পশু ক্রয় করতে পারেনি। এভাবেই কুরবানীর দিনগুলো চলে যায়। এমতাবস্থায় তার করণীয় কী? সে কি পশু ক্রয় করে জবাই করে দিবে?
উত্তর
যেহেতু কুরবানীর দিনগুলো অতিবাহিত হয়ে গেছে তাই এখন আর পশু জবাই করবে না। বরং এক্ষেত্রে কুরবানীর উপযুক্ত একটি ছাগলের মূল্য সদকা করে দেওয়া ওয়াজিব।
-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৩; মাবসূত, সারাখসী ১২/১৪; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১১; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২১
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮২১
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

খালিদ ৭ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করে, যার দ্বারা মোটামুটিভাবে...

প্রশ্ন
খালিদ ৭ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করে, যার দ্বারা মোটামুটিভাবে তার সংসার চলে। গত কয়েকদিন পূর্বে তার আম্মা ইন্তেকাল করেন। পিতা আগেই মারা গেছেন। মায়ের মৃত্যুর পর তার মামারা তার আম্মার পৈত্রিক সম্পত্তি (৬ শতাংশ জমি, যার প্রতি শতাংশের মূল্য প্রায় এক লক্ষ টাকা) তার ও তার তিন বোনের নামে ১.৫ শতাংশ করে সমানভাবে রেজিস্ট্রি করে দিয়েছে। এছাড়া খালিদের উল্লেখযোগ্য কোনো সম্পদ নেই। তবে বর্তমানে তার কাছে নগদ ৫০ হাজার টাকা আছে। জানার বিষয় হল, প্রশ্নোক্ত অবস্থায় খালিদের উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে কি না?
উত্তর
প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী খালিদ মীরাস সূত্রে ১.৫ শতাংশ জমির মালিক হয়েছে তা যেহেতু তার প্রয়োজন অতিরিক্ত সম্পদ এবং তার মূল্যও নেসাব পরিমাণের বেশি (অর্থাৎ প্রায় এক লক্ষ ৫০ হাজার টাকা) তাই তার উপর কুরবানী ওয়াজিব।-ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৮৬; রদ্দুল মুহতার ২/৩৩৯
প্রকাশ থাকে যে, মায়ের সম্পত্তি তার ছেলেমেয়ের মাঝে সমান বণ্টন করা বৈধ হয়নি। কুরআন মজীদের হুকুম হল, মেয়ের তুলনায় ছেলে দ্বিগুণ মীরাসের হকদার।
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮১৩
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমার এক পরিচিত লোক, যার উপর কুরবানী ওয়াজিব। গত কুরবানীর...

প্রশ্ন
আমার এক পরিচিত লোক, যার উপর কুরবানী ওয়াজিব। গত কুরবানীর ঈদে কুরবানীর জন্য একটি পশু ক্রয় করে বাজার থেকে আনার সময় পথিমধ্যে তা হারিয়ে যায়। এরপর তিনি আরেকটি পশু কিনেন। ঘটনাক্রমে পরে হারানো পশুটিও পাওয়া যায় এবং তিনি উভয়টি কুরবানী করেন।
এখন জানার বিষয় হল, তার উপর উভয়টি কুরবানী করা কি জরুরি ছিল? নাকি যেকোনো একটি কুরবানী করলেই যথেষ্ট হত? জনৈক ব্যক্তি বলেছেন, উভয়টি কুরবানী করা তার উপর জরুরি ছিল।
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উভয় পশু কুরবানী করাটা উত্তম কাজ হয়েছে। এক্ষেত্রে উভয়টি কুরবানী করা জরুরি ছিল না। যেকোনো একটি কুরবানী করলেই ওয়াজিব আদায় হয়ে যেত। প্রশ্নোক্ত লোকটির কথা ঠিক নয়।
-বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৯; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪১৩; শরহু মুখতাসারিত তহাবী ৭/৩৬২
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ