بِسْمِ اللهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيمِ الَر كِتَابٌ أُحْكِمَتْ آيَاتُهُ ثُمَّ فُصِّلَتْ مِن لَّدُنْ حَكِيمٍ خَبِيرٍ
আলিফ, লা-ম, রা; এটি এমন এক কিতাব, যার আয়াত সমূহ সুপ্রতিষ্ঠিত অতঃপর সবিস্তারে বর্ণিত এক মহাজ্ঞানী, সর্বজ্ঞ সত্তার পক্ষ হতে। [ সুরা হুদ ১১:১ ]
أَلاَّ تَعْبُدُواْ إِلاَّ اللّهَ إِنَّنِي لَكُم مِّنْهُ نَذِيرٌ وَبَشِيرٌ
যেন তোমরা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো বন্দেগী না কর। নিশ্চয় আমি তোমাদের প্রতি তাঁরই পক্ষ হতে সতর্ককারী ও সুসংবাদ দাতা। [ সুরা হুদ ১১:২ ]
وَأَنِ اسْتَغْفِرُواْ رَبَّكُمْ ثُمَّ تُوبُواْ
إِلَيْهِ يُمَتِّعْكُم مَّتَاعًا حَسَنًا إِلَى أَجَلٍ مُّسَمًّى وَيُؤْتِ
كُلَّ ذِي فَضْلٍ فَضْلَهُ وَإِن تَوَلَّوْاْ فَإِنِّيَ أَخَافُ عَلَيْكُمْ
عَذَابَ يَوْمٍ كَبِيرٍ
আর তোমরা নিজেদের পালনকর্তা সমীপে ক্ষমা প্রার্থনা কর।
অনন্তর তাঁরই প্রতি মনোনিবেশ কর। তাহলে তিনি তোমাদেরকে নির্দিষ্ট সময়
পর্যন্ত উৎকৃষ্ট জীবনোপকরণ দান করবেন এবং অধিক আমলকারীকে বেশী করে দেবেন আর
যদি তোমরা বিমুখ হতে থাক, তবে আমি তোমাদের উপর এক মহা দিবসের আযাবের
আশঙ্কা করছি। [ সুরা হুদ ১১:৩ ]
إِلَى اللّهِ مَرْجِعُكُمْ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
আল্লাহর সান্নিধ্যেই তোমাদেরকে ফিরে যেতে হবে। আর তিনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান। [ সুরা হুদ ১১:৪ ]
أَلا إِنَّهُمْ يَثْنُونَ صُدُورَهُمْ لِيَسْتَخْفُواْ
مِنْهُ أَلا حِينَ يَسْتَغْشُونَ ثِيَابَهُمْ يَعْلَمُ مَا يُسِرُّونَ
وَمَا يُعْلِنُونَ إِنَّهُ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِ
জেনে রাখ, নিশ্চয়ই তারা নিজেদের বক্ষদেশ ঘুরিয়ে দেয়
যেন আল্লাহর নিকট হতে লুকাতে পারে। শুন, তারা তখন কাপড়ে নিজেদেরকে
আচ্ছাদিত করে, তিনি তখনও জানেন যা কিছু তারা চুপিসারে বলে আর প্রকাশ্যভাবে
বলে। নিশ্চয় তিনি জানেন যা কিছু অন্তর সমূহে নিহিত রয়েছে। [ সুরা হুদ ১১:৫ ]
وَمَا مِن دَآبَّةٍ فِي الأَرْضِ إِلاَّ عَلَى اللّهِ
رِزْقُهَا وَيَعْلَمُ مُسْتَقَرَّهَا وَمُسْتَوْدَعَهَا كُلٌّ فِي كِتَابٍ
مُّبِينٍ
আর পৃথিবীতে কোন বিচরণশীল নেই, তবে সবার জীবিকার
দায়িত্ব আল্লাহ নিয়েছেন তিনি জানেন তারা কোথায় থাকে এবং কোথায় সমাপিত
হয়। সবকিছুই এক সুবিন্যস্ত কিতাবে রয়েছে। [ সুরা হুদ ১১:৬ ]
وَهُوَ الَّذِي خَلَق السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضَ فِي
سِتَّةِ أَيَّامٍ وَكَانَ عَرْشُهُ عَلَى الْمَاء لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ
أَحْسَنُ عَمَلاً وَلَئِن قُلْتَ إِنَّكُم مَّبْعُوثُونَ مِن بَعْدِ
الْمَوْتِ لَيَقُولَنَّ الَّذِينَ كَفَرُواْ إِنْ هَـذَا إِلاَّ سِحْرٌ
مُّبِينٌ
তিনিই আসমান ও যমীন ছয় দিনে তৈরী করেছেন, তাঁর আরশ
ছিল পানির উপরে, তিনি তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে চান যে, তোমাদের মধ্যে কে
সবচেয়ে ভাল কাজ করে। আর যদি আপনি তাদেরকে বলেন যে, "নিশ্চয় তোমাদেরকে
মৃত্যুর পরে জীবিত ওঠানো হবে, তখন কাফেরেরা অবশ্য বলে এটা তো স্পষ্ট
যাদু!"; [ সুরা হুদ ১১:৭ ]
وَلَئِنْ أَخَّرْنَا عَنْهُمُ الْعَذَابَ إِلَى
أُمَّةٍ مَّعْدُودَةٍ لَّيَقُولُنَّ مَا يَحْبِسُهُ أَلاَ يَوْمَ
يَأْتِيهِمْ لَيْسَ مَصْرُوفًا عَنْهُمْ وَحَاقَ بِهِم مَّا كَانُواْ بِهِ
يَسْتَهْزِئُونَ
আর যদি আমি এক নির্ধারিত মেয়াদ পর্যন্ত তাদের আযাব
স্থগিত রাখি, তাহলে তারা নিশ্চয়ই বলবে কোন জিনিসে আযাব ঠেকিয়ে রাখছে?
শুনে রাখ, যেদিন তাদের উপর আযাব এসে পড়বে, সেদিন কিন্তু তা ফিরে যাওয়ার
নয়; তারা যে ব্যাপারে উপহাস করত তাই তাদেরকে ঘিরে ফেলবে। [ সুরা হুদ ১১:৮ ]
وَلَئِنْ أَذَقْنَا الإِنْسَانَ مِنَّا رَحْمَةً ثُمَّ نَزَعْنَاهَا مِنْهُ إِنَّهُ لَيَئُوسٌ كَفُورٌ
আর অবশ্যই যদি আমি মানুষকে আমার রহমতের আস্বাদ গ্রহণ করতে দেই, অতঃপর তা তার থেকে ছিনিয়ে নেই; তাহলে সে হতাশ ও কৃতঘ্ন হয়। [ সুরা হুদ ১১:৯ ]
وَلَئِنْ أَذَقْنَاهُ نَعْمَاء بَعْدَ ضَرَّاء مَسَّتْهُ لَيَقُولَنَّ ذَهَبَ السَّيِّئَاتُ عَنِّي إِنَّهُ لَفَرِحٌ فَخُورٌ
আর যদি তার উপর আপতিত দুঃখ কষ্টের পরে তাকে সুখভোগ
করতে দেই, তবে সে বলতে থাকে যে, আমার অমঙ্গল দূর হয়ে গেছে, আর সে আনন্দে
আত্নহারা হয়, অহঙ্কারে উদ্দত হয়ে পড়ে। [ সুরা হুদ ১১:১০ ]
إِلاَّ الَّذِينَ صَبَرُواْ وَعَمِلُواْ الصَّالِحَاتِ أُوْلَـئِكَ لَهُم مَّغْفِرَةٌ وَأَجْرٌ كَبِيرٌ
তবে যারা ধৈর্য্যধারণ করেছে এবং সৎকার্য করেছে তাদের জন্য ক্ষমা ও বিরাট প্রতিদান রয়েছে। [ সুরা হুদ ১১:১১ ]
فَلَعَلَّكَ تَارِكٌ بَعْضَ مَا يُوحَى إِلَيْكَ
وَضَآئِقٌ بِهِ صَدْرُكَ أَن يَقُولُواْ لَوْلاَ أُنزِلَ عَلَيْهِ كَنزٌ
أَوْ جَاء مَعَهُ مَلَكٌ إِنَّمَا أَنتَ نَذِيرٌ وَاللّهُ عَلَى كُلِّ
شَيْءٍ وَكِيلٌ
আর সম্ভবতঃ ঐসব আহকাম যা ওহীর মাধ্যমে তোমার নিকট
পাঠানো হয়, তার কিছু অংশ বর্জন করবে? এবং এতে মন ছোট করে বসবে? তাদের এ
কথায় যে, তাঁর উপর কোন ধন-ভান্ডার কেন অবতীর্ণ হয়নি? অথবা তাঁর সাথে কোন
ফেরেশতা আসেনি কেন? তুমিতো শুধু সতর্ককারী মাত্র; আর সব কিছুরই দায়িত্বভার
তো আল্লাহই নিয়েছেন। [ সুরা হুদ ১১:১২ ]
أَمْ يَقُولُونَ افْتَرَاهُ قُلْ فَأْتُواْ بِعَشْرِ
سُوَرٍ مِّثْلِهِ مُفْتَرَيَاتٍ وَادْعُواْ مَنِ اسْتَطَعْتُم مِّن دُونِ
اللّهِ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ
তারা কি বলে? কোরআন তুমি তৈরী করেছ? তুমি বল, তবে
তোমরাও অনুরূপ দশটি সূরা তৈরী করে নিয়ে আস এবং আল্লাহ ছাড়া যাকে পার ডেকে
নাও, যদি তোমাদের কথা সত্য হয়ে থাকে। [ সুরা হুদ ১১:১৩ ]
فَإِن لَّمْ يَسْتَجِيبُواْ لَكُمْ فَاعْلَمُواْ
أَنَّمَا أُنزِلِ بِعِلْمِ اللّهِ وَأَن لاَّ إِلَـهَ إِلاَّ هُوَ فَهَلْ
أَنتُم مُّسْلِمُونَ
অতঃপর তারা যদি তোমাদের কথা পুরণ করতে অপারগ হয়; তবে
জেনে রাখ, এটি আল্লাহর এলম দ্বারা অবতীর্ণ হয়েছে; আরো একীন করে নাও যে,
আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন মাবুদ নেই। অতএব, এখন কি তোমরা আত্নসমর্পন করবে? [ সুরা হুদ ১১:১৪ ]
مَن كَانَ يُرِيدُ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا وَزِينَتَهَا نُوَفِّ إِلَيْهِمْ أَعْمَالَهُمْ فِيهَا وَهُمْ فِيهَا لاَ يُبْخَسُونَ
যে ব্যক্তি পার্থিবজীবন ও তার চাকচিক্যই কামনা করে,
হয় আমি তাদের দুনিয়াতেই তাদের আমলের প্রতিফল ভোগ করিয়ে দেব এবং তাতে
তাদের প্রতি কিছুমাত্র কমতি করা হয় না। [ সুরা হুদ ১১:১৫ ]
أُوْلَـئِكَ الَّذِينَ لَيْسَ لَهُمْ فِي الآخِرَةِ
إِلاَّ النَّارُ وَحَبِطَ مَا صَنَعُواْ فِيهَا وَبَاطِلٌ مَّا كَانُواْ
يَعْمَلُونَ
এরাই হল সেসব লোক আখেরাতে যাদের জন্য আগুন ছাড়া নেই।
তারা এখানে যা কিছু করেছিল সবই বরবাদ করেছে; আর যা কিছু উপার্জন করেছিল,
সবই বিনষ্ট হল। [ সুরা হুদ ১১:১৬ ]
أَفَمَن كَانَ عَلَى بَيِّنَةٍ مِّن رَّبِّهِ
وَيَتْلُوهُ شَاهِدٌ مِّنْهُ وَمِن قَبْلِهِ كِتَابُ مُوسَى إَمَامًا
وَرَحْمَةً أُوْلَـئِكَ يُؤْمِنُونَ بِهِ وَمَن يَكْفُرْ بِهِ مِنَ
الأَحْزَابِ فَالنَّارُ مَوْعِدُهُ فَلاَ تَكُ فِي مِرْيَةٍ مِّنْهُ
إِنَّهُ الْحَقُّ مِن رَّبِّكَ وَلَـكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لاَ
يُؤْمِنُونَ
আচ্ছা বল তো, যে ব্যক্তি তার প্রভুর সুস্পষ্ট পথে
রয়েছে, আর সাথে সাথে আল্লাহর তরফ থেকে একটি সাক্ষীও বর্তমান রয়েছে এবং
তার পূর্ববর্তী মূসা (আঃ) এর কিতাবও সাক্ষী যা ছিল পথনির্দেশক ও রহমত
স্বরূপ, (তিনি কি অন্যান্যের সমান) অতএব তাঁরা কোরআনের প্রতি ঈমান আনেন। আর
ঐসব দলগুলি যে কেউ তা অস্বীকার করে, দোযখই হবে তার ঠিকানা। অতএব, আপনি
তাতে কোন সন্দেহে থাকবেন না। নিঃসন্দেহে তা আপনার পালনকর্তার পক্ষ হতে
ধ্রুব সত্য; তথাপি অনেকেই তা বিশ্বাস করে না। [ সুরা হুদ ১১:১৭ ]
وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرَى عَلَى اللّهِ
كَذِبًا أُوْلَـئِكَ يُعْرَضُونَ عَلَى رَبِّهِمْ وَيَقُولُ الأَشْهَادُ
هَـؤُلاء الَّذِينَ كَذَبُواْ عَلَى رَبِّهِمْ أَلاَ لَعْنَةُ اللّهِ عَلَى
الظَّالِمِينَ
আর তাদের চেয়ে বড় যালেম কে হতে পারে, যারা আল্লাহর
প্রতি মিথ্যারোপ করে। এসব লোককে তাদের পালনকর্তার সাক্ষাত সম্মূখীন করা হবে
আর সাক্ষিগণ বলতে থাকবে, এরাই ঐসব লোক, যারা তাদের পালনকর্তার প্রতি
মিথ্যারোপ করেছিল। শুনে রাখ, যালেমদের উপর আল্লাহর অভিসম্পাত রয়েছে। [ সুরা হুদ ১১:১৮ ]
الَّذِينَ يَصُدُّونَ عَن سَبِيلِ اللّهِ وَيَبْغُونَهَا عِوَجًا وَهُم بِالآخِرَةِ هُمْ كَافِرُونَ
যারা আল্লাহর পথে বাধা দেয়, আর তাতে বক্রতা খুজে বেড়ায়, এরাই আখরাতকে অস্বীকার করে। [ সুরা হুদ ১১:১৯ ]
أُولَـئِكَ لَمْ يَكُونُواْ مُعْجِزِينَ فِي الأَرْضِ
وَمَا كَانَ لَهُم مِّن دُونِ اللّهِ مِنْ أَوْلِيَاء يُضَاعَفُ لَهُمُ
الْعَذَابُ مَا كَانُواْ يَسْتَطِيعُونَ السَّمْعَ وَمَا كَانُواْ
يُبْصِرُونَ
তারা পৃথিবীতেও আল্লাহকে অপারগ করতে পারবে না এবং
আল্লাহ ব্যতীত তাদের কোন সাহায্যকারীও নেই, তাদের জন্য দ্বিগুণ শাস্তি
রয়েছে; তারা শুনতে পারত না এবং দেখতেও পেত না। [ সুরা হুদ ১১:২০ ]
أُوْلَـئِكَ الَّذِينَ خَسِرُواْ أَنفُسَهُمْ وَضَلَّ عَنْهُم مَّا كَانُواْ يَفْتَرُونَ
এরা সে লোক, যারা নিজেরাই নিজেদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত
করেছে, আর এরা যা কিছু মিথ্যা মা'বুদ সাব্যস্ত করেছিল, তা সবই তাদের থেকে
হারিয়ে গেছে। [ সুরা হুদ ১১:২১ ]
لاَ جَرَمَ أَنَّهُمْ فِي الآخِرَةِ هُمُ الأَخْسَرُونَ
আখেরাতে এরাই হবে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্থ কোন সন্দেহ নেই। [ সুরা হুদ ১১:২২ ]
إِنَّ الَّذِينَ آمَنُواْ وَعَمِلُواْ الصَّالِحَاتِ
وَأَخْبَتُواْ إِلَى رَبِّهِمْ أُوْلَـئِكَ أَصْحَابُ الجَنَّةِ هُمْ
فِيهَا خَالِدُونَ
নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে এবং স্বীয়
পালনকর্তার সমীপে বিনতি প্রকাশ করেছে তারাই বেহেশতবাসী, সেখানেই তারা
চিরকাল থাকবে। [ সুরা হুদ ১১:২৩ ]
مَثَلُ الْفَرِيقَيْنِ كَالأَعْمَى وَالأَصَمِّ وَالْبَصِيرِ وَالسَّمِيعِ هَلْ يَسْتَوِيَانِ مَثَلاً أَفَلاَ تَذَكَّرُونَ
উভয় পক্ষের দৃষ্টান্ত হচ্ছে যেমন অন্ধ ও বধির এবং যে
দেখতে পায় ও শুনতে পায় উভয়ের অবস্থা কি এক সমান? তবুও তোমরা কি ভেবে দেখ
না? [ সুরা হুদ ১১:২৪ ]
وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا نُوحًا إِلَى قَوْمِهِ إِنِّي لَكُمْ نَذِيرٌ مُّبِينٌ
আর অবশ্যই আমি নূহ (আঃ) কে তাঁর জাতির প্রতি প্রেরণ করেছি, (তিনি বললেন) নিশ্চয় আমি তোমাদের জন্য প্রকাশ্য সতর্ককারী। [ সুরা হুদ ১১:২৫ ]
أَن لاَّ تَعْبُدُواْ إِلاَّ اللّهَ إِنِّيَ أَخَافُ عَلَيْكُمْ عَذَابَ يَوْمٍ أَلِيمٍ
তোমরা আল্লাহ ব্যতীত কারো এবাদত করবে না। নিশ্চয় আমি তোমাদের ব্যাপারে এক যন্ত্রণাদায়ক দিনের আযাবের ভয় করছি। [ সুরা হুদ ১১:২৬ ]
فَقَالَ الْمَلأُ الَّذِينَ كَفَرُواْ مِن قِوْمِهِ
مَا نَرَاكَ إِلاَّ بَشَرًا مِّثْلَنَا وَمَا نَرَاكَ اتَّبَعَكَ إِلاَّ
الَّذِينَ هُمْ أَرَاذِلُنَا بَادِيَ الرَّأْيِ وَمَا نَرَى لَكُمْ
عَلَيْنَا مِن فَضْلٍ بَلْ نَظُنُّكُمْ كَاذِبِينَ
তখন তাঁর কওমের কাফের প্রধানরা বলল আমরা তো আপনাকে
আমাদের মত একজন মানুষ ব্যতীত আর কিছু মনে করি না; আর আমাদের মধ্যে যারা ইতর
ও স্থুল-বুদ্ধ িসম্পন্ন তারা ব্যতীত কাউকে তো আপনার আনুগত্য করতে দেখি না
এবং আমাদের উপর আপনাদের কেন প্রাধান্য দেখি না, বরং আপনারা সবাই মিথ্যাবাদী
বলে আমারা মনে করি। [ সুরা হুদ ১১:২৭ ]
قَالَ يَا قَوْمِ أَرَأَيْتُمْ إِن كُنتُ عَلَى
بَيِّنَةٍ مِّن رَّبِّيَ وَآتَانِي رَحْمَةً مِّنْ عِندِهِ فَعُمِّيَتْ
عَلَيْكُمْ أَنُلْزِمُكُمُوهَا وَأَنتُمْ لَهَا كَارِهُونَ
নূহ (আঃ) বললেন-হে আমার জাতি! দেখ তো আমি যদি আমার
পালনকর্তার পক্ষ হতে স্পষ্ট দলীলের উপর থাক, আর তিনি যদি তাঁর পক্ষ হতে
আমাকে রহমত দান করে থাকেন, তারপরেও তা তোমাদের চোখে না পড়ে, তাহলে আমি কি
উহা তোমাদের উপর তোমাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধেই চাপিয়ে দিতে পারি ? [ সুরা হুদ ১১:২৮ ]
وَيَا قَوْمِ لا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ مَالاً إِنْ
أَجْرِيَ إِلاَّ عَلَى اللّهِ وَمَا أَنَاْ بِطَارِدِ الَّذِينَ آمَنُواْ
إِنَّهُم مُّلاَقُو رَبِّهِمْ وَلَـكِنِّيَ أَرَاكُمْ قَوْمًا تَجْهَلُونَ
আর হে আমার জাতি! আমি তো এজন্য তোমাদের কাছে কোন অর্থ
চাই না; আমার পারিশ্রমিক তো আল্লাহর জিম্মায় রয়েছে। আমি কিন্তু
ঈমানদারদের তাড়িয়ে দিতে পারি না। তারা অবশ্যই তাদের পালনকর্তার সাক্ষাত
লাভ করবে। বরঞ্চ তোমাদেরই আমি অজ্ঞ সম্প্রদায় দেখছি। [ সুরা হুদ ১১:২৯ ]
وَيَا قَوْمِ مَن يَنصُرُنِي مِنَ اللّهِ إِن طَرَدتُّهُمْ أَفَلاَ تَذَكَّرُونَ
আর হে আমার জাতি! আমি যদি তাদের তাড়িয়ে দেই তাহলে আমাকে আল্লাহ হতে রেহাই দেবে কে? তোমরা কি চিন্তা করে দেখ না? [ সুরা হুদ ১১:৩০ ]
وَلاَ أَقُولُ لَكُمْ عِندِي خَزَآئِنُ اللّهِ وَلاَ
أَعْلَمُ الْغَيْبَ وَلاَ أَقُولُ إِنِّي مَلَكٌ وَلاَ أَقُولُ لِلَّذِينَ
تَزْدَرِي أَعْيُنُكُمْ لَن يُؤْتِيَهُمُ اللّهُ خَيْرًا اللّهُ أَعْلَمُ
بِمَا فِي أَنفُسِهِمْ إِنِّي إِذًا لَّمِنَ الظَّالِمِينَ
আর আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর
ভান্ডার রয়েছে এবং একথাও বলি না যে, আমি গায়বী খবরও জানি; একথাও বলি না
যে, আমি একজন ফেরেশতা; আর তোমাদের দৃষ্টিতে যারা লাঞ্ছিত আল্লাহ তাদের কোন
কল্যাণ দান করবেন না। তাদের মনের কথা আল্লাহ ভাল করেই জানেন। সুতরাং এমন
কথা বললে আমি অন্যায় কারী হব। [ সুরা হুদ ১১:৩১ ]
قَالُواْ يَا نُوحُ قَدْ جَادَلْتَنَا فَأَكْثَرْتَ جِدَالَنَا فَأْتَنِا بِمَا تَعِدُنَا إِن كُنتَ مِنَ الصَّادِقِينَ
তারা বলল-হে নূহ! আমাদের সাথে আপনি তর্ক করেছেন এবং
অনেক কলহ করেছেন। এখন আপনার সেই আযাব নিয়ে আসুন, যে সম্পর্কে আপনি
আমাদিগকে সতর্ক করেছেন, যদি আপনি সত্যবাদী হয়ে থাকেন। [ সুরা হুদ ১১:৩২ ]
قَالَ إِنَّمَا يَأْتِيكُم بِهِ اللّهُ إِن شَاء وَمَا أَنتُم بِمُعْجِزِينَ
তিনি বলেন, উহা তোমাদের কাছে আল্লাহই আনবেন, যদি তিনি ইচ্ছা করেন তখন তোমরা পালিয়ে তাঁকে অপারগ করতে পারবে না। [ সুরা হুদ ১১:৩৩ ]
وَلاَ يَنفَعُكُمْ نُصْحِي إِنْ أَرَدتُّ أَنْ أَنصَحَ
لَكُمْ إِن كَانَ اللّهُ يُرِيدُ أَن يُغْوِيَكُمْ هُوَ رَبُّكُمْ
وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ
আর আমি তোমাদের নসীহত করতে চাইলেও তা তোমাদের জন্য
ফলপ্রসূ হবে না, যদি আল্লাহ তোমাদেরকে গোমরাহ করতে চান; তিনিই তোমাদের
পালনকর্তা এবং তাঁর কাছেই তোমাদের ফিরে যেতে হবে। [ সুরা হুদ ১১:৩৪ ]
أَمْ يَقُولُونَ افْتَرَاهُ قُلْ إِنِ افْتَرَيْتُهُ فَعَلَيَّ إِجْرَامِي وَأَنَاْ بَرِيءٌ مِّمَّا تُجْرَمُونَ
তারা কি বলে? আপনি কোরআন রচনা করে এনেছেন? আপনি বলে
দিন আমি যদি রচনা করে এনে থাকি, তবে সে অপরাধ আমার, আর তোমরা যেসব অপরাধ কর
তার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। [ সুরা হুদ ১১:৩৫ ]
وَأُوحِيَ إِلَى نُوحٍ أَنَّهُ لَن يُؤْمِنَ مِن قَوْمِكَ إِلاَّ مَن قَدْ آمَنَ فَلاَ تَبْتَئِسْ بِمَا كَانُواْ يَفْعَلُونَ
আর নূহ (আঃ) এর প্রতি ওহী প্রেরণ করা হলো যে, যারা
ইতিমধ্যেই ঈমান এনেছে তাদের ছাড়া আপনার জাতির অন্য কেউ ঈমান আনবেনা এতএব
তাদের কার্যকলাপে বিমর্ষ হবেন না। [ সুরা হুদ ১১:৩৬ ]
وَاصْنَعِ الْفُلْكَ بِأَعْيُنِنَا وَوَحْيِنَا وَلاَ تُخَاطِبْنِي فِي الَّذِينَ ظَلَمُواْ إِنَّهُم مُّغْرَقُونَ
আর আপনি আমার সম্মুখে আমারই নির্দেশ মোতাবেক একটি নৌকা
তৈরী করুন এবং পাপিষ্ঠদের ব্যাপারে আমাকে কোন কথা বলবেন না। অবশ্যই তারা
ডুবে মরবে। [ সুরা হুদ ১১:৩৭ ]
وَيَصْنَعُ الْفُلْكَ وَكُلَّمَا مَرَّ عَلَيْهِ مَلأٌ
مِّن قَوْمِهِ سَخِرُواْ مِنْهُ قَالَ إِن تَسْخَرُواْ مِنَّا فَإِنَّا
نَسْخَرُ مِنكُمْ كَمَا تَسْخَرُونَ
তিনি নৌকা তৈরী করতে লাগলেন, আর তাঁর কওমের
নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা যখন পার্শ্ব দিয়ে যেত, তখন তাঁকে বিদ্রুপ করত।
তিনি বললেন, তোমরা যদি আমাদের উপহাস করে থাক, তবে তোমরা যেমন উপহাস করছ
আমরাও তদ্রুপ তোমাদের উপহাস করছি। [ সুরা হুদ ১১:৩৮ ]
فَسَوْفَ تَعْلَمُونَ مَن يَأْتِيهِ عَذَابٌ يُخْزِيهِ وَيَحِلُّ عَلَيْهِ عَذَابٌ مُّقِيمٌ
অতঃপর অচিরেই জানতে পারবে-লাঞ্ছ নাজনক আযাব কার উপর আসে এবং চিরস্থায়ী আযাব কার উপর অবতরণ করে। [ সুরা হুদ ১১:৩৯ ]
حَتَّى إِذَا جَاء أَمْرُنَا وَفَارَ التَّنُّورُ
قُلْنَا احْمِلْ فِيهَا مِن كُلٍّ زَوْجَيْنِ اثْنَيْنِ وَأَهْلَكَ إِلاَّ
مَن سَبَقَ عَلَيْهِ الْقَوْلُ وَمَنْ آمَنَ وَمَا آمَنَ مَعَهُ إِلاَّ
قَلِيلٌ
অবশেষে যখন আমার হুকুম এসে পৌঁছাল এবং ভুপৃষ্ঠ উচ্ছসিত
হয়ে উঠল, আমি বললামঃ সর্বপ্রকার জোড়ার দুটি করে এবং যাদের উপরে
পূর্বহে?ই হুকুম হয়ে গেছে তাদের বাদি দিয়ে, আপনার পরিজনবর্গ ও সকল
ঈমানদারগণকে নৌকায় তুলে নিন। বলাবাহুল্য অতি অল্পসংখ্যক লোকই তাঁর সাথে
ঈমান এনেছিল। [ সুরা হুদ ১১:৪০ ]
وَقَالَ ارْكَبُواْ فِيهَا بِسْمِ اللّهِ مَجْرَاهَا وَمُرْسَاهَا إِنَّ رَبِّي لَغَفُورٌ رَّحِيمٌ
আর তিনি বললেন, তোমরা এতে আরোহন কর। আল্লাহর নামেই এর গতি ও স্থিতি। আমার পালনকর্তা অতি ক্ষমাপরায়ন, মেহেরবান। [ সুরা হুদ ১১:৪১ ]
وَهِيَ تَجْرِي بِهِمْ فِي مَوْجٍ كَالْجِبَالِ
وَنَادَى نُوحٌ ابْنَهُ وَكَانَ فِي مَعْزِلٍ يَا بُنَيَّ ارْكَب مَّعَنَا
وَلاَ تَكُن مَّعَ الْكَافِرِينَ
আর নৌকাখানি তাদের বহন করে চলল পর্বত প্রমাণ
তরঙ্গমালার মাঝে, আর নূহ (আঃ) তাঁর পুত্রকে ডাক দিলেন আর সে সরে রয়েছিল,
তিনি বললেন, প্রিয় বৎস! আমাদের সাথে আরোহন কর এবং কাফেরদের সাথে থেকো না। [
সুরা হুদ ১১:৪২ ]
قَالَ سَآوِي إِلَى جَبَلٍ يَعْصِمُنِي مِنَ الْمَاء
قَالَ لاَ عَاصِمَ الْيَوْمَ مِنْ أَمْرِ اللّهِ إِلاَّ مَن رَّحِمَ
وَحَالَ بَيْنَهُمَا الْمَوْجُ فَكَانَ مِنَ الْمُغْرَقِينَ
সে বলল, আমি অচিরেই কোন পাহাড়ে আশ্রয় নেব, যা আমাকে
পানি হতে রক্ষা করবে। নূহ (আঃ) বল্লেন আজকের দিনে আল্লাহর হুকুম থেকে কোন
রক্ষাকারী নেই। একমাত্র তিনি যাকে দয়া করবেন। এমন সময় উভয়ের মাঝে তরঙ্গ
আড়াল হয়ে দাঁড়াল, ফলে সে নিমজ্জিত হল। [ সুরা হুদ ১১:৪৩ ]
وَقِيلَ يَا أَرْضُ ابْلَعِي مَاءكِ وَيَا سَمَاء
أَقْلِعِي وَغِيضَ الْمَاء وَقُضِيَ الأَمْرُ وَاسْتَوَتْ عَلَى
الْجُودِيِّ وَقِيلَ بُعْداً لِّلْقَوْمِ الظَّالِمِينَ
আর নির্দেশ দেয়া হল-হে পৃথিবী! তোমার পানি গিলে ফেল,
আর হে আকাশ, ক্ষান্ত হও। আর পানি হ্রাস করা হল এবং কাজ শেষ হয়ে গেল, আর
জুদী পর্বতে নৌকা ভিড়ল এবং ঘোষনা করা হল, দুরাত্না কাফেররা নিপাত যাক। [ সুরা হুদ ১১:৪৪ ]
وَنَادَى نُوحٌ رَّبَّهُ فَقَالَ رَبِّ إِنَّ ابُنِي مِنْ أَهْلِي وَإِنَّ وَعْدَكَ الْحَقُّ وَأَنتَ أَحْكَمُ الْحَاكِمِينَ
আর নূহ (আঃ) তাঁর পালনকর্তাকে ডেকে বললেন-হে
পরওয়ারদেগার, আমার পুত্র তো আমার পরিজনদের অন্তর্ভুক্ত; আর আপনার ওয়াদাও
নিঃসন্দেহে সত্য আর আপনিই সর্বাপেক্ষা বিজ্ঞ ফয়সালাকারী। [ সুরা হুদ ১১:৪৫ ]
قَالَ يَا نُوحُ إِنَّهُ لَيْسَ مِنْ أَهْلِكَ إِنَّهُ
عَمَلٌ غَيْرُ صَالِحٍ فَلاَ تَسْأَلْنِ مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ
إِنِّي أَعِظُكَ أَن تَكُونَ مِنَ الْجَاهِلِينَ
আল্লাহ বলেন, হে নূহ! নিশ্চয় সে আপনার পরিবারভুক্ত
নয়। নিশ্চই সে দুরাচার! সুতরাং আমার কাছে এমন দরখাস্ত করবেন না, যার খবর
আপনি জানেন না। আমি আপনাকে উপপদেশ দিচ্ছি যে, আপনি অজ্ঞদের দলভুক্ত হবেন
না। [ সুরা হুদ ১১:৪৬ ]
قَالَ رَبِّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ أَنْ أَسْأَلَكَ مَا
لَيْسَ لِي بِهِ عِلْمٌ وَإِلاَّ تَغْفِرْ لِي وَتَرْحَمْنِي أَكُن مِّنَ
الْخَاسِرِينَ
নূহ (আঃ) বলেন-হে আমার পালনকর্তা আমার যা জানা নেই এমন
কোন দরখাস্ত করা হতে আমি আপনার কাছেই আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আপনি যদি
আমাকে ক্ষমা না করেন, দয়া না করেন, তাহলে আমি ক্ষতিগ্রস্ত হব। [ সুরা হুদ ১১:৪৭ ]
قِيلَ يَا نُوحُ اهْبِطْ بِسَلاَمٍ مِّنَّا وَبَركَاتٍ
عَلَيْكَ وَعَلَى أُمَمٍ مِّمَّن مَّعَكَ وَأُمَمٌ سَنُمَتِّعُهُمْ ثُمَّ
يَمَسُّهُم مِّنَّا عَذَابٌ أَلِيمٌ
হুকুম হল-হে নূহ (আঃ)! আমার পক্ষ হতে নিরাপত্তা এবং
আপনার নিজের ও সঙ্গীয় সম্প্রদায়গুলির উপর বরকত সহকারে অবতরণ করুণ। আর
অন্যান্য যেসব সম্প্রদায় রয়েছে আমি তাদের কেও উপকৃত হতে দেব। অতঃপর তাদের
উপর আমার দরুন আযাব আপতিত হবে। [ সুরা হুদ ১১:৪৮ ]
تِلْكَ مِنْ أَنبَاء الْغَيْبِ نُوحِيهَا إِلَيْكَ مَا
كُنتَ تَعْلَمُهَا أَنتَ وَلاَ قَوْمُكَ مِن قَبْلِ هَـذَا فَاصْبِرْ
إِنَّ الْعَاقِبَةَ لِلْمُتَّقِينَ
এটি গায়বের খবর, আমি আপনার প্রতি ওহী প্রেরন করছি।
ইতিপূর্বে এটা আপনার এবং আপনার জাতির জানা ছিল না। আপনি ধৈর্য্যধারণ করুন।
যারা ভয় করে চলে, তাদের পরিণাম ভাল, সন্দেহ নেই। [ সুরা হুদ ১১:৪৯ ]
وَإِلَى عَادٍ أَخَاهُمْ هُودًا قَالَ يَا قَوْمِ
اعْبُدُواْ اللّهَ مَا لَكُم مِّنْ إِلَـهٍ غَيْرُهُ إِنْ أَنتُمْ إِلاَّ
مُفْتَرُونَ
আর আদ জাতির প্রতি আমি তাদের ভাই হুদকে প্রেরণ করেছি;
তিনি বলেন-হে আমার জাতি, আল্লাহর বন্দেগী কর, তিনি ভিন্ন তোমাদের কোন মাবুদ
নেই, তোমরা সবাই মিথ্যা আরোপ করছ। [ সুরা হুদ ১১:৫০ ]
يَا قَوْمِ لا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ أَجْرًا إِنْ أَجْرِيَ إِلاَّ عَلَى الَّذِي فَطَرَنِي أَفَلاَ تَعْقِلُونَ
হে আমার জাতি! আমি এজন্য তোমাদের কাছে কোন মজুরী চাই না; আমার মজুরী তাঁরই কাছে যিনি আমাকে পয়দা করেছেন; তবু তোমরা কেন বোঝ না? [ সুরা হুদ ১১:৫১ ]
وَيَا قَوْمِ اسْتَغْفِرُواْ رَبَّكُمْ ثُمَّ تُوبُواْ
إِلَيْهِ يُرْسِلِ السَّمَاء عَلَيْكُم مِّدْرَارًا وَيَزِدْكُمْ قُوَّةً
إِلَى قُوَّتِكُمْ وَلاَ تَتَوَلَّوْاْ مُجْرِمِينَ
আর হে আমার কওম! তোমাদের পালন কর্তার কাছে তোমরা ক্ষমা
প্রার্থনা কর, অতঃপর তাঁরই প্রতি মনোনিবেশ কর; তিনি আসমান থেকে তোমাদের
উপর বৃষ্টি ধারা প্রেরণ করবেন এবং তোমাদের শক্তির উপর শক্তি বৃদ্ধি করবেন,
তোমরা কিন্তু অপরাধীদের মত বিমুখ হয়ো না। [ সুরা হুদ ১১:৫২ ]
قَالُواْ يَا هُودُ مَا جِئْتَنَا بِبَيِّنَةٍ وَمَا نَحْنُ بِتَارِكِي آلِهَتِنَا عَن قَوْلِكَ وَمَا نَحْنُ لَكَ بِمُؤْمِنِينَ
তারা বলল-হে হুদ, তুমি আমাদের কাছে কোন প্রমাণ নিয়ে
আস নাই, আমরা তোমার কথায় আমাদের দেব-দেবীদের বর্জন করতে পারি না আর আমরা
তোমার প্রতি ঈমান আনয়নকারীও নই। [ সুরা হুদ ১১:৫৩ ]
إِن نَّقُولُ إِلاَّ اعْتَرَاكَ بَعْضُ آلِهَتِنَا
بِسُوَءٍ قَالَ إِنِّي أُشْهِدُ اللّهِ وَاشْهَدُواْ أَنِّي بَرِيءٌ
مِّمَّا تُشْرِكُونَ
বরং আমরাও তো বলি যে, আমাদের কোন দেবতা তোমার উপরে
শোচনীয় ভূত চাপিয়ে দিয়েছে। হুদ বললেন-আমি আল্লাহকে সাক্ষী করেছি আর
তোমাও সাক্ষী থাক যে, আমার কোন সম্পর্ক নাই তাঁদের সাথে যাদের কে তোমরা
শরিক করছ; [ সুরা হুদ ১১:৫৪ ]
مِن دُونِهِ فَكِيدُونِي جَمِيعًا ثُمَّ لاَ تُنظِرُونِ
তাকে ছাড়া, তোমরা সবাই মিলে আমার অনিষ্ট করার প্রয়াস চালাও, অতঃপর আমাকে কোন অবকাশ দিও না। [ সুরা হুদ ১১:৫৫ ]
إِنِّي تَوَكَّلْتُ عَلَى اللّهِ رَبِّي وَرَبِّكُم
مَّا مِن دَآبَّةٍ إِلاَّ هُوَ آخِذٌ بِنَاصِيَتِهَا إِنَّ رَبِّي عَلَى
صِرَاطٍ مُّسْتَقِيمٍ
আমি আল্লাহর উপর নিশ্চিত ভরসা করেছি যিনি আমার এবং
তোমাদের পরওয়ারদেগার। পৃথিবীর বুকে বিচরণকারী এমন কোন প্রাণী নাই যা তাঁর
র্পূণ আয়ত্তাধীন নয়। আমার পালকর্তার সরল পথে সন্দেহ নেই। [ সুরা হুদ ১১:৫৬ ]
فَإِن تَوَلَّوْاْ فَقَدْ أَبْلَغْتُكُم مَّا
أُرْسِلْتُ بِهِ إِلَيْكُمْ وَيَسْتَخْلِفُ رَبِّي قَوْمًا غَيْرَكُمْ
وَلاَ تَضُرُّونَهُ شَيْئًا إِنَّ رَبِّي عَلَىَ كُلِّ شَيْءٍ حَفِيظٌ
তথাপি যদি তোমরা মুখ ফেরাও, তবে আমি তোমাদেরকে তা
পৌছিয়েছি যা আমার কাছে তোমাদের প্রতি প্রেরিত হয়েছে; আর আমার পালনকর্তা
অন্য কোন জাতিকে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করবেন, আর তোমরা তাঁর কিছুই বিগড়াতে
পারবে না; নিশ্চয়ই আমার পরওয়ারদেগারই প্রতিটি বস্তুর হেফাজতকারী। [ সুরা হুদ ১১:৫৭ ]
وَلَمَّا جَاء أَمْرُنَا نَجَّيْنَا هُودًا وَالَّذِينَ آمَنُواْ مَعَهُ بِرَحْمَةٍ مِّنَّا وَنَجَّيْنَاهُم مِّنْ عَذَابٍ غَلِيظٍ
আর আমার আদেশ যখন উপস্থিত হল, তখন আমি নিজ রহমতে হুদ
এবং তাঁর সঙ্গী ঈমানদারগণকে পরিত্রাণ করি এবং তাদেরকে এক কঠিন শাস্তি থেকে
রক্ষা করি। [ সুরা হুদ ১১:৫৮ ]
وَتِلْكَ عَادٌ جَحَدُواْ بِآيَاتِ رَبِّهِمْ وَعَصَوْاْ رُسُلَهُ وَاتَّبَعُواْ أَمْرَ كُلِّ جَبَّارٍ عَنِيدٍ
এ ছিল আদ জাতি, যারা তাদের পালনকর্তার আয়াতকে অমান্য
করেছে, আর তদীয় রসূলগণের অবাধ্যতা করেছে এবং প্রত্যেক উদ্ধত বিরোধীদের
আদেশ পালন করেছে। [ সুরা হুদ ১১:৫৯ ]
وَأُتْبِعُواْ فِي هَـذِهِ الدُّنْيَا لَعْنَةً
وَيَوْمَ الْقِيَامَةِ أَلا إِنَّ عَادًا كَفَرُواْ رَبَّهُمْ أَلاَ
بُعْدًا لِّعَادٍ قَوْمِ هُودٍ
এ দুনিয়ায় তাদের পিছনে পিছনে লা'নত রয়েছে এবং
কেয়ামতের দিনেও; জেনে রাখ, আদ জাতি তাদের পালনকর্তাকে অস্বীকার করেছে,
হুদের জ্ঞাতি আদ জাতির প্রতি অভিসম্পাত রয়েছে জেনে রাখ। [ সুরা হুদ ১১:৬০ ]
وَإِلَى ثَمُودَ أَخَاهُمْ صَالِحًا قَالَ يَا قَوْمِ
اعْبُدُواْ اللّهَ مَا لَكُم مِّنْ إِلَـهٍ غَيْرُهُ هُوَ أَنشَأَكُم مِّنَ
الأَرْضِ وَاسْتَعْمَرَكُمْ فِيهَا فَاسْتَغْفِرُوهُ ثُمَّ تُوبُواْ
إِلَيْهِ إِنَّ رَبِّي قَرِيبٌ مُّجِيبٌ
আর সামুদ জাতি প্রতি তাদের ভাই সালেহ কে প্রেরণ করি;
তিনি বললেন, হে আমার জাতি। আল্লাহর বন্দেগী কর, তিনি ছাড়া তোমাদের কোন
উপাস্য নাই। তিনিই যমীন হতে তোমাদেরকে পয়দা করেছেন, তন্মধ্যে তোমাদেরকে
বসতি দান করেছেন। অতএব; তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর অতঃপর তাঁরই দিকে
ফিরে চল আমার পালনকর্তা নিকটেই আছেন, কবুল করে থাকেন; সন্দেহ নেই। [ সুরা হুদ ১১:৬১ ]
قَالُواْ يَا صَالِحُ قَدْ كُنتَ فِينَا مَرْجُوًّا
قَبْلَ هَـذَا أَتَنْهَانَا أَن نَّعْبُدَ مَا يَعْبُدُ آبَاؤُنَا
وَإِنَّنَا لَفِي شَكٍّ مِّمَّا تَدْعُونَا إِلَيْهِ مُرِيبٍ
তারা বলল-হে সালেহ, ইতিপূর্বে তোমার কাছে আমাদের বড়
আশা ছিল। আমাদের বাপ-দাদা যা পূজা করত তুমি কি আমাদেরকে তার পূজা করতে
নিষেধ কর? কিন্তু যার প্রতি তুমি আমাদের আহবান জানাচ্ছ আমাদের তাতে এমন
সন্দেহ রয়েছে যে, মন মোটেই সায় দিচ্ছে না। [ সুরা হুদ ১১:৬২ ]
قَالَ يَا قَوْمِ أَرَأَيْتُمْ إِن كُنتُ عَلَى
بَيِّنَةً مِّن رَّبِّي وَآتَانِي مِنْهُ رَحْمَةً فَمَن يَنصُرُنِي مِنَ
اللّهِ إِنْ عَصَيْتُهُ فَمَا تَزِيدُونَنِي غَيْرَ تَخْسِيرٍ
সালেহ বললেন-হে আমার জাতি! তোমরা কি মনে কর, আমি যদি
আমার পালনকর্তার পক্ষ হতে বুদ্ধি বিবেচনা লাভ করে থাকি আর তিনি যদি আমাকে
নিজের তরফ হতে রহমত দান করে থাকেন, অতঃপর আমি যদি তাঁর অবাধ্য হই তবে তার
থেকে কে আমায় রক্ষা করবে? তোমরা তো আমার ক্ষতি ছাড়া কিছুই বৃদ্ধি করতে
পরবে না [ সুরা হুদ ১১:৬৩ ]
وَيَا قَوْمِ هَـذِهِ نَاقَةُ اللّهِ لَكُمْ آيَةً
فَذَرُوهَا تَأْكُلْ فِي أَرْضِ اللّهِ وَلاَ تَمَسُّوهَا بِسُوءٍ
فَيَأْخُذَكُمْ عَذَابٌ قَرِيبٌ
আর হে আমার জাতি! আল্লাহর এ উষ্ট্রীটি তোমাদের জন্য
নিদর্শন, অতএব তাকে আল্লাহর যমীনে বিচরণ করে খেতে দাও, এবং তাকে মন্দভাবে
স্পর্শও করবে না। নতুবা অতি সত্বর তোমাদেরকে আযাব পাকড়াও করবে। [ সুরা হুদ ১১:৬৪ ]
فَعَقَرُوهَا فَقَالَ تَمَتَّعُواْ فِي دَارِكُمْ ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ ذَلِكَ وَعْدٌ غَيْرُ مَكْذُوبٍ
তবু তারা উহার পা কেটে দিল। তখন সালেহ বললেন-তোমরা নিজেদের গৃহে তিনটি দিন উপভোগ করে নাও। ইহা এমন ওয়াদা যা মিথ্যা হবে না। [ সুরা হুদ ১১:৬৫ ]
فَلَمَّا جَاء أَمْرُنَا نَجَّيْنَا صَالِحًا
وَالَّذِينَ آمَنُواْ مَعَهُ بِرَحْمَةٍ مِّنَّا وَمِنْ خِزْيِ يَوْمِئِذٍ
إِنَّ رَبَّكَ هُوَ الْقَوِيُّ الْعَزِيزُ
অতঃপর আমার আযাব যখন উপস্থিত হল, তখন আমি সালেহকে ও
তদীয় সঙ্গী ঈমানদারগণকে নিজ রহমতে উদ্ধার করি, এবং সেদিনকার অপমান হতে
রক্ষা করি। নিশ্চয় তোমার পালনকর্তা তিনি সর্বশক্তিমান পরাক্রমশালী। [ সুরা হুদ ১১:৬৬ ]
وَأَخَذَ الَّذِينَ ظَلَمُواْ الصَّيْحَةُ فَأَصْبَحُواْ فِي دِيَارِهِمْ جَاثِمِينَ
আর ভয়ঙ্কর গর্জন পাপিষ্ঠদের পাকড়াও করল, ফলে ভোর হতে না হতেই তারা নিজ নিজ গৃহসমূহে উপুর হয়ে পড়ে রইল। [ সুরা হুদ ১১:৬৭ ]
كَأَن لَّمْ يَغْنَوْاْ فِيهَا أَلاَ إِنَّ ثَمُودَ كَفرُواْ رَبَّهُمْ أَلاَ بُعْدًا لِّثَمُودَ
যেন তাঁরা কোনদিনই সেখানে ছিল না। জেনে রাখ, নিশ্চয়
সামুদ জাতি তাদের পালনকর্তার প্রতি অস্বীকার করেছিল। আরো শুনে রাখ, সামুদ
জাতির জন্য অভিশাপ রয়েছে। [ সুরা হুদ ১১:৬৮ ]
وَلَقَدْ جَاءتْ رُسُلُنَا إِبْرَاهِيمَ بِالْبُـشْرَى قَالُواْ سَلاَمًا قَالَ سَلاَمٌ فَمَا لَبِثَ أَن جَاء بِعِجْلٍ حَنِيذٍ
আর অবশ্যই আমার প্রেরিত ফেরেশতারা ইব্রাহীমেরে কাছে
সুসংবাদ নিয়ে এসেছিল তারা বলল সালাম, তিনিও বললেন-সালাম । অতঃপর
অল্পক্ষণের মধ্যেই তিনি একটি ভুনা করা বাছুর নিয়ে এলেন! [ সুরা হুদ ১১:৬৯ ]
فَلَمَّا رَأَى أَيْدِيَهُمْ لاَ تَصِلُ إِلَيْهِ
نَكِرَهُمْ وَأَوْجَسَ مِنْهُمْ خِيفَةً قَالُواْ لاَ تَخَفْ إِنَّا
أُرْسِلْنَا إِلَى قَوْمِ لُوطٍ
কিন্তু যখন দেখলেন যে, আহার্য্যের দিকে তাদের হস্ত
প্রসারিত হচ্ছে না, তখন তিনি সন্ধিগ্ধ হলেন এবং মনে মনে তাঁদের সম্পর্কে
ভয় অনুভব করতে লাগলেন। তারা বলল-ভয় পাবেন না। আমরা লূতের কওমের প্রতি
প্রেরিত হয়েছি। [ সুরা হুদ ১১:৭০ ]
وَامْرَأَتُهُ قَآئِمَةٌ فَضَحِكَتْ فَبَشَّرْنَاهَا بِإِسْحَاقَ وَمِن وَرَاء إِسْحَاقَ يَعْقُوبَ
তাঁর স্ত্রীও নিকটেই দাড়িয়েছিল, সে হেসে ফেলল। অতঃপর আমি তাকে ইসহাকের জন্মের সুখবর দিলাম এবং ইসহাকের পরের ইয়াকুবেরও। [ সুরা হুদ ১১:৭১ ]
قَالَتْ يَا وَيْلَتَى أَأَلِدُ وَأَنَاْ عَجُوزٌ وَهَـذَا بَعْلِي شَيْخًا إِنَّ هَـذَا لَشَيْءٌ عَجِيبٌ
সে বলল-কি দুর্ভাগ্য আমার! আমি সন্তান প্রসব করব? অথচ
আমি বার্ধক্যের শেষ প্রান্তে এসে উপনীত হয়েছি আর আমার স্বামীও বৃদ্ধ, এতো
ভারী আশ্চর্য কথা। [ সুরা হুদ ১১:৭২ ]
قَالُواْ أَتَعْجَبِينَ مِنْ أَمْرِ اللّهِ رَحْمَتُ اللّهِ وَبَرَكَاتُهُ عَلَيْكُمْ أَهْلَ الْبَيْتِ إِنَّهُ حَمِيدٌ مَّجِيدٌ
তারা বলল-তুমি আল্লাহর হুকুম সম্পর্কে বিস্ময়বোধ করছ?
হে গৃহবাসীরা, তোমাদের উপর আল্লাহর রহমত ও প্রভুত বরকত রয়েছে। নিশ্চয়
আল্লাহ প্রশংসিত মহিমাময়। [ সুরা হুদ ১১:৭৩ ]
فَلَمَّا ذَهَبَ عَنْ إِبْرَاهِيمَ الرَّوْعُ وَجَاءتْهُ الْبُشْرَى يُجَادِلُنَا فِي قَوْمِ لُوطٍ
অতঃপর যখন ইব্রাহীম (আঃ) এর আতঙ্ক দূর হল এবং তিনি সুসংবাদ প্রাপ্ত হলেন, তখন তিনি আমার সাথে তর্ক শুরু করলেন কওমে লূত সম্পর্কে। [ সুরা হুদ ১১:৭৪ ]
إِنَّ إِبْرَاهِيمَ لَحَلِيمٌ أَوَّاهٌ مُّنِيبٌ
ইব্রাহীম (আঃ) বড়ই ধৈর্য্যশীল, কোমল অন্তর, আল্লাহমুখী সন্দেহ নেই। [ সুরা হুদ ১১:৭৫ ]
يَا إِبْرَاهِيمُ أَعْرِضْ عَنْ هَذَا إِنَّهُ قَدْ جَاء أَمْرُ رَبِّكَ وَإِنَّهُمْ آتِيهِمْ عَذَابٌ غَيْرُ مَرْدُودٍ
ইব্রাহীম, এহেন ধারণা পরিহার কর; তোমার পালনকর্তার
হুকুম এসে গেছে, এবং তাদের উপর সে আযাব অবশ্যই আপতিত হবে, যা কখনো প্রতিহত
হবার নয়। [ সুরা হুদ ১১:৭৬ ]
وَلَمَّا جَاءتْ رُسُلُنَا لُوطًا سِيءَ بِهِمْ وَضَاقَ بِهِمْ ذَرْعًا وَقَالَ هَـذَا يَوْمٌ عَصِيبٌ
আর যখন আমার প্রেরিত ফেরেশতাগণ লূত (আঃ) এর নিকট
উপস্থিত হল। তখন তাঁদের আগমনে তিনি দুচিন্তাগ্রস্ত হলেন এবং তিনি বলতে
লাগলেন, আজ অত্যন্ত কঠিন দিন। [ সুরা হুদ ১১:৭৭ ]
وَجَاءهُ قَوْمُهُ يُهْرَعُونَ إِلَيْهِ وَمِن قَبْلُ
كَانُواْ يَعْمَلُونَ السَّيِّئَاتِ قَالَ يَا قَوْمِ هَـؤُلاء بَنَاتِي
هُنَّ أَطْهَرُ لَكُمْ فَاتَّقُواْ اللّهَ وَلاَ تُخْزُونِ فِي ضَيْفِي
أَلَيْسَ مِنكُمْ رَجُلٌ رَّشِيدٌ
আর তাঁর কওমের লোকেরা স্বতঃস্ফুর্তভাবে তার (গৃহ) পানে
ছুটে আসতে লাগল। পূর্ব থেকেই তারা কু-কর্মে তৎপর ছিল। লূত (আঃ) বললেন-হে
আমার কওম, এ আমার কন্যারা রয়েছে, এরা তোমাদের জন্য অধিক পবিত্রতমা। সুতরাং
তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং অতিথিদের ব্যাপারে আমাকে লজ্জিত করো না,
তোমাদের মধ্যে কি কোন ভাল মানুষ নেই। [ সুরা হুদ ১১:৭৮ ]
قَالُواْ لَقَدْ عَلِمْتَ مَا لَنَا فِي بَنَاتِكَ مِنْ حَقٍّ وَإِنَّكَ لَتَعْلَمُ مَا نُرِيدُ
তারা বলল ু তুমি তো জানই, তোমার কন্যাদের নিয়ে আমাদের কোন গরজ নেই। আর আমরা কি চাই, তাও তুমি অবশ্যই জান। [ সুরা হুদ ১১:৭৯ ]
قَالَ لَوْ أَنَّ لِي بِكُمْ قُوَّةً أَوْ آوِي إِلَى رُكْنٍ شَدِيدٍ
লূত (আঃ) বললেন-হায়, তোমাদের বিরুদ্ধে যদি আমার শক্তি থাকত অথবা আমি কোন সূদৃঢ় আশ্রয় গ্রহণ করতে সক্ষম হতাম। [ সুরা হুদ ১১:৮০ ]
قَالُواْ يَا لُوطُ إِنَّا رُسُلُ رَبِّكَ لَن
يَصِلُواْ إِلَيْكَ فَأَسْرِ بِأَهْلِكَ بِقِطْعٍ مِّنَ اللَّيْلِ وَلاَ
يَلْتَفِتْ مِنكُمْ أَحَدٌ إِلاَّ امْرَأَتَكَ إِنَّهُ مُصِيبُهَا مَا
أَصَابَهُمْ إِنَّ مَوْعِدَهُمُ الصُّبْحُ أَلَيْسَ الصُّبْحُ بِقَرِيبٍ
মেহমান ফেরেশতাগন বলল-হে লূত (আঃ) আমরা তোমাদের
পালনকর্তার পক্ষ হতে প্রেরিত ফেরেশতা। এরা কখনো তোমার দিকে পৌঁছাতে পারবে
না। ব্যস তুমি কিছুটা রাত থাকতে থাকতে নিজের লোকজন নিয়ে বাইরে চলে যাও। আর
তোমাদের কেউ যেন পিছনে ফিরে না তাকায়। কিন্তু তোমার স্ত্রী নিশ্চয় তার
উপরও তা আপতিত হবে, যা ওদের উপর আপতিত হবে। ভোর বেলাই তাদের প্রতিশ্রুতির
সময়, ভোর কি খুব নিকটে নয়? [ সুরা হুদ ১১:৮১ ]
فَلَمَّا جَاء أَمْرُنَا جَعَلْنَا عَالِيَهَا سَافِلَهَا وَأَمْطَرْنَا عَلَيْهَا حِجَارَةً مِّن سِجِّيلٍ مَّنضُودٍ
অবশেষে যখন আমার হুকুম এসে পৌঁছাল, তখন আমি উক্ত জনপদকে উপরকে নীচে করে দিলাম এবং তার উপর স্তরে স্তরে কাঁকর পাথর বর্ষণ করলাম। [ সুরা হুদ ১১:৮২ ]
مُّسَوَّمَةً عِندَ رَبِّكَ وَمَا هِيَ مِنَ الظَّالِمِينَ بِبَعِيدٍ
যার প্রতিটি তোমার পালনকর্তার নিকট চিহ্নিত ছিল। আর সেই পাপিষ্ঠদের থেকে খুব দূরেও নয়। [ সুরা হুদ ১১:৮৩ ]
وَإِلَى مَدْيَنَ أَخَاهُمْ شُعَيْبًا قَالَ يَا
قَوْمِ اعْبُدُواْ اللّهَ مَا لَكُم مِّنْ إِلَـهٍ غَيْرُهُ وَلاَ
تَنقُصُواْ الْمِكْيَالَ وَالْمِيزَانَ إِنِّيَ أَرَاكُم بِخَيْرٍ
وَإِنِّيَ أَخَافُ عَلَيْكُمْ عَذَابَ يَوْمٍ مُّحِيطٍ
আর মাদইয়ানবাসীদের প্রতি তাদের ভাই শোয়ায়েব (আঃ) কে
প্রেরণ করেছি। তিনি বললেন-হে আমার কওম! আল্লাহর বন্দেগী কর, তিনি ছাড়া
আমাদের কোন মাবুদ নাই। আর পরিমাপে ও ওজনে কম দিও না, আজ আমি তোমাদেরকে ভাল
অবস্থায়ই দেখছি, কিন্তু আমি তোমাদের উপর এমন একদিনের আযাবের আশঙ্কা করছি
যেদিনটি পরিবেষ্টনকারী। [ সুরা হুদ ১১:৮৪ ]
وَيَا قَوْمِ أَوْفُواْ الْمِكْيَالَ وَالْمِيزَانَ
بِالْقِسْطِ وَلاَ تَبْخَسُواْ النَّاسَ أَشْيَاءهُمْ وَلاَ تَعْثَوْاْ فِي
الأَرْضِ مُفْسِدِينَ
আর হে আমার জাতি, ন্যায়নিষ্ঠার সাথে ঠিকভাবে পরিমাপ
কর ও ওজন দাও এবং লোকদের জিনিসপত্রে কোনরূপ ক্ষতি করো না, আর পৃথিবীতে
ফাসাদ করে বেড়াবে না। [ সুরা হুদ ১১:৮৫ ]
بَقِيَّةُ اللّهِ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ وَمَا أَنَاْ عَلَيْكُم بِحَفِيظٍ
আল্লাহ প্রদত্ত উদ্ধৃত্ত তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা ঈমানদার হও, আর আমি তো তোমাদের উপর সদা পর্যবেক্ষণকারী নই। [ সুরা হুদ ১১:৮৬ ]
قَالُواْ يَا شُعَيْبُ أَصَلاَتُكَ تَأْمُرُكَ أَن
نَّتْرُكَ مَا يَعْبُدُ آبَاؤُنَا أَوْ أَن نَّفْعَلَ فِي أَمْوَالِنَا مَا
نَشَاء إِنَّكَ لَأَنتَ الْحَلِيمُ الرَّشِيدُ
তারা বলল-হে শোয়ায়েব (আঃ) আপনার নামায কি আপনাকে
ইহাই শিক্ষা দেয় যে, আমরা ঐসব উপাস্যদেরকে পরিত্যাগ করব আমাদের বাপ-দাদারা
যাদের উপাসনা করত? অথবা আমাদের ধন-সম্পদে ইচ্ছামত যা কিছু করে থাকি, তা
ছেড়ে দেব? আপনি তো একজন খাস মহৎ ব্যক্তি ও সৎপথের পথিক। [ সুরা হুদ ১১:৮৭ ]
قَالَ يَا قَوْمِ أَرَأَيْتُمْ إِن كُنتُ عَلَىَ
بَيِّنَةٍ مِّن رَّبِّي وَرَزَقَنِي مِنْهُ رِزْقًا حَسَنًا وَمَا أُرِيدُ
أَنْ أُخَالِفَكُمْ إِلَى مَا أَنْهَاكُمْ عَنْهُ إِنْ أُرِيدُ إِلاَّ
الإِصْلاَحَ مَا اسْتَطَعْتُ وَمَا تَوْفِيقِي إِلاَّ بِاللّهِ عَلَيْهِ
تَوَكَّلْتُ وَإِلَيْهِ أُنِيبُ
শোয়ায়েব (আঃ) বললেন-হে দেশবাসী, তোমরা কি মনে কর!
আমি যদি আমার পরওয়ারদেগারের পক্ষ হতে সুস্পষ্ট দলীলের উপর কায়েম থাকি আর
তিনি যদি নিজের তরফ হতে আমাকে উত্তম রিযিক দান করে থাকেন, (তবে কি আমি তাঁর
হুকুম অমান্য করতে পারি?) আর আমি চাই না যে তোমাদেরকে যা ছাড়াতে চাই পরে
নিজেই সে কাজে লিপ্ত হব, আমি তো যথাসাধ্য শোধরাতে চাই। আল্লাহর মদদ দ্বারাই
কিন্তু কাজ হয়ে থাকে, আমি তাঁর উপরই নির্ভর করি এবং তাঁরই প্রতি ফিরে
যাই। [ সুরা হুদ ১১:৮৮ ]
وَيَا قَوْمِ لاَ يَجْرِمَنَّكُمْ شِقَاقِي أَن
يُصِيبَكُم مِّثْلُ مَا أَصَابَ قَوْمَ نُوحٍ أَوْ قَوْمَ هُودٍ أَوْ
قَوْمَ صَالِحٍ وَمَا قَوْمُ لُوطٍ مِّنكُم بِبَعِيدٍ
আর হে আমার জাতি! আমার সাথে জিদ করে তোমরা নূহ বা হুদ
অথবা সালেহ (আঃ) এর কওমের মত নিজেদের উপর আযাব ডেকে আনবে না। আর লূতের জাতি
তো তোমাদের থেকে খুব দূরে নয়। [ সুরা হুদ ১১:৮৯ ]
وَاسْتَغْفِرُواْ رَبَّكُمْ ثُمَّ تُوبُواْ إِلَيْهِ إِنَّ رَبِّي رَحِيمٌ وَدُودٌ
আর তোমাদের পালনকর্তার কাছে মার্জনা চাও এবং তাঁরই পানে ফিরে এসো নিশ্চয়ই আমার পরওয়ারদেগার খুবই মেহেরবান অতিস্নেহময়। [ সুরা হুদ ১১:৯০ ]
قَالُواْ يَا شُعَيْبُ مَا نَفْقَهُ كَثِيراً مِّمَّا
تَقُولُ وَإِنَّا لَنَرَاكَ فِينَا ضَعِيفًا وَلَوْلاَ رَهْطُكَ
لَرَجَمْنَاكَ وَمَا أَنتَ عَلَيْنَا بِعَزِيزٍ
তারা বলল-হে শোয়ায়েব (আঃ) আপনি যা বলেছেন তার অনেক
কথাই আমরা বুঝি নাই, আমারা তো আপনাকে আমাদের মধ্যে দূর্বল ব্যক্তি রূপে মনে
করি। আপনার ভাই বন্ধুরা না থাকলে আমরা আপনাকে প্রস্তরাঘাতে হত্যা করতাম।
আমাদের দৃষ্টিতে আপনি কোন মর্যাদাবান ব্যক্তি নন। [ সুরা হুদ ১১:৯১ ]
قَالَ يَا قَوْمِ أَرَهْطِي أَعَزُّ عَلَيْكُم مِّنَ
اللّهِ وَاتَّخَذْتُمُوهُ وَرَاءكُمْ ظِهْرِيًّا إِنَّ رَبِّي بِمَا
تَعْمَلُونَ مُحِيطٌ
শোয়ায়েব (আঃ) বলেন-হে আমার জাতি, আমার ভাই বন্ধুরা
কি তোমাদের কাছে আল্লাহর চেয়ে প্রভাবশালী? আর তোমরা তাকে বিস্মৃত হয়ে
পেছনে ফেলে রেখেছ, নিশ্চয় তোমাদের কার্যকলাপ আমার পালনকর্তার আয়ত্তে
রয়েছে। [ সুরা হুদ ১১:৯২ ]
وَيَا قَوْمِ اعْمَلُواْ عَلَى مَكَانَتِكُمْ إِنِّي
عَامِلٌ سَوْفَ تَعْلَمُونَ مَن يَأْتِيهِ عَذَابٌ يُخْزِيهِ وَمَنْ هُوَ
كَاذِبٌ وَارْتَقِبُواْ إِنِّي مَعَكُمْ رَقِيبٌ
আর হে আমার জাতি, তোমরা নিজ স্থানে কাজ করে যাও, আমিও
কাজ করছি, অচিরেই জানতে পারবে কার উপর অপমানকর আযাব আসে আর কে মিথ্যাবাদী?
আর তোমরাও অপেক্ষায় থাক, আমিও তোমাদের সাথে অপেক্ষায় রইলাম। [ সুরা হুদ ১১:৯৩ ]
وَلَمَّا جَاء أَمْرُنَا نَجَّيْنَا شُعَيْبًا
وَالَّذِينَ آمَنُواْ مَعَهُ بِرَحْمَةٍ مَّنَّا وَأَخَذَتِ الَّذِينَ
ظَلَمُواْ الصَّيْحَةُ فَأَصْبَحُواْ فِي دِيَارِهِمْ جَاثِمِينَ
আর আমার হুকুম যখন এল, আমি শোয়ায়েব (আঃ) ও তাঁর
সঙ্গী ঈমানদারগণকে নিজ রহমতে রক্ষা করি আর পাপিষ্ঠদের উপর বিকট গর্জন পতিত
হলো। ফলে ভোর না হতেই তারা নিজেদের ঘরে উপুড় হয়ে পড়ে রইল। [ সুরা হুদ ১১:৯৪ ]
كَأَن لَّمْ يَغْنَوْاْ فِيهَا أَلاَ بُعْدًا لِّمَدْيَنَ كَمَا بَعِدَتْ ثَمُودُ
যেন তারা সেখানে কখনো বসবাসই করে নাই। জেনে রাখ, সামুদের প্রতি অভিসম্পাতের মত মাদইয়ানবাসীর উপরেও অভিসম্পাত। [ সুরা হুদ ১১:৯৫ ]
وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا مُوسَى بِآيَاتِنَا وَسُلْطَانٍ مُّبِينٍ
আর আমি মূসা (আঃ) কে প্রেরণ করি আমার নিদর্শনাদি ও সুস্পষ্ট সনদসহ; [ সুরা হুদ ১১:৯৬ ]
إِلَى فِرْعَوْنَ وَمَلَئِهِ فَاتَّبَعُواْ أَمْرَ فِرْعَوْنَ وَمَا أَمْرُ فِرْعَوْنَ بِرَشِيدٍ
ফেরাউন ও তার পারিষদবর্গের কাছে, তবুও তারা ফেরাউনের হুকুমে চলতে থাকে, অথচ ফেরাউনের কোন কথা ন্যায় সঙ্গত ছিল না। [ সুরা হুদ ১১:৯৭ ]
يَقْدُمُ قَوْمَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَأَوْرَدَهُمُ النَّارَ وَبِئْسَ الْوِرْدُ الْمَوْرُودُ
কেয়ামতের দিন সে তার জাতির লোকদের আগে আগে থাকবে এবং
তাদেরকে জাহান্নামের আগুনে পৌঁছে দিবে। আর সেটা অতীব নিকৃষ্ট স্থান, সেখানে
তারা পৌঁছেছে।। [ সুরা হুদ ১১:৯৮ ]
وَأُتْبِعُواْ فِي هَـذِهِ لَعْنَةً وَيَوْمَ الْقِيَامَةِ بِئْسَ الرِّفْدُ الْمَرْفُودُ
আর এ জগতেও তাদের পেছনে লানত রয়েছে এবং কিয়ামতের দিনেও; অত্যন্ত জঘন্য প্রতিফল, যা তারা পেয়েছে। [ সুরা হুদ ১১:৯৯ ]
ذَلِكَ مِنْ أَنبَاء الْقُرَى نَقُصُّهُ عَلَيْكَ مِنْهَا قَآئِمٌ وَحَصِيدٌ
এ হচ্ছে কয়েকটি জনপদের সামান্য ইতিবৃত্ত, যা আমি
আপনাকে শোনাচ্ছি। তন্মধ্যে কোন কোনটি এখনও বর্তমান আছে আর কোন কোনটির শিকড়
কেটে দেয়া হয়েছে। [ সুরা হুদ ১১:১০০ ]
وَمَا ظَلَمْنَاهُمْ وَلَـكِن ظَلَمُواْ أَنفُسَهُمْ
فَمَا أَغْنَتْ عَنْهُمْ آلِهَتُهُمُ الَّتِي يَدْعُونَ مِن دُونِ اللّهِ
مِن شَيْءٍ لِّمَّا جَاء أَمْرُ رَبِّكَ وَمَا زَادُوهُمْ غَيْرَ تَتْبِيبٍ
আমি কিন্তু তাদের প্রতি জুলুম করি নাই বরং তারা
নিজেরাই নিজের উপর অবিচার করেছে। ফলে আল্লাহকে বাদ দিয়ে তারা যেসব মাবুদকে
ডাকতো আপনার পালনকর্তার হুকুম যখন এসে পড়ল, তখন কেউ কোন কাজে আসল না।
তারা শুধু বিপর্যয়ই বৃদ্ধি করল। [ সুরা হুদ ১১:১০১ ]
وَكَذَلِكَ أَخْذُ رَبِّكَ إِذَا أَخَذَ الْقُرَى وَهِيَ ظَالِمَةٌ إِنَّ أَخْذَهُ أَلِيمٌ شَدِيدٌ
আর তোমার পরওয়ারদেগার যখন কোন পাপপূর্ণ জনপদকে ধরেন, তখন এমনিভাবেই ধরে থাকেন। নিশ্চয় তাঁর পাকড়াও খুবই মারাত্নক, বড়ই কঠোর। [ সুরা হুদ ১১:১০২ ]
إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَةً لِّمَنْ خَافَ عَذَابَ الآخِرَةِ ذَلِكَ يَوْمٌ مَّجْمُوعٌ لَّهُ النَّاسُ وَذَلِكَ يَوْمٌ مَّشْهُودٌ
নিশ্চয় ইহার মধ্যে নিদর্শন রয়েছে এমন প্রতিটি
মানুষের জন্য যে আখেরাতের আযাবকে ভয় করে। উহা এমন একদিন, যে দিন সব
মানুষেই সমবেত হবে, সেদিনটি যে হাযিরের দিন। [ সুরা হুদ ১১:১০৩ ]
وَمَا نُؤَخِّرُهُ إِلاَّ لِأَجَلٍ مَّعْدُودٍ
আর আমি যে উহা বিলম্বিত করি, তা শুধু একটি ওয়াদার কারণে যা নির্ধারিত রয়েছে। [ সুরা হুদ ১১:১০৪ ]
يَوْمَ يَأْتِ لاَ تَكَلَّمُ نَفْسٌ إِلاَّ بِإِذْنِهِ فَمِنْهُمْ شَقِيٌّ وَسَعِيدٌ
যেদিন তা আসবে সেদিন আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কেউ কোন কথা বলতে পারে না। অতঃপর কিছু লোক হবে হতভাগ্য আর কিছু লোক সৌভাগ্যবান। [ সুরা হুদ ১১:১০৫ ]
فَأَمَّا الَّذِينَ شَقُواْ فَفِي النَّارِ لَهُمْ فِيهَا زَفِيرٌ وَشَهِيقٌ
অতএব যারা হতভাগ্য তারা দোযখে যাবে, সেখানে তারা আর্তনাদ ও চিৎকার করতে থাকবে। [ সুরা হুদ ১১:১০৬ ]
خَالِدِينَ فِيهَا مَا دَامَتِ السَّمَاوَاتُ وَالأَرْضُ إِلاَّ مَا شَاء رَبُّكَ إِنَّ رَبَّكَ فَعَّالٌ لِّمَا يُرِيدُ
তারা সেখানে চিরকাল থাকবে, যতদিন আসমান ও যমীন বর্তমান
থাকবে। তবে তোমার প্রতিপালক অন্য কিছু ইচ্ছা করলে ভিন্ন কথা। নিশ্চয়
তোমার পরওয়ারদেগার যা ইচ্ছা করতে পারেন। [ সুরা হুদ ১১:১০৭ ]
وَأَمَّا الَّذِينَ سُعِدُواْ فَفِي الْجَنَّةِ
خَالِدِينَ فِيهَا مَا دَامَتِ السَّمَاوَاتُ وَالأَرْضُ إِلاَّ مَا شَاء
رَبُّكَ عَطَاء غَيْرَ مَجْذُوذٍ
আর যারা সৌভাগ্যবান তারা বেহেশতের মাঝে, সেখানেই
চিরদিন থাকবে, যতদিন আসমান ও যমীন বর্তমান থাকবে। তবে তোমার প্রভু অন্য
কিছু ইচ্ছা করলে ভিন্ন কথা। এ দানের ধারাবাহিকতা কখনো ছিন্ন হওয়ার নয়। [ সুরা হুদ ১১:১০৮ ]
فَلاَ تَكُ فِي مِرْيَةٍ مِّمَّا يَعْبُدُ هَـؤُلاء
مَا يَعْبُدُونَ إِلاَّ كَمَا يَعْبُدُ آبَاؤُهُم مِّن قَبْلُ وَإِنَّا
لَمُوَفُّوهُمْ نَصِيبَهُمْ غَيْرَ مَنقُوصٍ
অতএব, তারা যেসবের উপাসনা করে তুমি সে ব্যাপারে কোনরূপ
ধোঁকায় পড়বে না। তাদের পূর্ববর্তী বাপ-দাদারা যেমন পূজা উপাসনা করত,
এরাও তেমন করছে। আর নিশ্চয় আমি তাদেরকে আযাবের ভাগ কিছু মাত্রও কম না করেই
পুরোপুরি দান করবো। [ সুরা হুদ ১১:১০৯ ]
وَلَقَدْ آتَيْنَا مُوسَى الْكِتَابَ فَاخْتُلِفَ
فِيهِ وَلَوْلاَ كَلِمَةٌ سَبَقَتْ مِن رَّبِّكَ لَقُضِيَ بَيْنَهُمْ
وَإِنَّهُمْ لَفِي شَكٍّ مِّنْهُ مُرِيبٍ
আর আমি মূসা (আঃ)-কে অবশ্যই কিতাব দিয়েছিলাম অতঃপর
তাতে বিরোধ সৃষ্টি হল; বলাবাহুল্য তোমার পালনকর্তার পক্ষ হতে, একটি কথা যদি
আগেই বলা না হত, তাহলে তাদের মধ্যে চুড়ান্ত ফয়সালা হয়ে যেত তারা এ
ব্যাপারে এমনই সন্দেহ প্রবণ যে, কিছুতেই নিশ্চিত হতে পারছে না। [ সুরা হুদ ১১:১১০ ]
وَإِنَّ كُـلاًّ لَّمَّا لَيُوَفِّيَنَّهُمْ رَبُّكَ أَعْمَالَهُمْ إِنَّهُ بِمَا يَعْمَلُونَ خَبِيرٌ
আর যত লোকই হোক না কেন, যখন সময় হবে, তোমার প্রভু
তাদের সকলেরই আমলের প্রতিদান পুরোপুরি দান করবেন। নিশ্চয় তিনি তাদের
যাবতীয় কার্যকলাপের খবর রাখেন। [ সুরা হুদ ১১:১১১ ]
فَاسْتَقِمْ كَمَا أُمِرْتَ وَمَن تَابَ مَعَكَ وَلاَ تَطْغَوْاْ إِنَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ
অতএব, তুমি এবং তোমার সাথে যারা তওবা করেছে সবাই সোজা
পথে চলে যাও-যেমন তোমায় হুকুম দেয়া হয়েছে এবং সীমা লঙ্ঘন করবে না, তোমরা
যা কিছু করছ, নিশ্চয় তিনি তার প্রতি দৃষ্টি রাখেন। [ সুরা হুদ ১১:১১২ ]
وَلاَ تَرْكَنُواْ إِلَى الَّذِينَ ظَلَمُواْ
فَتَمَسَّكُمُ النَّارُ وَمَا لَكُم مِّن دُونِ اللّهِ مِنْ أَوْلِيَاء
ثُمَّ لاَ تُنصَرُونَ
আর পাপিষ্ঠদের প্রতি ঝুঁকবে না। নতুবা তোমাদেরকেও
আগুনে ধরবে। আর আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের কোন বন্ধু নাই। অতএব কোথাও সাহায্য
পাবে না। [ সুরা হুদ ১১:১১৩ ]
وَأَقِمِ الصَّلاَةَ طَرَفَيِ النَّهَارِ وَزُلَفًا
مِّنَ اللَّيْلِ إِنَّ الْحَسَنَاتِ يُذْهِبْنَ السَّـيِّئَاتِ ذَلِكَ
ذِكْرَى لِلذَّاكِرِينَ
আর দিনের দুই প্রান্তেই নামায ঠিক রাখবে, এবং রাতের
প্রান্তভাগে পূর্ণ কাজ অবশ্যই পাপ দূর করে দেয়, যারা স্মরণ রাখে তাদের
জন্য এটি এক মহা স্মারক। [ সুরা হুদ ১১:১১৪ ]
وَاصْبِرْ فَإِنَّ اللّهَ لاَ يُضِيعُ أَجْرَ الْمُحْسِنِينَ
আর ধৈর্য্যধারণ কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ পূণ্যবানদের প্রতিদান বিনষ্ট করেন না। [ সুরা হুদ ১১:১১৫ ]
فَلَوْلاَ كَانَ مِنَ الْقُرُونِ مِن قَبْلِكُمْ
أُوْلُواْ بَقِيَّةٍ يَنْهَوْنَ عَنِ الْفَسَادِ فِي الأَرْضِ إِلاَّ
قَلِيلاً مِّمَّنْ أَنجَيْنَا مِنْهُمْ وَاتَّبَعَ الَّذِينَ ظَلَمُواْ مَا
أُتْرِفُواْ فِيهِ وَكَانُواْ مُجْرِمِينَ
কাজেই, তোমাদের পূর্ববতী জাতি গুলির মধ্যে এমন
সৎকর্মশীল কেন রইল না, যারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করতে বাধা দিত; তবে
মুষ্টিমেয় লোক ছিল যাদেরকে আমি তাদের মধ্য হতে রক্ষা করেছি। আর পাপিষ্ঠরা
তো ভোগ বিলাসে মত্ত ছিল যার সামগ্রী তাদেরকে যথেষ্ট দেয়া হয়েছিল। আসলে
তারা ছিল মহা অপরাধী। [ সুরা হুদ ১১:১১৬ ]
وَمَا كَانَ رَبُّكَ لِيُهْلِكَ الْقُرَى بِظُلْمٍ وَأَهْلُهَا مُصْلِحُونَ
আর তোমার পালনকর্তা এমন নন যে, জনবসতিগুলোকে অন্যায়ভাবে ধ্বংস করে দেবেন, সেখানকার লোকেরা সৎকর্মশীল হওয়া সত্ত্বেও। [ সুরা হুদ ১১:১১৭ ]
وَلَوْ شَاء رَبُّكَ لَجَعَلَ النَّاسَ أُمَّةً وَاحِدَةً وَلاَ يَزَالُونَ مُخْتَلِفِينَ
আর তোমার পালনকর্তা যদি ইচ্ছা করতেন, তবে অবশ্যই সব
মানুষকে একই জাতিসত্তায় পরিনত করতে পারতেন আর তারা বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত
হতো না। [ সুরা হুদ ১১:১১৮ ]
إِلاَّ مَن رَّحِمَ رَبُّكَ وَلِذَلِكَ خَلَقَهُمْ
وَتَمَّتْ كَلِمَةُ رَبِّكَ لأَمْلأنَّ جَهَنَّمَ مِنَ الْجِنَّةِ
وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ
তোমার পালনকর্তা যাদের উপর রহমত করেছেন, তারা ব্যতীত
সবাই চিরদিন মতভেদ করতেই থাকবে এবং এজন্যই তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। আর তোমার
আল্লাহর কথাই পূর্ণ হল যে, অবশ্যই আমি জাহান্নামকে জ্বিন ও মানুষ দ্বারা
একযোগে ভর্তি করব। [ সুরা হুদ ১১:১১৯ ]
وَكُـلاًّ نَّقُصُّ عَلَيْكَ مِنْ أَنبَاء الرُّسُلِ
مَا نُثَبِّتُ بِهِ فُؤَادَكَ وَجَاءكَ فِي هَـذِهِ الْحَقُّ وَمَوْعِظَةٌ
وَذِكْرَى لِلْمُؤْمِنِينَ
আর আমি রসূলগণের সব বৃত্তান্তই তোমাকে বলছি, যদ্দ্বারা
তোমার অন্তরকে মজবুত করছি। আর এভাবে তোমার নিকট মহাসত্য এবং ঈমানদারদের
জন্য নসীহত ও স্বরণীয় বিষয়বস্তু এসেছে। [ সুরা হুদ ১১:১২০ ]
وَقُل لِّلَّذِينَ لاَ يُؤْمِنُونَ اعْمَلُواْ عَلَى مَكَانَتِكُمْ إِنَّا عَامِلُونَ
আর যারা ঈমান আনে না, তাদেরকে বলে দাও যে, তোমরা নিজ নিজ অবস্থায় কাজ করে যাও আমরাও কাজ করে যাই। [ সুরা হুদ ১১:১২১ ]
وَانتَظِرُوا إِنَّا مُنتَظِرُونَ
এবং তোমরাও অপেক্ষা করে থাক, আমরাও অপেক্ষায় রইলাম। [ সুরা হুদ ১১:১২২ ]
وَلِلّهِ غَيْبُ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ وَإِلَيْهِ
يُرْجَعُ الأَمْرُ كُلُّهُ فَاعْبُدْهُ وَتَوَكَّلْ عَلَيْهِ وَمَا رَبُّكَ
بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُونَ
আর আল্লাহর কাছেই আছে আসমান ও যমীনের গোপন তথ্য; আর
সকল কাজের প্রত্যাবর্তন তাঁরই দিকে; অতএব, তাঁরই বন্দেগী কর এবং তাঁর উপর
ভরসা রাখ, আর তোমাদের কার্যকলাপ সম্বন্ধে তোমার পালনকর্তা কিন্তু বে-খবর
নন। [ সুরা হুদ ১১:১২৩ ]
0 মন্তব্যসমূহ