মসজিদে হারানো বস্তু খোজা এবং মৃত্যু সংবাদ প্রচার।


মসজিদে হারানো বিজ্ঞপ্তি ও মৃত্যু সংবাদ প্রচার করা
(১৩) মসজিদে হারানো বিজ্ঞপ্তি ও মৃত্যু সংবাদ প্রচার করা :
এটা সম্পূর্ণ শরী‘আত বিরোধী এবং মসজিদের মর্যাদার পরিপন্থী।
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ  مَنْ سَمِعَ رَجُلاً يَنْشُدُ ضَالَّةً فِى الْمَسْجِدِ فَلْيَقُلْ لاَ رَدَّهَا اللهُ عَلَيْكَ فَإِنَّ الْمَسَاجِدَ لَمْ تُبْنَ لِهَذَا.
আবু হুরায়রাহ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি অন্য কাউকে মসজিদে হারানো জিনিষ খোঁজ করতে শুনবে, সে যেন বলে, আল্লাহ যেন তোমাকে ফেরত না দেন। কারণ মসজিদ সমূহ এ জন্য তৈরি করা হয়নি।[1]
মৃত্যু সংবাদ প্রচার করা জাহেলী আদর্শ। এ ব্যাপারে রাসূল (ছাঃ) কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। হুযায়ফাহ (রাঃ) বলেন, يَنْهَى عَنِ النَّعْيِ রাসূল (ছাঃ) মৃত্যু সংবাদ প্রচার করতে নিষেধ করেছেন।[2] মৃত্যু সংবাদ প্রচারের নামে শোক প্রকাশ করে কোন লাভ হয় না। শুধু লোক দেখানোই হয়। তার প্রমাণ হল, সব জানাযাতে লোকের সংখ্যা এক রকম হয় না। কারো জানাযায় হাযার হাযার লোক হয়, আবার কারো জানাযায় একশ’ লোকও জুটে না। অথচ সব মাইয়েতের জন্যই মাইকিং করা  হয়। সুতরাং এতে কোন ফায়েদা নেই। এটা মূলতঃ ব্যক্তির প্রসিদ্ধি ও গুণের কারণ। তাছাড়া শুভাকাঙ্খী হলে এমনিতেই সে মৃত্যু সংবাদ শুনতে পাবে, মাইকিং করে জানানো লাগবে না।
উল্লেখ্য যে, মারা যাওয়ার পূর্বে প্রত্যেক ব্যক্তির উচিৎ তার উত্তরসূরী ও আত্মীয়-স্বজনকে অছিয়ত করে যাওয়া, যেন তার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিদ‘আতী কর্মকান্ড অনুষ্ঠিত না হয়। বিশেষ করে বিলাপ করা ও বিভিন্ন কথার মাধ্যমে শোক প্রকাশ করা। কারণ সাবধান করে না গেলে বা এর প্রতি সন্তুষ্ট থাকলে এ জন্য তাকে কবরে শাস্তি ভোগ করতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন,
أَلاَ تَسْمَعُوْنَ إِنَّ اللهَ لاَ يُعَذِّبُ بِدَمْعِ الْعَيْنِ وَلاَ بِحُزْنِ الْقَلْبِ وَلَكِنْ يُعَذِّبُ بِهَذَا وَأَشَارَ إِلَى لِسَانِهِ أَوْ يَرْحَمُ وَإِنَّ الْمَيِّتَ يُعَذَّبُ بِبُكَاءِ أَهْلِهِ عَلَيْهِ وَكَانَ عُمَرُ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ يَضْرِبُ فِيْهِ بِالْعَصَا وَيَرْمِىْ بِالْحِجَارَةِ وَيَحْثِى بِالتُّرَابِ.
‘তোমরা কি শুননি, নিশ্চয়ই আল্লাহ চোখের কান্না ও অন্তরের চিন্তার কারণে শাস্তি দিবেন না; বরং তিনি শাস্তি দিবেন এর কারণে। অতঃপর তিনি তার জিহবার দিকে ইঙ্গিত করলেন। অথবা তার উপর রহম করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ মাইয়েতকে তার পরিবারের কান্নার কারণে শাস্তি দেন। ওমর (রাঃ) এজন্য লাঠিপেটা করতেন, পাথর মারতেন এবং মাটি নিক্ষেপ করতেন।[3]
[1]. ছহীহ মুসলিম হা/১২৮৮; মিশকাত হা/৭০৬; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৬৫৪, ২/২১৮ পৃঃ। [2]. তিরমিযী হা/৯৮৬, ১/১৯২ পৃঃ; ইবনু মাজাহ হা/১৪৭৬, পৃঃ ১০৬, ‘জানাযা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১৪, সনদ হাসান। [3]. ছহীহ বুখারী হা/১৩০৪, ১/১৭৪ পৃঃ, (ইফাবা হা/১২২৬, ২/৩৮৭ পৃঃ); ছহীহ মুসলিম হা/২১৭৬; মিশকাত হা/১৭২৪, পৃঃ ১৫০; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/১৬৩২, ৪/৮৪, ‘জানাজা’ অধ্যায়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ