সন্তানের আকৃতি, সন্তানের আকৃতি মা এবং বাবার মত হওয়ার কারন।

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। উম্মু সুলাইম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট জিজ্ঞেস করেন, পুরুষের ন্যায় কোন নারীর স্বপ্নদোষ হলে সে কী করবে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যদি তার স্বপ্নদোষ হয় এবং তার বীর্যপাত হয়, তবে তাকে গোসল করতে হবে। উম্মু সালামাহ (রাঃ) বলেন, হে আললাহর রাসূল! তাই কি হয়? তিনি বলেনঃ হ্যাঁ। পুরুষের বীর্য গাঢ় সাদা এবং স্ত্রীলোকের বীর্য পাতলা হলদে রংবিশিষ্ট। সুতরাং এদের মধ্যে যার বীর্য আগে স্খলিত হয়, সন্তান তার সদৃশ হয়।[1]
উম্মু সালামাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল ﷺ-এর নিকট উম্মু সুলায়মান (রাযি.) এসে বললেনঃ হে আল্লাহর রসূল! আল্লাহ্ হক কথা প্রকাশ করতে লজ্জাবোধ করেন না। মহিলাদের স্বপ্নদোষ হলে কি গোসল করতে হবে? নাবী ﷺ বললেনঃ ‘হ্যাঁ, যখন সে বীর্য দেখতে পাবে।’ তখন উম্মু সালমা (লজ্জায়) তার মুখ ঢেকে নিয়ে বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! মহিলাদেরও স্বপ্নদোষ হয় কি?’ তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ, তোমার ডান হাতে মাটি পড়ুক! (তা না হলে) তাদের সন্তান তাদের আকৃতি পায় কিভাবে?[2]
মুহাম্মদ ইবনু সালাম (রহঃ)... উম্মে সালমা (রাঃ) থেকে বর্ণত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে উম্মে সুলায়ম (রাঃ) এসে বললেনঃ ইয়া রাসুল্লাহ ! আল্লাহ হক কথা প্রকাশ করতে লজ্জাবোধ করেন না। স্ত্রীলোকের স্বপ্নদোষ হলে কি গোসল করতে হবে? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ‘হ্যাঁ, যখন সে বীর্য দেখতে পাবে। ’ তখন উম্মে সালমা (লজ্জায়) তাঁর মুখ ঢেকে নিয়ে বললেন, ইয়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ! স্ত্রীলোকের স্বপ্নদোষ হয় কি?’ তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ, তোমার ডান হাতে মাটি পড়ুক !* (তা না হলে) তাঁর সন্তান তাঁর আকৃতি পায় কিরূপে?’[3]
কাসির ইবনু উবায়দ (রহঃ) উরওয়া (রহঃ) থেকে বর্ণিত। আয়িশা (রাঃ) তাঁকে সংবাদ দিলেন যে, উম্মু সুলায়মান রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে কথা বলেছিলেন তখন আয়িশা (রাঃ) উপবিষ্ট ছিলেন। উম্মে সুলায়মান বলেঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ! আল্লাহ সত্যের ব্যাপারে লজ্জা করেন না, আমাকে বলুন, কোন নারী যদি স্বপ্নে এমন কিছু দেখে যা পুরুষ দেখে থাকে, এতে কি তারও গোসল করতে হবে? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ হ্যাঁ। আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ আমি তাঁকে বললাম, ধিক তোমায়! নারীও কি তা দেখে? তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার দিকে লক্ষ্য করে বললেনঃ তোমার হাত ধুলো-মলিন হোক, তা না হলে সন্তান মাতার মত হয় কি করে?২
২- অর্থাৎ নারীরও পানি আছে বলেই সন্তান মা এর চেহারা পায়। আর তারও যখন পানি আছে, তখন স্বপ্নদোষ তো হতেই পারে। [4]
শু’য়াইব ইবনু ইউনুস (রহঃ) উম্মে সালাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ জনৈক মহিলা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বললেনঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আল্লাহ সত্যের ব্যাপারে লজ্জা করেন না, আমাকে বলুন, কোন নারী যদি স্বপ্নে এমন কিছু দেখে যা পুরুষ দেখে থাকে, এতে কি তারও গোসল ওয়াজিব হয়? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, যখন সে বীর্য দেখবে। এতে উম্মু সালাম হেসে দিলেন, তিনি বললেনঃ নারীরও কি স্বপ্নদোষ হয়? তখন ইয়া রাসুলুল্লাহ! আল্লাহ সত্যের ব্যাপারে লজ্জা করেন না, আমাকে বলুন, কোন নারী যদি স্বপ্নে এমন কিছু দেখে যা পুরুষ দেখে থাকে, এতে কি তারও গোসল করতে হবে? বললেনঃ তা না হলে সন্তান মায়ের সদৃশ হয় কিরূপে?[5]
ইবরাহীম ইবনু মূসা আর রায়ী, সাহল ইবনু উসমান ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) ..... আয়িশাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। এক মহিলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলল, মেয়েলোকের যখন স্বপ্নদোষ হবে এবং সে বীর্যরস দেখতে পাবে তখন কি সে গোসল করবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ, এরপর আয়িশাহ (রাযিঃ) মহিলাটিকে বললেন, তোমার উভয় হাত ধূলিময় হোক এবং তাতে অস্ত্রের খোচা লাগুক। তিনি ['আয়িশাহ্ (রাযিঃ)] বলেন, তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ছেড়ে দাও ওকে (ভৎসনা করো না) সন্তান মা-বাবার সদৃশের কারণেই হয়ে থাকে। যখন স্ত্রীর বীর্য পুরুষের বীর্যের আগে জরায়ুতে প্রবেশ করে তখন সন্তানের আকৃতি তার মামাদের মতই হয়। আর যখন পুরুষের বীর্য মেয়েলোকের বীর্যের উপর প্রাধান্য লাভ করে তখন তার আকৃতি চাচাদের মতই হয়। [6]
[1] সুনানে ইবনে মাজাহ ৬০১
তাখরীজ কুতুবুত সিত্তাহ: মুসলিম ৩১০-১১, নাসায়ী ১৯৫, ২০০; আহমাদ ১২৬৪২, ১৩৬৯৮; দারিমী ৭৬৪। তাহক্বীক্ব আলবানী: সহীহ। তাখরীজ আলবানী: সহীহাহ ১৩৪২,
[2] (বুখারী পর্ব ৩ঃ /৫০ হাঃ ১৩০,  মুসলিম ৩/৭, হাঃ ৩১৩)
[3] সহীহ বুখারী (ইফাঃ), ১৩২
[4]সূনান নাসাঈ, ১৯৬
সহিহ, সহিহ আবূ দাউদ হাঃ ২৩৫, মুসলিম (ইসলামিক সেন্টার) হাঃ ৬১৬, ৬১৭
[5] সূনান নাসাঈ, ১৯৭
সহিহ, ইবনু মাজাহ হাঃ ৬০০, বুখারী হাঃ ১৩০, ৩৩২৮, মুসলিম (ইসলামিক সেন্টার) হাঃ ৬১৯
[6]( সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী) ৬০২ , ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৬০৬, ইসলামিক সেন্টারঃ  ৬২২)

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ