بِسْمِ
اللهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيمِ الْحَمْدُ لِلّهِ الَّذِي خَلَقَ
السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضَ وَجَعَلَ الظُّلُمَاتِ وَالنُّورَ ثُمَّ
الَّذِينَ كَفَرُواْ بِرَبِّهِم يَعْدِلُونَ
সর্ববিধ প্রশংসা আল্লাহরই জন্য যিনি নভোমন্ডল ও
ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছেন এবং অন্ধকার ও আলোর উদ্ভব করেছেন। তথাপি কাফেররা
স্বীয় পালনকর্তার সাথে অন্যান্যকে সমতুল্য স্থির করে। [ সুরা আন’য়াম ৬:১ ]
هُوَ الَّذِي خَلَقَكُم مِّن طِينٍ ثُمَّ قَضَى أَجَلاً وَأَجَلٌ مُّسمًّى عِندَهُ ثُمَّ أَنتُمْ تَمْتَرُونَ
তিনিই তোমাদেরকে মাটির দ্বারা সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর
নির্দিষ্টকাল নির্ধারণ করেছেন। আর অপর নির্দিষ্টকাল আল্লাহর কাছে আছে।
তথাপি তোমরা সন্দেহ কর। [ সুরা আন’য়াম ৬:২ ]
وَهُوَ اللّهُ فِي السَّمَاوَاتِ وَفِي الأَرْضِ يَعْلَمُ سِرَّكُمْ وَجَهرَكُمْ وَيَعْلَمُ مَا تَكْسِبُونَ
তিনিই আল্লাহ নভোমন্ডলে এবং ভূমন্ডলে। তিনি তোমাদের গোপন ও প্রকাশ্য বিষয় জানেন এবং তোমরা যা কর তাও অবগত। [ সুরা আন’য়াম ৬:৩ ]
وَمَا تَأْتِيهِم مِّنْ آيَةٍ مِّنْ آيَاتِ رَبِّهِمْ إِلاَّ كَانُواْ عَنْهَا مُعْرِضِينَ
তাদের কাছে তাদের প্রতিপালকের নিদর্শনাবলী থেকে কোন নিদর্শন আসেনি; যার প্রতি তারা বিমুখ হয় না। [ সুরা আন’য়াম ৬:৪ ]
فَقَدْ كَذَّبُواْ بِالْحَقِّ لَمَّا جَاءهُمْ فَسَوْفَ يَأْتِيهِمْ أَنبَاء مَا كَانُواْ بِهِ يَسْتَهْزِئُونَ
অতএব, অবশ্য তারা সত্যকে মিথ্যা বলেছে যখন তা তাদের
কাছে এসেছে। বস্তুতঃ অচিরেই তাদের কাছে ঐ বিষয়ের সংবাদ আসবে, যার সাথে
তারা উপহাস করত। [ সুরা আন’য়াম ৬:৫ ]
أَلَمْ يَرَوْاْ كَمْ أَهْلَكْنَا مِن قَبْلِهِم مِّن
قَرْنٍ مَّكَّنَّاهُمْ فِي الأَرْضِ مَا لَمْ نُمَكِّن لَّكُمْ
وَأَرْسَلْنَا السَّمَاء عَلَيْهِم مِّدْرَارًا وَجَعَلْنَا الأَنْهَارَ
تَجْرِي مِن تَحْتِهِمْ فَأَهْلَكْنَاهُم بِذُنُوبِهِمْ وَأَنْشَأْنَا مِن
بَعْدِهِمْ قَرْنًا آخَرِينَ
তারা কি দেখেনি যে, আমি তাদের পুর্বে কত সম্প্রদায়কে
ধ্বংস করে দিয়েছি, যাদেরকে আমি পৃথিবীতে এমন প্রতিষ্ঠা দিয়েছিলাম, যা
তোমাদেরকে দেইনি। আমি আকাশকে তাদের উপর অনবরত বৃষ্টি বর্ষণ করতে দিয়েছি
এবং তাদের তলদেশে নদী সৃষ্টি করে দিয়েছি, অতঃপর আমি তাদেরকে তাদের পাপের
কারণে ধ্বংস করে দিয়েছি এবং তাদের পরে অন্য সম্প্রদায় সৃষ্টি করেছি। [ সুরা আন’য়াম ৬:৬ ]
وَلَوْ نَزَّلْنَا عَلَيْكَ كِتَابًا فِي قِرْطَاسٍ
فَلَمَسُوهُ بِأَيْدِيهِمْ لَقَالَ الَّذِينَ كَفَرُواْ إِنْ هَـذَا إِلاَّ
سِحْرٌ مُّبِينٌ
যদি আমি কাগজে লিখিত কোন বিষয় তাদের প্রতি নাযিল
করতাম, অতঃপর তারা তা সহস্তে স্পর্শ করত, তবুও অবিশ্বাসীরা একথাই বলত যে,
এটা প্রকাশ্য জাদু বৈ কিছু নয়। [ সুরা আন’য়াম ৬:৭ ]
وَقَالُواْ لَوْلا أُنزِلَ عَلَيْهِ مَلَكٌ وَلَوْ أَنزَلْنَا مَلَكًا لَّقُضِيَ الأمْرُ ثُمَّ لاَ يُنظَرُونَ
তারা আরও বলে যে, তাঁর কাছে কোন ফেরেশতা কেন প্রেরণ
করা হল না ? যদি আমি কোন ফেরেশতা প্রেরণ করতাম, তবে গোটা ব্যাপারটাই শেষ
হয়ে যেত। অতঃপর তাদেরকে সামান্যও অবকাশ দেওয়া হতনা। [ সুরা আন’য়াম ৬:৮ ]
وَلَوْ جَعَلْنَاهُ مَلَكًا لَّجَعَلْنَاهُ رَجُلاً وَلَلَبَسْنَا عَلَيْهِم مَّا يَلْبِسُونَ
যদি আমি কোন ফেরেশতাকে রসূল করে পাঠাতাম, তবে সে মানুষের আকারেই হত। এতেও ঐ সন্দেহই করত, যা এখন করছে। [ সুরা আন’য়াম ৬:৯ ]
وَلَقَدِ اسْتُهْزِئَ بِرُسُلٍ مِّن قَبْلِكَ فَحَاقَ بِالَّذِينَ سَخِرُواْ مِنْهُم مَّا كَانُواْ بِهِ يَسْتَهْزِئُونَ
নিশ্চয়ই আপনার পূর্ববর্তী পয়গম্বরগণের সাথেও উপহাস
করা হয়েছে। অতঃপর যারা তাঁদের সাথে উপহাস করেছিল, তাদেরকে ঐ শাস্তি বেষ্টন
করে নিল, যা নিয়ে তারা উপহাস করত। [ সুরা আন’য়াম ৬:১০ ]
قُلْ سِيرُواْ فِي الأَرْضِ ثُمَّ انظُرُواْ كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُكَذِّبِينَ
বলে দিনঃ তোমরা পৃথিবীতে পরিভ্রমণ কর, অতপর দেখ, মিথ্যারোপ কারীদের পরিণাম কি হয়েছে? [ সুরা আন’য়াম ৬:১১ ]
قُل لِّمَن مَّا فِي السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ قُل
لِلّهِ كَتَبَ عَلَى نَفْسِهِ الرَّحْمَةَ لَيَجْمَعَنَّكُمْ إِلَى يَوْمِ
الْقِيَامَةِ لاَ رَيْبَ فِيهِ الَّذِينَ خَسِرُواْ أَنفُسَهُمْ فَهُمْ لاَ
يُؤْمِنُونَ
জিজ্ঞেস করুন, নভোমন্ডল ও ভুমন্ডলে যা আছে, তার মালিক
কে? বলে দিনঃআল্লাহ। তিনি অনুকম্পা প্রদর্শনকে নিজ দায়িত্বে লিপিবদ্ধ করে
নিয়েছেন। তিনি অবশ্যই তোমাদেরকে কেয়ামতের দিন একত্রিত করবেন। এর আগমনে
কোন সন্দেহ নেই। যারা নিজেদের কে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, তারাই বিশ্বাস স্থাপন
করে না। [ সুরা আন’য়াম ৬:১২ ]
وَلَهُ مَا سَكَنَ فِي اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
যা কিছু রাত ও দিনে স্থিতি লাভ করে, তাঁরই। তিনিই শ্রোতা, মহাজ্ঞানী। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৩ ]
قُلْ أَغَيْرَ اللّهِ أَتَّخِذُ وَلِيًّا فَاطِرِ
السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ وَهُوَ يُطْعِمُ وَلاَ يُطْعَمُ قُلْ إِنِّيَ
أُمِرْتُ أَنْ أَكُونَ أَوَّلَ مَنْ أَسْلَمَ وَلاَ تَكُونَنَّ مِنَ
الْمُشْرِكَينَ
আপনি বলে দিনঃ আমি কি আল্লাহ ব্যতীত-যিনি নভোমন্ডল ও
ভুমন্ডলের স্রষ্টা এবং যিনি সবাইকে আহার্য দানকরেন ও তাঁকে কেউ আহার্য দান
করে না অপরকে সাহায্যকারী স্থির করব? আপনি বলে দিনঃ আমি আদিষ্ট হয়েছি যে,
সর্বাগ্রে আমিই আজ্ঞাবহ হব। আপনি কদাচ অংশীবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হবেন না। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৪ ]
قُلْ إِنِّيَ أَخَافُ إِنْ عَصَيْتُ رَبِّي عَذَابَ يَوْمٍ عَظِيمٍ
আপনি বলুন, আমি আমার প্রতিপালকের অবাধ্য হতে ভয় পাই কেননা, আমি একটি মহাদিবসের শাস্তিকে ভয় করি। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৫ ]
مَّن يُصْرَفْ عَنْهُ يَوْمَئِذٍ فَقَدْ رَحِمَهُ وَذَلِكَ الْفَوْزُ الْمُبِينُ
যার কাছ থেকে ঐদিন এ শাস্তি সরিয়ে নেওয়া হবে, তার প্রতি আল্লাহর অনুকম্পা হবে। এটাই বিরাট সাফল্য। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৬ ]
وَإِن يَمْسَسْكَ اللّهُ بِضُرٍّ فَلاَ كَاشِفَ لَهُ إِلاَّ هُوَ وَإِن يَمْسَسْكَ بِخَيْرٍ فَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدُيرٌ
আর যদি আল্লাহ তোমাকে কোন কষ্ট দেন, তবে তিনি ব্যতীত
তা অপসারণকারী কেউ নেই। পক্ষান্তরে যদি তোমার মঙ্গল করেন, তবে তিনি সবকিছুর
উপর ক্ষমতাবান। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৭ ]
وَهُوَ الْقَاهِرُ فَوْقَ عِبَادِهِ وَهُوَ الْحَكِيمُ الْخَبِيرُ
তিনিই পরাক্রান্ত স্বীয় বান্দাদের উপর। তিনিই জ্ঞানময়, সর্বজ্ঞ। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৮ ]
قُلْ أَيُّ شَيْءٍ أَكْبَرُ شَهَادةً قُلِ اللّهِ
شَهِيدٌ بِيْنِي وَبَيْنَكُمْ وَأُوحِيَ إِلَيَّ هَذَا الْقُرْآنُ
لأُنذِرَكُم بِهِ وَمَن بَلَغَ أَئِنَّكُمْ لَتَشْهَدُونَ أَنَّ مَعَ
اللّهِ آلِهَةً أُخْرَى قُل لاَّ أَشْهَدُ قُلْ إِنَّمَا هُوَ إِلَـهٌ
وَاحِدٌ وَإِنَّنِي بَرِيءٌ مِّمَّا تُشْرِكُونَ
আপনি জিজ্ঞেস করুনঃ সর্ববৃহৎ সাক্ষ্যদাতা কে ? বলে
দিনঃ আল্লাহ আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী। আমার প্রতি এ কোরআন অবর্তীর্ণ
হয়েছে-যাতে আমি তোমাদেরকে এবং যাদের কাছে এ কোরআন পৌঁছে সবাইকে ভীতি
প্রদর্শন করি। তোমরা কি সাক্ষ্য দাও যে, আল্লাহর সাথে অন্যান্য উপাস্যও
রয়েছে ? আপনি বলে দিনঃ আমি এরূপ সাক্ষ্য দেব না। বলে দিনঃ তিনিই একমাত্র
উপাস্য; আমি অবশ্যই তোমাদের শিরক থেকে মুক্ত। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৯ ]
الَّذِينَ آتَيْنَاهُمُ الْكِتَابَ يَعْرِفُونَهُ
كَمَا يَعْرِفُونَ أَبْنَاءهُمُ الَّذِينَ خَسِرُواْ أَنفُسَهُمْ فَهُمْ
لاَ يُؤْمِنُونَ
যাদেরকে আমি কিতাব দান করেছি, তারা তাকে চিনে, যেমন
তাদের সন্তানদেরকে চিনে। যারা নিজেদেরকে ক্ষতির মধ্যে ফেলেছে, তারা বিশ্বাস
স্থাপন করবে না। [ সুরা আন’য়াম ৬:২০ ]
وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرَى عَلَى اللّهِ كَذِبًا أَوْ كَذَّبَ بِآيَاتِهِ إِنَّهُ لاَ يُفْلِحُ الظَّالِمُونَ
আর যে, আল্লাহর প্রতি অপবাদ আরোপ করে অথবা তাঁর
নিদর্শনাবলীকে মিথ্যা বলে, তার চাইতে বড় জালেম কে? নিশ্চয় জালেমরা সফলকাম
হবে না। [ সুরা আন’য়াম ৬:২১ ]
وَيَوْمَ نَحْشُرُهُمْ جَمِيعًا ثُمَّ نَقُولُ لِلَّذِينَ أَشْرَكُواْ أَيْنَ شُرَكَآؤُكُمُ الَّذِينَ كُنتُمْ تَزْعُمُونَ
আর যেদিন আমি তাদের সবাইকে একত্রিত করব, অতঃপর যারা শিরক করেছিল, তাদের বলবঃ যাদেরকে তোমরা অংশীদার বলে ধারণা করতে, তারা কোথায়? [ সুরা আন’য়াম ৬:২২ ]
ثُمَّ لَمْ تَكُن فِتْنَتُهُمْ إِلاَّ أَن قَالُواْ وَاللّهِ رَبِّنَا مَا كُنَّا مُشْرِكِينَ
অতঃপর তাদের কোন অপরিচ্ছন্নতা থাকবে না; তবে এটুকুই যে তারা বলবে আমাদের প্রতিপালক আল্লাহর কসম, আমরা মুশরিক ছিলাম না। [ সুরা আন’য়াম ৬:২৩ ]
انظُرْ كَيْفَ كَذَبُواْ عَلَى أَنفُسِهِمْ وَضَلَّ عَنْهُم مَّا كَانُواْ يَفْتَرُونَ
দেখতো, কিভাবে মিথ্যা বলছে নিজেদের বিপক্ষে ? এবং যেসব বিষয় তারা আপনার প্রতি মিছামিছি রচনা করত, তা সবই উধাও হয়ে গেছে। [ সুরা আন’য়াম ৬:২৪ ]
وَمِنْهُم مَّن يَسْتَمِعُ إِلَيْكَ وَجَعَلْنَا عَلَى
قُلُوبِهِمْ أَكِنَّةً أَن يَفْقَهُوهُ وَفِي آذَانِهِمْ وَقْرًا وَإِن
يَرَوْاْ كُلَّ آيَةٍ لاَّ يُؤْمِنُواْ بِهَا حَتَّى إِذَا جَآؤُوكَ
يُجَادِلُونَكَ يَقُولُ الَّذِينَ كَفَرُواْ إِنْ هَذَا إِلاَّ أَسَاطِيرُ
الأَوَّلِينَ
তাদের কেউ কেউ আপনার দিকে কান লাগিয়ে থাকে। আমি তাদের
অন্তরের উপর আবরণ রেখে দিয়েছি যাতে একে না বুঝে এবং তাদের কানে বোঝা ভরে
দিয়েছি। যদি তারা সব নিদর্শন অবলোকন করে তবুও সেগুলো বিশ্বাস করবে না।
এমনকি, তারা যখন আপনার কাছে ঝগড়া করতে আসে, তখন কাফেররা বলেঃ এটি
পুর্ববর্তীদের কিচ্ছাকাহিনী বৈ তো নয়। [ সুরা আন’য়াম ৬:২৫ ]
وَهُمْ يَنْهَوْنَ عَنْهُ وَيَنْأَوْنَ عَنْهُ وَإِن يُهْلِكُونَ إِلاَّ أَنفُسَهُمْ وَمَا يَشْعُرُونَ
তারা এ থেকে বাধা প্রদান করে এবং এ থেকে পলায়ন করে। তারা নিজেদেরকে ধ্বংস করেছে, কিন্তু বুঝছে না। [ সুরা আন’য়াম ৬:২৬ ]
وَلَوْ تَرَىَ إِذْ وُقِفُواْ عَلَى النَّارِ
فَقَالُواْ يَا لَيْتَنَا نُرَدُّ وَلاَ نُكَذِّبَ بِآيَاتِ رَبِّنَا
وَنَكُونَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ
আর আপনি যদি দেখেন, যখন তাদেরকে দোযখের উপর দাঁড়
করানো হবে! তারা বলবেঃ কতই না ভাল হত, যদি আমরা পুনঃ প্রেরিত হতাম; তা হলে
আমরা স্বীয় পালনকর্তার নিদর্শনসমূহে মিথ্যারোপ করতাম না এবং আমরা
বিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যেতাম। [ সুরা আন’য়াম ৬:২৭ ]
بَلْ بَدَا لَهُم مَّا كَانُواْ يُخْفُونَ مِن قَبْلُ وَلَوْ رُدُّواْ لَعَادُواْ لِمَا نُهُواْ عَنْهُ وَإِنَّهُمْ لَكَاذِبُونَ
এবং তারা ইতি পূর্বে যা গোপন করত, তা তাদের সামনে
প্রকাশ হয়ে পড়েছে। যদি তারা পুনঃ প্রেরিত হয়, তবুও তাই করবে, যা তাদেরকে
নিষেধ করা হয়েছিল। নিশ্চয় তারা মিথ্যাবাদী। [ সুরা আন’য়াম ৬:২৮ ]
وَقَالُواْ إِنْ هِيَ إِلاَّ حَيَاتُنَا الدُّنْيَا وَمَا نَحْنُ بِمَبْعُوثِينَ
তারা বলেঃ আমাদের এ পার্থিব জীবনই জীবন। আমাদেরকে পুনরায় জীবিত হতে হবে না। [ সুরা আন’য়াম ৬:২৯ ]
وَلَوْ تَرَى إِذْ وُقِفُواْ عَلَى رَبِّهِمْ قَالَ
أَلَيْسَ هَذَا بِالْحَقِّ قَالُواْ بَلَى وَرَبِّنَا قَالَ فَذُوقُواْ
العَذَابَ بِمَا كُنتُمْ تَكْفُرُونَ
আর যদি আপনি দেখেন; যখন তাদেরকে প্রতিপালকের সামনে
দাঁড় করানো হবে। তিনি বলবেনঃ এটা কি বাস্তব সত্য নয়? তারা বলবেঃ হঁ্যা
আমাদের প্রতিপালকের কসম। তিনি বলবেনঃ অতএব, স্বীয় কুফরের কারণে শাস্তি
আস্বাদন কর। [ সুরা আন’য়াম ৬:৩০ ]
قَدْ خَسِرَ الَّذِينَ كَذَّبُواْ بِلِقَاء اللّهِ
حَتَّى إِذَا جَاءتْهُمُ السَّاعَةُ بَغْتَةً قَالُواْ يَا حَسْرَتَنَا
عَلَى مَا فَرَّطْنَا فِيهَا وَهُمْ يَحْمِلُونَ أَوْزَارَهُمْ عَلَى
ظُهُورِهِمْ أَلاَ سَاء مَا يَزِرُونَ
নিশ্চয় তারা ক্ষতিগ্রস্ত, যারা আল্লাহর সাক্ষাৎকে
মিথ্যা মনে করেছে। এমনকি, যখন কিয়ামত তাদের কাছে অকস্মাৎ এসে যাবে, তারা
বলবেঃ হায় আফসোস, এর ব্যাপারে আমরা কতই না ক্রটি করেছি। তার স্বীয় বোঝা
স্বীয় পৃষ্ঠে বহন করবে। শুনে রাখ, তারা যে বোঝা বহন করবে, তা নিকৃষ্টতর
বোঝা। [ সুরা আন’য়াম ৬:৩১ ]
وَمَا الْحَيَاةُ الدُّنْيَا إِلاَّ لَعِبٌ وَلَهْوٌ وَلَلدَّارُ الآخِرَةُ خَيْرٌ لِّلَّذِينَ يَتَّقُونَ أَفَلاَ تَعْقِلُونَ
পার্থিব জীবন ক্রীড়া ও কৌতুক ব্যতীত কিছুই নয়। পরকালের আবাস পরহেযগারদের জন্যে শ্রেষ্টতর। তোমরা কি বুঝ না ? [ সুরা আন’য়াম ৬:৩২ ]
قَدْ نَعْلَمُ إِنَّهُ لَيَحْزُنُكَ الَّذِي
يَقُولُونَ فَإِنَّهُمْ لاَ يُكَذِّبُونَكَ وَلَكِنَّ الظَّالِمِينَ
بِآيَاتِ اللّهِ يَجْحَدُونَ
আমার জানা আছে যে, তাদের উক্তি আপনাকে দুঃখিত করে।
অতএব, তারা আপনাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে না, বরং জালেমরা আল্লাহর
নিদর্শনাবলীকে অস্বীকার করে। [ সুরা আন’য়াম ৬:৩৩ ]
وَلَقَدْ كُذِّبَتْ رُسُلٌ مِّن قَبْلِكَ فَصَبَرُواْ
عَلَى مَا كُذِّبُواْ وَأُوذُواْ حَتَّى أَتَاهُمْ نَصْرُنَا وَلاَ
مُبَدِّلَ لِكَلِمَاتِ اللّهِ وَلَقدْ جَاءكَ مِن نَّبَإِ الْمُرْسَلِينَ
আপনার পূর্ববর্তী অনেক পয়গম্বরকে মিথ্যা বলা হয়েছে।
তাঁরা এতে ছবর করেছেন। তাদের কাছে আমার সাহায্য পৌঁছে পর্যন্ত তারা
নির্যাতিত হয়েছেন। আল্লাহর বানী কেউ পরিবর্তন করতে পারে না। আপনার কাছে
পয়গম্বরদের কিছু কাহিনী পৌঁছেছে। [ সুরা আন’য়াম ৬:৩৪ ]
وَإِن كَانَ كَبُرَ عَلَيْكَ إِعْرَاضُهُمْ فَإِنِ
اسْتَطَعْتَ أَن تَبْتَغِيَ نَفَقًا فِي الأَرْضِ أَوْ سُلَّمًا فِي
السَّمَاء فَتَأْتِيَهُم بِآيَةٍ وَلَوْ شَاء اللّهُ لَجَمَعَهُمْ عَلَى
الْهُدَى فَلاَ تَكُونَنَّ مِنَ الْجَاهِلِينَ
আর যদি তাদের বিমুখতা আপনার পক্ষে কষ্টকর হয়, তবে
আপনি যদি ভূতলে কোন সুড়ঙ্গ অথবা আকাশে কোন সিড়ি অনুসন্ধান করতে সমর্থ হন,
অতঃপর তাদের কাছে কোন একটি মোজেযা আনতে পারেন, তবে নিয়ে আসুন। আল্লাহ
ইচ্ছা করলে সবাইকে সরল পথে সমবেত করতে পারতেন। অতএব, আপনি নির্বোধদের
অন্তর্ভুক্ত হবেন না। [ সুরা আন’য়াম ৬:৩৫ ]
إِنَّمَا يَسْتَجِيبُ الَّذِينَ يَسْمَعُونَ وَالْمَوْتَى يَبْعَثُهُمُ اللّهُ ثُمَّ إِلَيْهِ يُرْجَعُونَ
তারাই মানে, যারা শ্রবণ করে। আল্লাহ মৃতদেরকে জীবিত করে উত্থিত করবেন। অতঃপর তারা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে। [ সুরা আন’য়াম ৬:৩৬ ]
وَقَالُواْ لَوْلاَ نُزِّلَ عَلَيْهِ آيَةٌ مِّن
رَّبِّهِ قُلْ إِنَّ اللّهَ قَادِرٌ عَلَى أَن يُنَزِّلٍ آيَةً وَلَـكِنَّ
أَكْثَرَهُمْ لاَ يَعْلَمُونَ
তারা বলেঃ তার প্রতি তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে কোন
নিদর্শন অবতীর্ণ হয়নি কেন? বলে দিনঃ আল্লাহ নিদর্শন অবতরণ করতে পূর্ন
সক্ষম; কিন্তু তাদের অধিকাংশই জানে না। [ সুরা আন’য়াম ৬:৩৭ ]
وَمَا مِن دَآبَّةٍ فِي الأَرْضِ وَلاَ طَائِرٍ
يَطِيرُ بِجَنَاحَيْهِ إِلاَّ أُمَمٌ أَمْثَالُكُم مَّا فَرَّطْنَا فِي
الكِتَابِ مِن شَيْءٍ ثُمَّ إِلَى رَبِّهِمْ يُحْشَرُونَ
আর যত প্রকার প্রাণী পৃথিবীতে বিচরণশীল রয়েছে এবং যত
প্রকার পাখী দু' ডানাযোগে উড়ে বেড়ায় তারা সবাই তোমাদের মতই একেকটি
শ্রেণী। আমি কোন কিছু লিখতে ছাড়িনি। অতঃপর সবাই স্বীয় প্রতিপালকের কাছে
সমবেত হবে। [ সুরা আন’য়াম ৬:৩৮ ]
وَالَّذِينَ كَذَّبُواْ بِآيَاتِنَا صُمٌّ وَبُكْمٌ
فِي الظُّلُمَاتِ مَن يَشَإِ اللّهُ يُضْلِلْهُ وَمَن يَشَأْ يَجْعَلْهُ
عَلَى صِرَاطٍ مُّسْتَقِيمٍ
যারা আমার নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা বলে, তারা অন্ধকারের
মধ্যে মূক ও বধির। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা সরল পথে
পরিচালিত করেন। [ সুরা আন’য়াম ৬:৩৯ ]
قُلْ أَرَأَيْتُكُم إِنْ أَتَاكُمْ عَذَابُ اللّهِ أَوْ أَتَتْكُمُ السَّاعَةُ أَغَيْرَ اللّهِ تَدْعُونَ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ
বলুন, বলতো দেখি, যদি তোমাদের উপর আল্লাহর শাস্তি পতিত
হয় কিংবা তোমাদের কাছে কিয়ামত এসে যায়, তবে তোমরা কি আল্লাহ ব্যতীত
অন্যকে ডাকবে যদি তোমরা সত্যবাদী হও। [ সুরা আন’য়াম ৬:৪০ ]
بَلْ إِيَّاهُ تَدْعُونَ فَيَكْشِفُ مَا تَدْعُونَ إِلَيْهِ إِنْ شَاء وَتَنسَوْنَ مَا تُشْرِكُونَ
বরং তোমরা তো তাঁকেই ডাকবে। অতঃপর যে বিপদের জন্যে
তাঁকে ডাকবে, তিনি ইচ্ছা করলে তা দুরও করে দেন। যাদেরকে অংশীদার করছ, তখন
তাদেরকে ভুলে যাবে। [ সুরা আন’য়াম ৬:৪১ ]
وَلَقَدْ أَرْسَلنَا إِلَى أُمَمٍ مِّن قَبْلِكَ فَأَخَذْنَاهُمْ بِالْبَأْسَاء وَالضَّرَّاء لَعَلَّهُمْ يَتَضَرَّعُونَ
আর আমি আপনার পূর্ববর্তী উম্মতদের প্রতিও পয়গম্বর
প্রেরণ করেছিলাম। অতঃপর আমি তাদেরকে অভাব-অনটন ও রোগ-ব্যধি দ্বারা পাকড়াও
করেছিলাম যাতে তারা কাকুতি মিনতি করে। [ সুরা আন’য়াম ৬:৪২ ]
فَلَوْلا إِذْ جَاءهُمْ بَأْسُنَا تَضَرَّعُواْ وَلَـكِن قَسَتْ قُلُوبُهُمْ وَزَيَّنَ لَهُمُ الشَّيْطَانُ مَا كَانُواْ يَعْمَلُونَ
অতঃপর তাদের কাছে যখন আমার আযাব আসল, তখন কেন
কাকুতি-মিনত ি করল না ? বস্তুতঃ তাদের অন্তর কঠোর হয়ে গেল এবং শয়তান
তাদের কাছে সুশোভিত করে দেখাল, যে কাজ তারা করছিল। [ সুরা আন’য়াম ৬:৪৩ ]
فَلَمَّا نَسُواْ مَا ذُكِّرُواْ بِهِ فَتَحْنَا
عَلَيْهِمْ أَبْوَابَ كُلِّ شَيْءٍ حَتَّى إِذَا فَرِحُواْ بِمَا أُوتُواْ
أَخَذْنَاهُم بَغْتَةً فَإِذَا هُم مُّبْلِسُونَ
অতঃপর তারা যখন ঐ উপদেশ ভুলে গেল, যা তাদেরকে দেয়া
হয়েছিল, তখন আমি তাদের সামনে সব কিছুর দ্বার উম্মুক্ত করে দিলাম। এমনকি,
যখন তাদেরকে প্রদত্ত বিষয়াদির জন্যে তারা খুব গর্বিত হয়ে পড়ল, তখন আমি
অকস্মাৎ তাদেরকে পাকড়াও করলাম। তখন তারা নিরাশ হয়ে গেল। [ সুরা আন’য়াম ৬:৪৪ ]
فَقُطِعَ دَابِرُ الْقَوْمِ الَّذِينَ ظَلَمُواْ وَالْحَمْدُ لِلّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
অতঃপর জালেমদের মূল শিকড় কর্তিত হল। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই জন্যে, যিনি বিশ্বজগতের পালনকর্তা। [ সুরা আন’য়াম ৬:৪৫ ]
قُلْ أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَخَذَ اللّهُ سَمْعَكُمْ
وَأَبْصَارَكُمْ وَخَتَمَ عَلَى قُلُوبِكُم مَّنْ إِلَـهٌ غَيْرُ اللّهِ
يَأْتِيكُم بِهِ انظُرْ كَيْفَ نُصَرِّفُ الآيَاتِ ثُمَّ هُمْ يَصْدِفُونَ
আপনি বলুনঃ বল তো দেখি, যদি আল্লাহ তোমাদের কান ও চোখ
নিয়ে যান এবং তোমাদের অন্তরে মোহর এঁটে দেন, তবে এবং তোমাদের আল্লাহ
ব্যতীত এমন উপাস্য কে আছে, যে তোমাদেরকে এগুলো এনে দেবে? দেখ, আমি কিভাবে
ঘুরিয়ে-ফির িয়ে নিদর্শনাবলী বর্ণনা করি। তথাপি তারা বিমুখ হচ্ছে। [ সুরা আন’য়াম ৬:৪৬ ]
قُلْ أَرَأَيْتَكُمْ إِنْ أَتَاكُمْ عَذَابُ اللّهِ بَغْتَةً أَوْ جَهْرَةً هَلْ يُهْلَكُ إِلاَّ الْقَوْمُ الظَّالِمُونَ
বলে দিনঃ দেখতো, যদি আল্লাহর শাস্তি, আকস্মিক কিংবা প্রকাশ্যে তোমাদের উপর আসে, তবে জালেম, সম্প্রদায় ব্যতীত কে ধ্বংস হবে? [ সুরা আন’য়াম ৬:৪৭ ]
وَمَا نُرْسِلُ الْمُرْسَلِينَ إِلاَّ مُبَشِّرِينَ
وَمُنذِرِينَ فَمَنْ آمَنَ وَأَصْلَحَ فَلاَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلاَ هُمْ
يَحْزَنُونَ
আমি পয়গম্বরদেরকে প্রেরণ করি না, কিন্তু সুসংবাদাতা ও
ভীতি প্রদর্শকরূপে অতঃপর যে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সংশোধিত হয়, তাদের
কোন শঙ্কা নেই এবং তারা দুঃখিত হবে না। [ সুরা আন’য়াম ৬:৪৮ ]
وَالَّذِينَ كَذَّبُواْ بِآيَاتِنَا يَمَسُّهُمُ الْعَذَابُ بِمَا كَانُواْ يَفْسُقُونَ
যারা আমার নিদর্শনাবলীকে মিথ্যা বলে, তাদেরকে তাদের নাফরমানীর কারণে আযাব স্পর্শ করবে। [ সুরা আন’য়াম ৬:৪৯ ]
قُل لاَّ أَقُولُ لَكُمْ عِندِي خَزَآئِنُ اللّهِ وَلا
أَعْلَمُ الْغَيْبَ وَلا أَقُولُ لَكُمْ إِنِّي مَلَكٌ إِنْ أَتَّبِعُ
إِلاَّ مَا يُوحَى إِلَيَّ قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الأَعْمَى وَالْبَصِيرُ
أَفَلاَ تَتَفَكَّرُونَ
আপনি বলুনঃ আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার কাছে
আল্লাহর ভান্ডার রয়েছে। তাছাড়া আমি অদৃশ্য বিষয় অবগতও নই। আমি এমন বলি
না যে, আমি ফেরেশতা। আমি তো শুধু ঐ ওহীর অনুসরণ করি, যা আমার কাছে আসে।
আপনি বলে দিনঃ অন্ধ ও চক্ষুমান কি সমান হতে পারে? তোমরা কি চিন্তা কর না ? [
সুরা আন’য়াম ৬:৫০ ]
وَأَنذِرْ بِهِ الَّذِينَ يَخَافُونَ أَن يُحْشَرُواْ
إِلَى رَبِّهِمْ لَيْسَ لَهُم مِّن دُونِهِ وَلِيٌّ وَلاَ شَفِيعٌ
لَّعَلَّهُمْ يَتَّقُونَ
আপনি এ কোরআন দ্বারা তাদেরকে ভয়-প্রদর্শ ন করুন, যারা
আশঙ্কা করে স্বীয় পালনকর্তার কাছে এমতাবস্থায় একত্রিত হওয়ার যে, তাদের
কোন সাহায্যকারী ও সুপারিশকারী হবে না-যাতে তারা গোনাহ থেকে বেঁচে থাকে। [ সুরা আন’য়াম ৬:৫১ ]
وَلاَ تَطْرُدِ الَّذِينَ يَدْعُونَ رَبَّهُم
بِالْغَدَاةِ وَالْعَشِيِّ يُرِيدُونَ وَجْهَهُ مَا عَلَيْكَ مِنْ
حِسَابِهِم مِّن شَيْءٍ وَمَا مِنْ حِسَابِكَ عَلَيْهِم مِّن شَيْءٍ
فَتَطْرُدَهُمْ فَتَكُونَ مِنَ الظَّالِمِينَ
আর তাদেরকে বিতাড়িত করবেন না, যারা সকাল-বিকাল স্বীয়
পালকর্তার এবাদত করে, তাঁর সন্তুষ্টি কামনা করে। তাদের হিসাব বিন্দুমাত্রও
আপনার দায়িত্বে নয় এবং আপনার হিসাব বিন্দুমাত্রও তাদের দায়িত্বে নয়
যে, আপনি তাদেরকে বিতাড়িত করবেন। নতুবা আপনি অবিচারকারীদের অন্তর্ভূক্ত
হয়ে যাবেন। [ সুরা আন’য়াম ৬:৫২ ]
وَكَذَلِكَ فَتَنَّا بَعْضَهُم بِبَعْضٍ لِّيَقُولواْ
أَهَـؤُلاء مَنَّ اللّهُ عَلَيْهِم مِّن بَيْنِنَا أَلَيْسَ اللّهُ
بِأَعْلَمَ بِالشَّاكِرِينَ
আর এভাবেই আমি কিছু লোককে কিছু লোক দ্বারা পরীক্ষায়
ফেলেছি যাতে তারা বলে যে, এদেরকেই কি আমাদের সবার মধ্য থেকে আল্লাহ স্বীয়
অনুগ্রহ দান করেছেন? আল্লাহ কি কৃতজ্ঞদের সম্পর্কে সুপরিজ্ঞাত নন ? [ সুরা আন’য়াম ৬:৫৩ ]
وَإِذَا جَاءكَ الَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِآيَاتِنَا
فَقُلْ سَلاَمٌ عَلَيْكُمْ كَتَبَ رَبُّكُمْ عَلَى نَفْسِهِ الرَّحْمَةَ
أَنَّهُ مَن عَمِلَ مِنكُمْ سُوءًا بِجَهَالَةٍ ثُمَّ تَابَ مِن بَعْدِهِ
وَأَصْلَحَ فَأَنَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
আর যখন তারা আপনার কাছে আসবে যারা আমার নিদর্শনসমূহে
বিশ্বাস করে, তখন আপনি বলে দিনঃ তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। তোমাদের
পালনকর্তা রহমত করা নিজ দায়িত্বে লিখে নিয়েছেন যে, তোমাদের মধ্যে যে কেউ
অজ্ঞতাবশতঃ কোন মন্দ কাজ করে, অনন্তর এরপরে তওবা করে নেয় এবং সৎ হয়ে
যায়, তবে তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, করুণাময়। [ সুরা আন’য়াম ৬:৫৪ ]
وَكَذَلِكَ نفَصِّلُ الآيَاتِ وَلِتَسْتَبِينَ سَبِيلُ الْمُجْرِمِينَ
আর এমনিভাবে আমি নিদর্শনসমূহ বিস্তারিত বর্ণনা করি-যাতে অপরাধীদের পথ সুস্পষ্ট হয়ে উঠে। [ সুরা আন’য়াম ৬:৫৫ ]
قُلْ إِنِّي نُهِيتُ أَنْ أَعْبُدَ الَّذِينَ
تَدْعُونَ مِن دُونِ اللّهِ قُل لاَّ أَتَّبِعُ أَهْوَاءكُمْ قَدْ ضَلَلْتُ
إِذًا وَمَا أَنَاْ مِنَ الْمُهْتَدِينَ
আপনি বলে দিনঃ আমাকে তাদের এবাদত করতে নিষেধ করা
হয়েছে, তোমরা আল্লাহকে ছেড়ে যাদের এবাদত কর। আপনি বলে দিনঃ আমি তোমাদের
খুশীমত চলবো না। কেননা, তাহলে আমি পথভ্রান্ত হয়ে যাব এবং সুপথগামীদের
অন্তর্ভুক্ত হব না। [ সুরা আন’য়াম ৬:৫৬ ]
قُلْ إِنِّي عَلَى بَيِّنَةٍ مِّن رَّبِّي
وَكَذَّبْتُم بِهِ مَا عِندِي مَا تَسْتَعْجِلُونَ بِهِ إِنِ الْحُكْمُ
إِلاَّ لِلّهِ يَقُصُّ الْحَقَّ وَهُوَ خَيْرُ الْفَاصِلِينَ
আপনি বলে দিনঃ আমার কাছে প্রতিপালকের পক্ষ থেকে একটি
প্রমাণ আছে এবং তোমরা তার প্রতি মিথ্যারোপ করেছ। তোমরা যে বস্তু শীঘ্র দাবী
করছ, তা আমার কাছে নেই। আল্লাহ ছাড়া কারো নির্দেশ চলে না। তিনি সত্য
বর্ণনা করেন এবং তিনিই শ্রেষ্ঠতম মীমাংসাকারী। [ সুরা আন’য়াম ৬:৫৭ ]
قُل لَّوْ أَنَّ عِندِي مَا تَسْتَعْجِلُونَ بِهِ لَقُضِيَ الأَمْرُ بَيْنِي وَبَيْنَكُمْ وَاللّهُ أَعْلَمُ بِالظَّالِمِينَ
আপনি বলে দিনঃ যদি আমার কাছে তা থাকত, যা তোমরা শীঘ্র
দাবী করছ, তবে আমার ও তোমাদের পারস্পরিক বিবাদ কবেই চুকে যেত। আল্লাহ
জালেমদের সম্পর্কে যথেষ্ট পরিমাণে অবহিত। [ সুরা আন’য়াম ৬:৫৮ ]
وَعِندَهُ مَفَاتِحُ الْغَيْبِ لاَ يَعْلَمُهَا إِلاَّ
هُوَ وَيَعْلَمُ مَا فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ وَمَا تَسْقُطُ مِن
وَرَقَةٍ إِلاَّ يَعْلَمُهَا وَلاَ حَبَّةٍ فِي ظُلُمَاتِ الأَرْضِ وَلاَ
رَطْبٍ وَلاَ يَابِسٍ إِلاَّ فِي كِتَابٍ مُّبِينٍ
তাঁর কাছেই অদৃশ্য জগতের চাবি রয়েছে। এ গুলো তিনি
ব্যতীত কেউ জানে না। স্থলে ও জলে যা আছে, তিনিই জানেন। কোন পাতা ঝরে না;
কিন্তু তিনি তা জানেন। কোন শস্য কণা মৃত্তিকার অন্ধকার অংশে পতিত হয় না
এবং কোন আর্দ্র ও শুস্ক দ্রব্য পতিত হয় না; কিন্তু তা সব প্রকাশ্য গ্রন্থে
রয়েছে। [ সুরা আন’য়াম ৬:৫৯ ]
وَهُوَ الَّذِي يَتَوَفَّاكُم بِاللَّيْلِ وَيَعْلَمُ
مَا جَرَحْتُم بِالنَّهَارِ ثُمَّ يَبْعَثُكُمْ فِيهِ لِيُقْضَى أَجَلٌ
مُّسَمًّى ثُمَّ إِلَيْهِ مَرْجِعُكُمْ ثُمَّ يُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمْ
تَعْمَلُونَ
তিনিই রাত্রি বেলায় তোমাদেরকে করায়ত্ত করে নেন এবং
যা কিছু তোমরা দিনের বেলায় কর, তা জানেন। অতঃপর তোমাদেরকে দিবসে সম্মুখিত
করেন-যাতে নির্দিষ্ট ওয়াদা পূর্ণ হয়। [ সুরা আন’য়াম ৬:৬০ ]
وَهُوَ الْقَاهِرُ فَوْقَ عِبَادِهِ وَيُرْسِلُ
عَلَيْكُم حَفَظَةً حَتَّىَ إِذَا جَاء أَحَدَكُمُ الْمَوْتُ تَوَفَّتْهُ
رُسُلُنَا وَهُمْ لاَ يُفَرِّطُونَ
অনন্তর তাঁরই দিকে তোমাদের প্রত্যাবর্তন। অতঃপর
তোমাদেরকে বলে দিবেন, যা কিছু তোমরা করছিলে। তিনিই স্বীয় বান্দাদের উপর
প্রবল। তিনি প্রেরণ করেন তোমাদের কাছে রক্ষণাবেক্ষণকারী। এমন কি, যখন
তোমাদের কারও মৃত্যু আসে তখন আমার প্রেরিত ফেরেশতারা তার আত্মা হস্তগত করে
নেয়। [ সুরা আন’য়াম ৬:৬১ ]
ثُمَّ رُدُّواْ إِلَى اللّهِ مَوْلاَهُمُ الْحَقِّ أَلاَ لَهُ الْحُكْمُ وَهُوَ أَسْرَعُ الْحَاسِبِينَ
অতঃপর সবাইকে সত্যিকার প্রভু আল্লাহর কাছে পৌঁছানো হবে। শুনে রাখ, ফয়সালা তাঁরই এবং তিনি দ্রুত হিসাব গ্রহণ করবেন। [ সুরা আন’য়াম ৬:৬২ ]
قُلْ مَن يُنَجِّيكُم مِّن ظُلُمَاتِ الْبَرِّ
وَالْبَحْرِ تَدْعُونَهُ تَضَرُّعاً وَخُفْيَةً لَّئِنْ أَنجَانَا مِنْ
هَـذِهِ لَنَكُونَنَّ مِنَ الشَّاكِرِينَ
আপনি বলুনঃ কে তোমাদেরকে স্থল ও জলের অন্ধকার থেকে
উদ্ধার করেন, যখন তোমরা তাঁকে বিনীতভাবে ও গোপনে আহবান কর যে, যদি আপনি
আমাদের কে এ থেকে উদ্ধার করে নেন, তবে আমরা অবশ্যই কৃতজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত
হয়ে যাব। [ সুরা আন’য়াম ৬:৬৩ ]
قُلِ اللّهُ يُنَجِّيكُم مِّنْهَا وَمِن كُلِّ كَرْبٍ ثُمَّ أَنتُمْ تُشْرِكُونَ
আপনি বলে দিনঃ আল্লাহ তোমাদেরকে তা থেকে মুক্তি দেন এব সব দুঃখ-বিপদ থেকে। তথাপি তোমরা শেরক কর। [ সুরা আন’য়াম ৬:৬৪ ]
قُلْ هُوَ الْقَادِرُ عَلَى أَن يَبْعَثَ عَلَيْكُمْ
عَذَابًا مِّن فَوْقِكُمْ أَوْ مِن تَحْتِ أَرْجُلِكُمْ أَوْ يَلْبِسَكُمْ
شِيَعاً وَيُذِيقَ بَعْضَكُم بَأْسَ بَعْضٍ انظُرْ كَيْفَ نُصَرِّفُ
الآيَاتِ لَعَلَّهُمْ يَفْقَهُونَ
আপনি বলুনঃ তিনিই শক্তিমান যে, তোমাদের উপর কোন শাস্তি
উপর দিক থেকে অথবা তোমাদের পদতল থেকে প্রেরণ করবেন অথবা তোমাদেরকে
দলে-উপদলে বিভক্ত করে সবাইকে মুখোমুখী করে দিবেন এবং এককে অন্যের উপর
আক্রমণের স্বাদ আস্বাদন করাবেন। দেখ, আমি কেমন ঘুরিয়ে-ফির িয়ে
নিদর্শনাবলী বর্ণনা করি যাতে তারা বুঝে নেয়। [ সুরা আন’য়াম ৬:৬৫ ]
وَكَذَّبَ بِهِ قَوْمُكَ وَهُوَ الْحَقُّ قُل لَّسْتُ عَلَيْكُم بِوَكِيلٍ
আপনার সম্প্রদায় একে মিথ্যা বলছে, অথচ তা সত্য। আপনি বলে দিনঃ আমি তোমাদের উপর নিয়োজিত নই। [ সুরা আন’য়াম ৬:৬৬ ]
لِّكُلِّ نَبَإٍ مُّسْتَقَرٌّ وَسَوْفَ تَعْلَمُونَ
প্রত্যেক খবরের একটি সময় নির্দিষ্ট রয়েছে এবং অচিরেই তোমরা তা জেনে নিবে। [ সুরা আন’য়াম ৬:৬৭ ]
وَإِذَا رَأَيْتَ الَّذِينَ يَخُوضُونَ فِي آيَاتِنَا
فَأَعْرِضْ عَنْهُمْ حَتَّى يَخُوضُواْ فِي حَدِيثٍ غَيْرِهِ وَإِمَّا
يُنسِيَنَّكَ الشَّيْطَانُ فَلاَ تَقْعُدْ بَعْدَ الذِّكْرَى مَعَ
الْقَوْمِ الظَّالِمِينَ
যখন আপনি তাদেরকে দেখেন, যারা আমার আয়াত সমূহে
ছিদ্রান্বেষণ করে, তখন তাদের কাছ থেকে সরে যান যে পর্যন্ত তারা অন্য কথায়
প্রবৃত্ত না হয়, যদি শয়তান আপনাকে ভূলিয়ে দেয় তবে স্মরণ হওয়ার পর
জালেমদের সাথে উপবেশন করবেন না। [ সুরা আন’য়াম ৬:৬৮ ]
وَمَا عَلَى الَّذِينَ يَتَّقُونَ مِنْ حِسَابِهِم مِّن شَيْءٍ وَلَـكِن ذِكْرَى لَعَلَّهُمْ يَتَّقُونَ
এদের যখন বিচার করা হবে তখন পরহেযগারদের উপর এর কোন প্রভাব পড়বে না; কিন্তু তাদের দায়িত্ব উপদেশ দান করা যাতে ওরা ভীত হয়। [ সুরা আন’য়াম ৬:৬৯ ]
وَذَرِ الَّذِينَ اتَّخَذُواْ دِينَهُمْ لَعِبًا
وَلَهْوًا وَغَرَّتْهُمُ الْحَيَاةُ الدُّنْيَا وَذَكِّرْ بِهِ أَن
تُبْسَلَ نَفْسٌ بِمَا كَسَبَتْ لَيْسَ لَهَا مِن دُونِ اللّهِ وَلِيٌّ
وَلاَ شَفِيعٌ وَإِن تَعْدِلْ كُلَّ عَدْلٍ لاَّ يُؤْخَذْ مِنْهَا
أُوْلَـئِكَ الَّذِينَ أُبْسِلُواْ بِمَا كَسَبُواْ لَهُمْ شَرَابٌ مِّنْ
حَمِيمٍ وَعَذَابٌ أَلِيمٌ بِمَا كَانُواْ يَكْفُرُونَ
তাদেরকে পরিত্যাগ করুন, যারা নিজেদের ধর্মকে ক্রীড়া ও
কৌতুকরূপে গ্রহণ করেছে এবং পার্থিব জীবন যাদেরকে ধোঁকায় ফেলে রেখেছে।
কোরআন দ্বারা তাদেরকে উপদেশ দিন, যাতে কেউ স্বীয় কর্মে এমন ভাবে গ্রেফতার
না হয়ে যায় যে, আল্লাহ ব্যতীত তার কোন সাহায্যকারী ও সুপারিশকারী নেই এবং
যদি তারা জগতের বিনিময়ও প্রদান কবে, তবু তাদের কাছ থেকে তা গ্রহণ করা হবে
না। একাই স্বীয় কর্মে জড়িত হয়ে পড়েছে। তাদের জন্যে উত্তপ্ত পানি এবং
যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে-কুফর ের কারণে। [ সুরা আন’য়াম ৬:৭০ ]
قُلْ أَنَدْعُو مِن دُونِ اللّهِ مَا لاَ يَنفَعُنَا
وَلاَ يَضُرُّنَا وَنُرَدُّ عَلَى أَعْقَابِنَا بَعْدَ إِذْ هَدَانَا
اللّهُ كَالَّذِي اسْتَهْوَتْهُ الشَّيَاطِينُ فِي الأَرْضِ حَيْرَانَ لَهُ
أَصْحَابٌ يَدْعُونَهُ إِلَى الْهُدَى ائْتِنَا قُلْ إِنَّ هُدَى اللّهِ
هُوَ الْهُدَىَ وَأُمِرْنَا لِنُسْلِمَ لِرَبِّ الْعَالَمِينَ
আপনি বলে দিনঃ আমরা কি আল্লাহ ব্যতীত এমন বস্তুকে
আহবান করব, যে আমাদের উপকার করতে পারে না এবং ক্ষতিও করতে পারে না এবং আমরা
কি পশ্চাৎপদে ফিরে যাব, এরপর যে, আল্লাহ আমাদেরকে পথ প্রদর্শন করেছেন? ঐ
ব্যক্তির মত, যাকে শয়তানরা বনভুমিতে বিপথগামী করে দিয়েছে-সে উদভ্রান্ত
হয়ে ঘোরাফেরা করছে। তার সহচররা তাকে পথের দিকে ডেকে বলছেঃ আস, আমাদের
কাছে। আপনি বলে দিনঃ নিশ্চয় আল্লাহর পথই সুপথ। আমরা আদিষ্ট হয়েছি যাতে
স্বীয় পালনকর্তা আজ্ঞাবহ হয়ে যাই। [ সুরা আন’য়াম ৬:৭১ ]
وَأَنْ أَقِيمُواْ الصَّلاةَ وَاتَّقُوهُ وَهُوَ الَّذِيَ إِلَيْهِ تُحْشَرُونَ
এবং তা এই যে, নামায কায়েম কর এবং তাঁকে ভয় কর। তাঁর সামনেই তোমরা একত্রিত হবে। [ সুরা আন’য়াম ৬:৭২ ]
وَهُوَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضَ
بِالْحَقِّ وَيَوْمَ يَقُولُ كُن فَيَكُونُ قَوْلُهُ الْحَقُّ وَلَهُ
الْمُلْكُ يَوْمَ يُنفَخُ فِي الصُّوَرِ عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ
وَهُوَ الْحَكِيمُ الْخَبِيرُ
তিনিই সঠিকভাবে নভোমন্ডল সৃষ্টি করেছেন। যেদিন তিনি
বলবেনঃ হয়ে যা, অতঃপর হয়ে যাবে। তাঁর কথা সত্য। যেদিন শিঙ্গায় ফুৎকার
করা হবে, সেদিন তাঁরই আধিপত্য হবে। তিনি অদৃশ্য বিষয়ে এবং প্রত্যক্ষ
বিষয়ে জ্ঞাত। তিনিই প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ। [ সুরা আন’য়াম ৬:৭৩ ]
وَإِذْ قَالَ إِبْرَاهِيمُ لأَبِيهِ آزَرَ أَتَتَّخِذُ أَصْنَامًا آلِهَةً إِنِّي أَرَاكَ وَقَوْمَكَ فِي ضَلاَلٍ مُّبِينٍ
স্মরণ কর, যখন ইব্রাহীম পিতা আযরকে বললেনঃ তুমি কি
প্রতিমা সমূহকে উপাস্য মনে কর? আমি দেখতে পাচ্ছি যে, তুমি ও তোমার
সম্প্রদায় প্রকাশ্য পথভ্রষ্ট। [ সুরা আন’য়াম ৬:৭৪ ]
وَكَذَلِكَ نُرِي إِبْرَاهِيمَ مَلَكُوتَ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ وَلِيَكُونَ مِنَ الْمُوقِنِينَ
আমি এরূপ ভাবেই ইব্রাহীমকে নভোমন্ডল ও ভুমন্ডলের অত্যাশ্চর্য বস্তুসমূহ দেখাতে লাগলাম-যাতে সে দৃঢ় বিশ্বাসী হয়ে যায়। [ সুরা আন’য়াম ৬:৭৫ ]
فَلَمَّا جَنَّ عَلَيْهِ اللَّيْلُ رَأَى كَوْكَبًا قَالَ هَـذَا رَبِّي فَلَمَّا أَفَلَ قَالَ لا أُحِبُّ الآفِلِينَ
অনন্তর যখন রজনীর অন্ধকার তার উপর সমাচ্ছন্ন হল, তখন
সে একটি তারকা দেখতে পেল, বললঃ ইহা আমার প্রতিপালক। অতঃপর যখন তা অস্তমিত
হল তখন বললঃ আমি অস্তগামীদেরকে ভালবাসি না। [ সুরা আন’য়াম ৬:৭৬ ]
فَلَمَّا رَأَى الْقَمَرَ بَازِغًا قَالَ هَـذَا
رَبِّي فَلَمَّا أَفَلَ قَالَ لَئِن لَّمْ يَهْدِنِي رَبِّي لأكُونَنَّ
مِنَ الْقَوْمِ الضَّالِّينَ
অতঃপর যখন চন্দ্রকে ঝলমল করতে দেখল, বললঃ এটি আমার
প্রতিপালক। অনন্তর যখন তা অদৃশ্য হয়ে গেল, তখন বলল যদি আমার প্রতিপালক
আমাকে পথ-প্রদর্শন না করেন, তবে অবশ্যই আমি বিভ্রান্ত সম্প্রদায়ের
অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব। [ সুরা আন’য়াম ৬:৭৭ ]
فَلَمَّا رَأَى الشَّمْسَ بَازِغَةً قَالَ هَـذَا
رَبِّي هَـذَا أَكْبَرُ فَلَمَّا أَفَلَتْ قَالَ يَا قَوْمِ إِنِّي بَرِيءٌ
مِّمَّا تُشْرِكُونَ
অতঃপর যখন সূর্যকে চকচক করতে দেখল, বললঃ এটি আমার
পালনকর্তা, এটি বৃহত্তর। অতপর যখন তা ডুবে গেল, তখন বলল হে আমার
সম্প্রদায়, তোমরা যেসব বিষয়কে শরীক কর, আমি ওসব থেকে মুক্ত। [ সুরা আন’য়াম ৬:৭৮ ]
إِنِّي وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِي فَطَرَ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضَ حَنِيفًا وَمَا أَنَاْ مِنَ الْمُشْرِكِينَ
আমি এক মুখী হয়ে স্বীয় আনন ঐ সত্তার দিকে করেছি, যিনি নভোমন্ডল ও ভুমন্ডল সৃষ্টি করেছেন এবং আমি মুশরেক নই। [ সুরা আন’য়াম ৬:৭৯ ]
وَحَآجَّهُ قَوْمُهُ قَالَ أَتُحَاجُّونِّي فِي اللّهِ
وَقَدْ هَدَانِ وَلاَ أَخَافُ مَا تُشْرِكُونَ بِهِ إِلاَّ أَن يَشَاء
رَبِّي شَيْئًا وَسِعَ رَبِّي كُلَّ شَيْءٍ عِلْمًا أَفَلاَ تَتَذَكَّرُونَ
তাঁর সাথে তার সম্প্রদায় বিতর্ক করল। সে বললঃ তোমরা
কি আমার সাথে আল্লাহর একত্ববাদ সম্পর্কে বিতর্ক করছ; অথচ তিনি আমাকে পথ
প্রদর্শন করেছেন। তোমরা যাদেরকে শরীক কর, আমি তাদেরকে ভয় করি না তবে আমার
পালকর্তাই যদি কোন কষ্ট দিতে চান। আমার পালনকর্তাই প্রত্যেক বস্তুকে স্বীয়
জ্ঞান দ্বারা বেষ্টন করে আছেন। তোমরা কি চিন্তা কর না ? [ সুরা আন’য়াম ৬:৮০ ]
وَكَيْفَ أَخَافُ مَا أَشْرَكْتُمْ وَلاَ تَخَافُونَ
أَنَّكُمْ أَشْرَكْتُم بِاللّهِ مَا لَمْ يُنَزِّلْ بِهِ عَلَيْكُمْ
سُلْطَانًا فَأَيُّ الْفَرِيقَيْنِ أَحَقُّ بِالأَمْنِ إِن كُنتُمْ
تَعْلَمُونَ
যাদেরকে তোমরা আল্লাহর সাথে শরীক করে রেখেছ, তাদেরকে
কিরূপে ভয় কর, অথচ তোমরা ভয় কর না যে, তোমরা আল্লাহর সাথে এমন বস্তুকে
শরীক করছ, যাদের সম্পর্কে আল্লাহ তোমাদের প্রতি কোন প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি।
অতএব, উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে শাস্তি লাভের অধিক যোগ্য কে, যদি তোমরা
জ্ঞানী হয়ে থাক। [ সুরা আন’য়াম ৬:৮১ ]
الَّذِينَ آمَنُواْ وَلَمْ يَلْبِسُواْ إِيمَانَهُم بِظُلْمٍ أُوْلَـئِكَ لَهُمُ الأَمْنُ وَهُم مُّهْتَدُونَ
যারা ঈমান আনে এবং স্বীয় বিশ্বাসকে শেরেকীর সাথে মিশ্রিত করে না, তাদের জন্যেই শান্তি এবং তারাই সুপথগামী। [ সুরা আন’য়াম ৬:৮২ ]
وَتِلْكَ حُجَّتُنَا آتَيْنَاهَا إِبْرَاهِيمَ عَلَى قَوْمِهِ نَرْفَعُ دَرَجَاتٍ مَّن نَّشَاء إِنَّ رَبَّكَ حَكِيمٌ عَلِيمٌ
এটি ছিল আমার যুক্তি, যা আমি ইব্রাহীমকে তাঁর
সম্প্র?দায় ের বিপক্ষে প্রদান করেছিলাম। আমি যাকে ইচ্ছা মর্যাদায় সমুন্নত
করি। আপনার পালনকর্তা প্রজ্ঞাময়, মহাজ্ঞানী [ সুরা আন’য়াম ৬:৮৩ ]
وَوَهَبْنَا لَهُ إِسْحَاقَ وَيَعْقُوبَ كُلاًّ
هَدَيْنَا وَنُوحًا هَدَيْنَا مِن قَبْلُ وَمِن ذُرِّيَّتِهِ دَاوُودَ
وَسُلَيْمَانَ وَأَيُّوبَ وَيُوسُفَ وَمُوسَى وَهَارُونَ وَكَذَلِكَ
نَجْزِي الْمُحْسِنِينَ
আমি তাঁকে দান করেছি ইসহাক এবং এয়াকুব। প্রত্যেককেই
আমি পথ প্রদর্শন করেছি এবং পূর্বে আমি নূহকে পথ প্রদর্শন করেছি-তাঁর
সন্তানদের মধ্যে দাউদ, সোলায়মান, আইউব, ইউসুফ, মূসা ও হারুনকে। এমনিভাবে
আমি সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি। [ সুরা আন’য়াম ৬:৮৪ ]
وَزَكَرِيَّا وَيَحْيَى وَعِيسَى وَإِلْيَاسَ كُلٌّ مِّنَ الصَّالِحِينَ
আর ও যাকারিয়া, ইয়াহিয়া, ঈসা এবং ইলিয়াসকে। তারা সবাই পুণ্যবানদের অন্তর্ভুক্ত ছিল। [ সুরা আন’য়াম ৬:৮৫ ]
وَإِسْمَاعِيلَ وَالْيَسَعَ وَيُونُسَ وَلُوطًا وَكُلاًّ فضَّلْنَا عَلَى الْعَالَمِينَ
এবং ইসরাঈল, ইয়াসা, ইউনূস, লূতকে প্রত্যেককেই আমি সারা বিশ্বের উপর গৌরবাম্বিত করেছি। [ সুরা আন’য়াম ৬:৮৬ ]
وَمِنْ آبَائِهِمْ وَذُرِّيَّاتِهِمْ وَإِخْوَانِهِمْ وَاجْتَبَيْنَاهُمْ وَهَدَيْنَاهُمْ إِلَى صِرَاطٍ مُّسْتَقِيمٍ
আর ও তাদের কিছু সংখ্যক পিতৃপুরুষ, সন্তান-সন্ত তি ও ভ্রাতাদেরকে; আমি তাদেরকে মনোনীত করেছি এবং সরল পথ প্রদর্শন করেছি। [ সুরা আন’য়াম ৬:৮৭ ]
ذَلِكَ هُدَى اللّهِ يَهْدِي بِهِ مَن يَشَاء مِنْ عِبَادِهِ وَلَوْ أَشْرَكُواْ لَحَبِطَ عَنْهُم مَّا كَانُواْ يَعْمَلُونَ
এটি আল্লাহর হেদায়েত। স্বীয় বান্দাদের মধ্যে যাকে
ইচ্ছা, এপথে চালান। যদি তারা শেরেকী করত, তবে তাদের কাজ কর্ম তাদের জন্যে
ব্যর্থ হয়ে যেত। [ সুরা আন’য়াম ৬:৮৮ ]
أُوْلَـئِكَ الَّذِينَ آتَيْنَاهُمُ الْكِتَابَ
وَالْحُكْمَ وَالنُّبُوَّةَ فَإِن يَكْفُرْ بِهَا هَـؤُلاء فَقَدْ
وَكَّلْنَا بِهَا قَوْمًا لَّيْسُواْ بِهَا بِكَافِرِينَ
তাদেরকেই আমি গ্রন্থ, শরীয়ত ও নবুয়ত দান করেছি।
অতএব, যদি এরা আপনার নবুয়ত অস্বীকার করে, তবে এর জন্যে এমন সম্প্রদায়
নির্দিষ্ট করেছি, যারা এতে অবিশ্বাসী হবে না। [ সুরা আন’য়াম ৬:৮৯ ]
أُوْلَـئِكَ الَّذِينَ هَدَى اللّهُ فَبِهُدَاهُمُ
اقْتَدِهْ قُل لاَّ أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ أَجْرًا إِنْ هُوَ إِلاَّ
ذِكْرَى لِلْعَالَمِينَ
এরা এমন ছিল, যাদেরকে আল্লাহ পথ প্রদর্শন করেছিলেন।
অতএব, আপনিও তাদের পথ অনুসরণ করুন। আপনি বলে দিনঃ আমি তোমাদের কাছে এর
জন্যে কোন পারিশ্রমিক চাই না। এটি সারা বিশ্বের জন্যে একটি উপদেশমাত্র। [ সুরা আন’য়াম ৬:৯০ ]
وَمَا قَدَرُواْ اللّهَ حَقَّ قَدْرِهِ إِذْ قَالُواْ
مَا أَنزَلَ اللّهُ عَلَى بَشَرٍ مِّن شَيْءٍ قُلْ مَنْ أَنزَلَ الْكِتَابَ
الَّذِي جَاء بِهِ مُوسَى نُورًا وَهُدًى لِّلنَّاسِ تَجْعَلُونَهُ
قَرَاطِيسَ تُبْدُونَهَا وَتُخْفُونَ كَثِيراً وَعُلِّمْتُم مَّا لَمْ
تَعْلَمُواْ أَنتُمْ وَلاَ آبَاؤُكُمْ قُلِ اللّهُ ثُمَّ ذَرْهُمْ فِي
خَوْضِهِمْ يَلْعَبُونَ
তারা আল্লাহকে যথার্থ মূল্যায়ন করতে পারেনি, যখন তারা
বললঃ আল্লাহ কোন মানুষের প্রতি কোন কিছু অবতীর্ণ করেননি। আপনি জিজ্ঞেস
করুনঃ ঐ গ্রন্থ কে নাযিল করেছে, যা মূসা নিয়ে এসেছিল ? যা জ্যোতিবিশেষ এবং
মানব মন্ডলীর জন্যে হোদায়েতস্বরূপ, যা তোমরা বিক্ষিপ্তপত্রে রেখে লোকদের
জন্যে প্রকাশ করছ এবং বহুলাংশকে গোপন করছ। তোমাদেরকে এমন অনেক বিষয় শিক্ষা
দেয়া হয়েছে, যা তোমরা এবং তোমাদের পূর্বপুরুষরা জানতো না। আপনি বলে দিনঃ
আল্লাহ নাযিল করেছেন। অতঃপর তাদেরকে তাদের ক্রীড়ামূলক বৃত্তিতে ব্যাপৃত
থাকতে দিন। [ সুরা আন’য়াম ৬:৯১ ]
وَهَـذَا كِتَابٌ أَنزَلْنَاهُ مُبَارَكٌ مُّصَدِّقُ
الَّذِي بَيْنَ يَدَيْهِ وَلِتُنذِرَ أُمَّ الْقُرَى وَمَنْ حَوْلَهَا
وَالَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِالآخِرَةِ يُؤْمِنُونَ بِهِ وَهُمْ عَلَى
صَلاَتِهِمْ يُحَافِظُونَ
এ কোরআন এমন গ্রন্থ, যা আমি অবতীর্ন করেছি; বরকতময়,
পূর্ববর্তী গ্রন্থের সত্যতা প্রমাণকারী এবং যাতে আপনি মক্কাবাসী ও
পাশ্ববর্তীদেরকে ভয় প্রদর্শন করেন। যারা পরকালে বিশ্বাস স্থাপন করে তারা
এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তার স্বীয় নামায সংরক্ষণ করে। [ সুরা আন’য়াম ৬:৯২ ]
وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرَى عَلَى اللّهِ
كَذِبًا أَوْ قَالَ أُوْحِيَ إِلَيَّ وَلَمْ يُوحَ إِلَيْهِ شَيْءٌ وَمَن
قَالَ سَأُنزِلُ مِثْلَ مَا أَنَزلَ اللّهُ وَلَوْ تَرَى إِذِ
الظَّالِمُونَ فِي غَمَرَاتِ الْمَوْتِ وَالْمَلآئِكَةُ بَاسِطُواْ
أَيْدِيهِمْ أَخْرِجُواْ أَنفُسَكُمُ الْيَوْمَ تُجْزَوْنَ عَذَابَ
الْهُونِ بِمَا كُنتُمْ تَقُولُونَ عَلَى اللّهِ غَيْرَ الْحَقِّ وَكُنتُمْ
عَنْ آيَاتِهِ تَسْتَكْبِرُونَ
ঐ ব্যক্তির চাইতে বড় জালেম কে হবে, যে আল্লাহর প্রতি
মিথ্যা আরোপ করে অথবা বলেঃ আমার প্রতি ওহী অবতীর্ণ হয়েছে। অথচ তার প্রতি
কোন ওহী আসেনি এবং যে দাবী করে যে, আমিও নাযিল করে দেখাচ্ছি যেমন আল্লাহ
নাযিল করেছেন। যদি আপনি দেখেন যখন জালেমরা মৃত্যু যন্ত্রণায় থাকে এবং
ফেরেশতারা স্বীয় হস্ত প্রসারিত করে বলে, বের কর স্বীয় আত্মা! অদ্য
তোমাদেরকে অবমাননাকর শাস্তি প্রদান করা হবে। কারণ, তোমরা আল্লাহর উপর অসত্য
বলতে এবং তাঁর আয়াত সমূহ থেকে অহংকার করতে। [ সুরা আন’য়াম ৬:৯৩ ]
وَلَقَدْ جِئْتُمُونَا فُرَادَى كَمَا خَلَقْنَاكُمْ
أَوَّلَ مَرَّةٍ وَتَرَكْتُم مَّا خَوَّلْنَاكُمْ وَرَاء ظُهُورِكُمْ وَمَا
نَرَى مَعَكُمْ شُفَعَاءكُمُ الَّذِينَ زَعَمْتُمْ أَنَّهُمْ فِيكُمْ
شُرَكَاء لَقَد تَّقَطَّعَ بَيْنَكُمْ وَضَلَّ عَنكُم مَّا كُنتُمْ
تَزْعُمُونَ
তোমরা আমার কাছে নিঃসঙ্গ হয়ে এসেছ, আমি প্রথমবার
তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছিলাম। আমি তোদেরকে যা দিয়েছিলাম, তা পশ্চাতেই রেখে
এসেছ। আমি তো তোমাদের সাথে তোমাদের সুপারিশকারীদের কে দেখছি না। যাদের
সম্পর্কে তোমাদের দাবী ছিল যে, তারা তোমাদের ব্যাপারে অংশীদার। বাস্তুবিকই
তোমাদের পরস্পরের সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেছে এবং তোমাদের দাবী উধাও হয়ে
গেছে। [ সুরা আন’য়াম ৬:৯৪ ]
إِنَّ اللّهَ فَالِقُ الْحَبِّ وَالنَّوَى يُخْرِجُ
الْحَيَّ مِنَ الْمَيِّتِ وَمُخْرِجُ الْمَيِّتِ مِنَ الْحَيِّ ذَلِكُمُ
اللّهُ فَأَنَّى تُؤْفَكُونَ
নিশ্চয় আল্লাহই বীজ ও আঁটি থেকে অঙ্কুর সৃষ্টিকারী;
তিনি জীবিতকে মৃত থেকে বের করেন ও মৃতকে জীবিত থেকে বের করেন। তিনি আল্লাহ
অতঃপর তোমরা কোথায় বিভ্রান্ত হচ্ছ? [ সুরা আন’য়াম ৬:৯৫ ]
فَالِقُ الإِصْبَاحِ وَجَعَلَ اللَّيْلَ سَكَنًا وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ حُسْبَانًا ذَلِكَ تَقْدِيرُ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ
তিনি প্রভাত রশ্মির উন্মেষক। তিনি রাত্রিকে আরামদায়ক
করেছেন এবং সূর্য ও চন্দ্রকে হিসেবের জন্য রেখেছেন। এটি পরাক্রান্ত,
মহাজ্ঞানীর নির্ধারণ। [ সুরা আন’য়াম ৬:৯৬ ]
وَهُوَ الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ النُّجُومَ
لِتَهْتَدُواْ بِهَا فِي ظُلُمَاتِ الْبَرِّ وَالْبَحْرِ قَدْ فَصَّلْنَا
الآيَاتِ لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ
তিনিই তোমাদের জন্য নক্ষত্রপুঞ্জ সৃজন করেছেন যাতে
তোমরা স্থল ও জলের অন্ধকারে পথ প্রাপ্ত হও। নিশ্চয় যারা জ্ঞানী তাদের
জন্যে আমি নির্দেশনাবলী বিস্তারিত বর্ণনা করে দিয়েছি। [ সুরা আন’য়াম ৬:৯৭ ]
وَهُوَ الَّذِيَ أَنشَأَكُم مِّن نَّفْسٍ وَاحِدَةٍ فَمُسْتَقَرٌّ وَمُسْتَوْدَعٌ قَدْ فَصَّلْنَا الآيَاتِ لِقَوْمٍ يَفْقَهُونَ
তিনিই তোমাদের কে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন।
অনন্তর একটি হচ্ছে তোমাদের স্থায়ী ঠিকানা ও একটি হচ্ছে গচ্ছিত স্থল।
নিশ্চয় আমি প্রমাণাদি বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করে দিয়েছি তাদের জন্যে,
যারা চিন্তা করে। [ সুরা আন’য়াম ৬:৯৮ ]
وَهُوَ الَّذِيَ أَنزَلَ مِنَ السَّمَاء مَاء
فَأَخْرَجْنَا بِهِ نَبَاتَ كُلِّ شَيْءٍ فَأَخْرَجْنَا مِنْهُ خَضِرًا
نُّخْرِجُ مِنْهُ حَبًّا مُّتَرَاكِبًا وَمِنَ النَّخْلِ مِن طَلْعِهَا
قِنْوَانٌ دَانِيَةٌ وَجَنَّاتٍ مِّنْ أَعْنَابٍ وَالزَّيْتُونَ
وَالرُّمَّانَ مُشْتَبِهًا وَغَيْرَ مُتَشَابِهٍ انظُرُواْ إِلِى ثَمَرِهِ
إِذَا أَثْمَرَ وَيَنْعِهِ إِنَّ فِي ذَلِكُمْ لآيَاتٍ لِّقَوْمٍ
يُؤْمِنُونَ
তিনিই আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেছেন অতঃপর আমি এর
দ্বারা সর্বপ্রকার উদ্ভিদ উৎপন্ন করেছি, অতঃপর আমি এ থেকে সবুজ ফসল নির্গত
করেছি, যা থেকে যুগ্ম বীজ উৎপন্ন করি। খেজুরের কাঁদি থেকে গুচ্ছ বের করি,
যা নুয়ে থাকে এবং আঙ্গুরের বাগান, যয়তুন, আনার পরস্পর সাদৃশ্যযুক্ত এবং
সাদৃশ্যহীন। বিভিন্ন গাছের ফলের প্রতি লক্ষ্য কর যখন সেুগুলো ফলন্ত হয় এবং
তার পরিপক্কতার প্রতি লক্ষ্য কর। নিশ্চয় এ গুলোতে নিদর্শন রয়েছে
ঈমানদারদের জন্যে। [ সুরা আন’য়াম ৬:৯৯ ]
وَجَعَلُواْ لِلّهِ شُرَكَاء الْجِنَّ وَخَلَقَهُمْ
وَخَرَقُواْ لَهُ بَنِينَ وَبَنَاتٍ بِغَيْرِ عِلْمٍ سُبْحَانَهُ
وَتَعَالَى عَمَّا يَصِفُونَ
তারা জিনদেরকে আল্লাহর অংশীদার স্থির করে; অথচ তাদেরকে
তিনিই সৃস্টি করেছেন। তারা অজ্ঞতাবশতঃ আল্লাহর জন্যে পুত্র ও কন্যা
সাব্যস্ত করে নিয়েছে। তিনি পবিত্র ও সমুন্নত, তাদের বর্ননা থেকে। [ সুরা আন’য়াম ৬:১০০ ]
بَدِيعُ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ أَنَّى يَكُونُ لَهُ
وَلَدٌ وَلَمْ تَكُن لَّهُ صَاحِبَةٌ وَخَلَقَ كُلَّ شَيْءٍ وهُوَ بِكُلِّ
شَيْءٍ عَلِيمٌ
তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের আদি স্রষ্টা। কিরূপে
আল্লাহর পুত্র হতে পারে, অথচ তাঁর কোন সঙ্গী নেই ? তিনি যাবতীয় কিছু
সৃষ্টি করেছেন। তিনি সব বস্তু সম্পর্কে সুবিজ্ঞ। [ সুরা আন’য়াম ৬:১০১ ]
ذَلِكُمُ اللّهُ رَبُّكُمْ لا إِلَـهَ إِلاَّ هُوَ خَالِقُ كُلِّ شَيْءٍ فَاعْبُدُوهُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ وَكِيلٌ
তিনিই আল্লাহ তোমাদের পালনকর্তা। তিনি ব্যতীত কোন
উপাস্য নেই। তিনিই সব কিছুর স্রষ্টা। অতএব, তোমরা তাঁরই এবাদত কর। তিনি
প্রত্যেক বস্তুর কার্যনির্বাহী। [ সুরা আন’য়াম ৬:১০২ ]
لاَّ تُدْرِكُهُ الأَبْصَارُ وَهُوَ يُدْرِكُ الأَبْصَارَ وَهُوَ اللَّطِيفُ الْخَبِيرُ
দৃষ্টিসমূহ তাঁকে পেতে পারে না, অবশ্য তিনি দৃষ্টিসমূহকে পেতে পারেন। তিনি অত্যন্ত সুক্ষদর্শী, সুবিজ্ঞ। [ সুরা আন’য়াম ৬:১০৩ ]
قَدْ جَاءكُم بَصَآئِرُ مِن رَّبِّكُمْ فَمَنْ أَبْصَرَ فَلِنَفْسِهِ وَمَنْ عَمِيَ فَعَلَيْهَا وَمَا أَنَاْ عَلَيْكُم بِحَفِيظٍ
তোমাদের কাছে তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে
নিদর্শনাবলী এসে গেছে। অতএব, যে প্রত্যক্ষ করবে, সে নিজেরই উপকার করবে এবং
যে অন্ধ হবে, সে নিজেরই ক্ষতি করবে। আমি তোমাদের পর্যবেক্ষক নই। [ সুরা আন’য়াম ৬:১০৪ ]
وَكَذَلِكَ نُصَرِّفُ الآيَاتِ وَلِيَقُولُواْ دَرَسْتَ وَلِنُبَيِّنَهُ لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ
এমনি ভাবে আমি নিদর্শনাবলী ঘুরিয়ে-ফির িয়ে বর্ণনা
করি যাতে তারা না বলে যে, আপনি তো পড়ে নিয়েছেন এবং যাতে আমি একে
সুধীবৃন্দের জন্যে খুব পরিব্যক্ত করে দেই। [ সুরা আন’য়াম ৬:১০৫ ]
اتَّبِعْ مَا أُوحِيَ إِلَيْكَ مِن رَّبِّكَ لا إِلَـهَ إِلاَّ هُوَ وَأَعْرِضْ عَنِ الْمُشْرِكِينَ
আপনি পথ অনুসরণ করুন, যার আদেশ পালনকর্তার পক্ষ থেকে আসে। তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই এবং মুশরিকদের তরফ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিন। [ সুরা আন’য়াম ৬:১০৬ ]
وَلَوْ شَاء اللّهُ مَا أَشْرَكُواْ وَمَا جَعَلْنَاكَ عَلَيْهِمْ حَفِيظًا وَمَا أَنتَ عَلَيْهِم بِوَكِيلٍ
যদি আল্লাহ চাইতেন তবে তারা শেরক করত না। আমি আপনাকে তাদের সংরক্ষক করিনি এবং আপনি তাদের কার্যনির্বাহী নন। [ সুরা আন’য়াম ৬:১০৭ ]
وَلاَ تَسُبُّواْ الَّذِينَ يَدْعُونَ مِن دُونِ
اللّهِ فَيَسُبُّواْ اللّهَ عَدْوًا بِغَيْرِ عِلْمٍ كَذَلِكَ زَيَّنَّا
لِكُلِّ أُمَّةٍ عَمَلَهُمْ ثُمَّ إِلَى رَبِّهِم مَّرْجِعُهُمْ
فَيُنَبِّئُهُم بِمَا كَانُواْ يَعْمَلُونَ
তোমরা তাদেরকে মন্দ বলো না, যাদের তারা আরাধনা করে
আল্লাহকে ছেড়ে। তাহলে তারা ধৃষ্টতা করে অজ্ঞতাবশতঃ আল্লাহকে মন্দ বলবে।
এমনিভাবে আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের দৃষ্টিতে তাদের কাজ কর্ম সুশোভিত করে
দিয়েছি। অতঃপর স্বীয় পালনকর্তার কাছে তাদেরকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। তখন
তিনি তাদেরকে বলে দেবেন যা কিছু তারা করত। [ সুরা আন’য়াম ৬:১০৮ ]
وَأَقْسَمُواْ بِاللّهِ جَهْدَ أَيْمَانِهِمْ لَئِن
جَاءتْهُمْ آيَةٌ لَّيُؤْمِنُنَّ بِهَا قُلْ إِنَّمَا الآيَاتُ عِندَ
اللّهِ وَمَا يُشْعِرُكُمْ أَنَّهَا إِذَا جَاءتْ لاَ يُؤْمِنُونَ
তারা জোর দিয়ে আল্লাহর কসম খায় যে, যদি তাদের কাছে
কোন নিদর্শন আসে, তবে অবশ্যই তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে। আপনি বলে দিনঃ
নিদর্শনাবলী তো আল্লাহর কাছেই আছে। হে মুসলমানগণ, তোমাদেরকে কে বলল যে, যখন
তাদের কাছে নিদর্শনাবলী আসবে, তখন তারা বিশ্বাস স্থাপন করবেই ? [ সুরা আন’য়াম ৬:১০৯ ]
وَنُقَلِّبُ أَفْئِدَتَهُمْ وَأَبْصَارَهُمْ كَمَا
لَمْ يُؤْمِنُواْ بِهِ أَوَّلَ مَرَّةٍ وَنَذَرُهُمْ فِي طُغْيَانِهِمْ
يَعْمَهُونَ
আমি ঘুরিয়ে দিব তাদের অন্তর ও দৃষ্টিকে, যেমন-তারা এর
প্রতি প্রথমবার বিশ্বাস স্থাপন করেনি এবং আমি তাদেরকে তাদের অবাধ্যতায়
উদভ্রান্ত ছেড়ে দিব। [ সুরা আন’য়াম ৬:১১০ ]
وَلَوْ أَنَّنَا نَزَّلْنَا إِلَيْهِمُ الْمَلآئِكَةَ
وَكَلَّمَهُمُ الْمَوْتَى وَحَشَرْنَا عَلَيْهِمْ كُلَّ شَيْءٍ قُبُلاً
مَّا كَانُواْ لِيُؤْمِنُواْ إِلاَّ أَن يَشَاء اللّهُ وَلَـكِنَّ
أَكْثَرَهُمْ يَجْهَلُونَ
আমি যদি তাদের কাছে ফেরেশতাদেরকে অবতারণ করতাম এবং
তাদের সাথে মৃতরা কথাবার্তা বলত এবং আমি সব বস্তুকে তাদের সামনে জীবিত করে
দিতাম, তথাপি তারা কখনও বিশ্বাস স্থাপনকারী নয়; কিন্তু যদি আল্লাহ চান।
কিন্তু তাদের অধিকাংশই মুর্খ। [ সুরা আন’য়াম ৬:১১১ ]
وَكَذَلِكَ جَعَلْنَا لِكُلِّ نِبِيٍّ عَدُوًّا
شَيَاطِينَ الإِنسِ وَالْجِنِّ يُوحِي بَعْضُهُمْ إِلَى بَعْضٍ زُخْرُفَ
الْقَوْلِ غُرُورًا وَلَوْ شَاء رَبُّكَ مَا فَعَلُوهُ فَذَرْهُمْ وَمَا
يَفْتَرُونَ
এমনিভাবে আমি প্রত্যেক নবীর জন্যে শত্রু করেছি শয়তান,
মানব ও জিনকে। তারা ধোঁকা দেয়ার জন্যে একে অপরকে কারুকার্যখচিত কথাবার্তা
শিক্ষা দেয়। যদি আপনার পালনকর্তা চাইতেন, তবে তারা এ কাজ করত না। [ সুরা আন’য়াম ৬:১১২ ]
وَلِتَصْغَى إِلَيْهِ أَفْئِدَةُ الَّذِينَ لاَ يُؤْمِنُونَ بِالآخِرَةِ وَلِيَرْضَوْهُ وَلِيَقْتَرِفُواْ مَا هُم مُّقْتَرِفُونَ
অতএব, আপনি তাদেরকে এবং তাদের মিথ্যাপবাদকে মুক্ত
ছেড়ে দিন যাতে কারুকার্যখচিত বাক্যের প্রতি তাদের মন আকৃষ্ট হয় যারা
পরকালে বিশ্বাস করে না এবং তারা একেও পছন্দ করে নেয় এবং যাতে ঐসব কাজ করে,
যা তারা করছে। [ সুরা আন’য়াম ৬:১১৩ ]
أَفَغَيْرَ اللّهِ أَبْتَغِي حَكَمًا وَهُوَ الَّذِي
أَنَزَلَ إِلَيْكُمُ الْكِتَابَ مُفَصَّلاً وَالَّذِينَ آتَيْنَاهُمُ
الْكِتَابَ يَعْلَمُونَ أَنَّهُ مُنَزَّلٌ مِّن رَّبِّكَ بِالْحَقِّ فَلاَ
تَكُونَنَّ مِنَ الْمُمْتَرِينَ
তবে কি আমি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন বিচারক অনুসন্ধান
করব, অথচ তিনিই তোমাদের প্রতি বিস্তারিত গ্রন্থ অবতীর্ন করেছেন? আমি
যাদেরকে গ্রন্থ প্রদান করেছি, তারা নিশ্চিত জানে যে, এটি আপনার প্রতি
পালকের পক্ষ থেকে সত্যসহ অবর্তীর্ন হয়েছে। অতএব, আপনি সংশয়কারীদের
অন্তর্ভুক্ত হবেন না। [ সুরা আন’য়াম ৬:১১৪ ]
وَتَمَّتْ كَلِمَتُ رَبِّكَ صِدْقًا وَعَدْلاً لاَّ مُبَدِّلِ لِكَلِمَاتِهِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
আপনার প্রতিপালকের বাক্য পূর্ণ সত্য ও সুষম। তাঁর বাক্যের কোন পরিবর্তনকারী নেই। তিনিই শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী। [ সুরা আন’য়াম ৬:১১৫ ]
وَإِن تُطِعْ أَكْثَرَ مَن فِي الأَرْضِ يُضِلُّوكَ
عَن سَبِيلِ اللّهِ إِن يَتَّبِعُونَ إِلاَّ الظَّنَّ وَإِنْ هُمْ إِلاَّ
يَخْرُصُونَ
আর যদি আপনি পৃথিবীর অধিকাংশ লোকের কথা মেনে নেন, তবে
তারা আপনাকে আল্লাহর পথ থেকে বিপথগামী করে দেবে। তারা শুধু অলীক কল্পনার
অনুসরণ করে এবং সম্পূর্ণ অনুমান ভিত্তিক কথাবার্তা বলে থাকে। [ সুরা আন’য়াম ৬:১১৬ ]
إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ مَن يَضِلُّ عَن سَبِيلِهِ وَهُوَ أَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِينَ
আপনার প্রতিপালক তাদের সম্পর্কে খুব জ্ঞাত রয়েছেন,
যারা তাঁর পথ থেকে বিপথগামী হয় এবং তিনি তাদেরকেও খুব ভাল করে জানেন, যারা
তাঁর পথে অনুগমন করে। [ সুরা আন’য়াম ৬:১১৭ ]
فَكُلُواْ مِمَّا ذُكِرَ اسْمُ اللّهِ عَلَيْهِ إِن كُنتُمْ بِآيَاتِهِ مُؤْمِنِينَ
অতঃপর যে জন্তুর উপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয়, তা থেকে ভক্ষণ কর যদি তোমরা তাঁর বিধানসমূহে বিশ্বাসী হও। [ সুরা আন’য়াম ৬:১১৮ ]
وَمَا لَكُمْ أَلاَّ تَأْكُلُواْ مِمَّا ذُكِرَ اسْمُ
اللّهِ عَلَيْهِ وَقَدْ فَصَّلَ لَكُم مَّا حَرَّمَ عَلَيْكُمْ إِلاَّ مَا
اضْطُرِرْتُمْ إِلَيْهِ وَإِنَّ كَثِيراً لَّيُضِلُّونَ بِأَهْوَائِهِم
بِغَيْرِ عِلْمٍ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِالْمُعْتَدِينَ
কোন কারণে তোমরা এমন জন্তু থেকে ভক্ষণ করবে না, যার
উপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয়, অথচ আল্লাহ ঐ সব জন্তুর বিশদ বিবরণ
দিয়েছেন, যেগুলোকে তোমাদের জন্যে হারাম করেছেন; কিন্তু সেগুলোও তোমাদের
জন্যে হালাল, যখন তোমরা নিরুপায় হয়ে যাও। অনেক লোক স্বীয় ভ্রান্ত
প্রবৃত্তি দ্বারা না জেনে বিপথগামী করতে থাকে। আপনার প্রতিপালক সীমাতিক্রম
কারীদেরকে যথার্থই জানেন। [ সুরা আন’য়াম ৬:১১৯ ]
وَذَرُواْ ظَاهِرَ الإِثْمِ وَبَاطِنَهُ إِنَّ الَّذِينَ يَكْسِبُونَ الإِثْمَ سَيُجْزَوْنَ بِمَا كَانُواْ يَقْتَرِفُونَ
তোমরা প্রকাশ্য ও প্রচ্ছন্ন গোনাহ পরিত্যাগ কর। নিশ্চয় যারা গোনাহ করেছে, তারা অতিসত্বর তাদের কৃতকর্মের শাস্তি পাবে। [ সুরা আন’য়াম ৬:১২০ ]
وَلاَ تَأْكُلُواْ مِمَّا لَمْ يُذْكَرِ اسْمُ اللّهِ
عَلَيْهِ وَإِنَّهُ لَفِسْقٌ وَإِنَّ الشَّيَاطِينَ لَيُوحُونَ إِلَى
أَوْلِيَآئِهِمْ لِيُجَادِلُوكُمْ وَإِنْ أَطَعْتُمُوهُمْ إِنَّكُمْ
لَمُشْرِكُونَ
যেসব জন্তুর উপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয় না, সেগুলো
থেকে ভক্ষণ করো না; এ ভক্ষণ করা গোনাহ। নিশ্চয় শয়তানরা তাদের বন্ধুদেরকে
প্রত্যাদেশ করে-যেন তারা তোমাদের সাথে তর্ক করে। যদি তোমরা তাদের আনুগত্য
কর, তোমরাও মুশরেক হয়ে যাবে। [ সুরা আন’য়াম ৬:১২১ ]
أَوَ مَن كَانَ مَيْتًا فَأَحْيَيْنَاهُ وَجَعَلْنَا
لَهُ نُورًا يَمْشِي بِهِ فِي النَّاسِ كَمَن مَّثَلُهُ فِي الظُّلُمَاتِ
لَيْسَ بِخَارِجٍ مِّنْهَا كَذَلِكَ زُيِّنَ لِلْكَافِرِينَ مَا كَانُواْ
يَعْمَلُونَ
আর যে মৃত ছিল অতঃপর আমি তাকে জীবিত করেছি এবং তাকে
এমন একটি আলো দিয়েছি, যা নিয়ে সে মানুষের মধ্যে চলাফেরা করে। সে কি ঐ
ব্যক্তির সমতুল্য হতে পারে, যে অন্ধকারে রয়েছে-সেখা ন থেকে বের হতে পারছে
না? এমনিভাবে কাফেরদের দৃষ্টিতে তাদের কাজকর্মকে সুশোভিত করে দেয়া হয়েছে।
[ সুরা আন’য়াম ৬:১২২ ]
وَكَذَلِكَ جَعَلْنَا فِي كُلِّ قَرْيَةٍ أَكَابِرَ
مُجَرِمِيهَا لِيَمْكُرُواْ فِيهَا وَمَا يَمْكُرُونَ إِلاَّ بِأَنفُسِهِمْ
وَمَا يَشْعُرُونَ
আর এমনিভাবে আমি প্রত্যেক জনপদে অপরাধীদের জন্য কিছু
সর্দার নিয়োগ করেছি-যেন তারা সেখানে চক্রান্ত করে। তাদের সে চক্রান্ত
তাদের নিজেদের বিরুদ্ধেই; কিন্তু তারা তা উপলব্ধি করতে পারে না। [ সুরা আন’য়াম ৬:১২৩ ]
وَإِذَا جَاءتْهُمْ آيَةٌ قَالُواْ لَن نُّؤْمِنَ
حَتَّى نُؤْتَى مِثْلَ مَا أُوتِيَ رُسُلُ اللّهِ اللّهُ أَعْلَمُ حَيْثُ
يَجْعَلُ رِسَالَتَهُ سَيُصِيبُ الَّذِينَ أَجْرَمُواْ صَغَارٌ عِندَ
اللّهِ وَعَذَابٌ شَدِيدٌ بِمَا كَانُواْ يَمْكُرُونَ
যখন তাদের কাছে কোন আয়াত পৌঁছে, তখন বলে, আমরা কখনই
মানব না যে, পর্যন্ত না আমরাও তা প্রদত্ত হই, যা আল্লাহর রসূলগণ প্রদত্ত
হয়েছেন। আল্লাহ এ বিষয়ে সুপারিজ্ঞাত যে, কোথায় স্বীয় পয়গাম প্রেরণ
করতে হবে। যারা অপরাধ করছে, তারা অতিসত্বর আল্লাহর কাছে পৌছে লাঞ্ছনা ও
কঠোর শাস্তি পাবে, তাদের চক্রান্তের কারণে। [ সুরা আন’য়াম ৬:১২৪ ]
فَمَن يُرِدِ اللّهُ أَن يَهْدِيَهُ يَشْرَحْ صَدْرَهُ
لِلإِسْلاَمِ وَمَن يُرِدْ أَن يُضِلَّهُ يَجْعَلْ صَدْرَهُ ضَيِّقًا
حَرَجًا كَأَنَّمَا يَصَّعَّدُ فِي السَّمَاء كَذَلِكَ يَجْعَلُ اللّهُ
الرِّجْسَ عَلَى الَّذِينَ لاَ يُؤْمِنُونَ
অতঃপর আল্লাহ যাকে পথ-প্রদর্শন করতে চান, তার বক্ষকে
ইসলামের জন্যে উম্মুক্ত করে দেন এবং যাকে বিপথগামী করতে চান, তার বক্ষকে
সংকীর্ণ অত্যধিক সংকীর্ণ করে দেন-যেন সে সবেগে আকাশে আরোহণ করছে। এমনি ভাবে
যারা বিশ্বাস স্থাপন করে না। আল্লাহ তাদের উপর আযাব বর্ষন করেন। [ সুরা আন’য়াম ৬:১২৫ ]
وَهَـذَا صِرَاطُ رَبِّكَ مُسْتَقِيمًا قَدْ فَصَّلْنَا الآيَاتِ لِقَوْمٍ يَذَّكَّرُونَ
আর এটাই আপনার পালনকর্তার সরল পথ। আমি উপদেশ গ্রহণকারীদের জন্যে আয়াতসমূহ পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ননা করেছি। [ সুরা আন’য়াম ৬:১২৬ ]
لَهُمْ دَارُ السَّلاَمِ عِندَ رَبِّهِمْ وَهُوَ وَلِيُّهُمْ بِمَا كَانُواْ يَعْمَلُونَ
তাদের জন্যেই তাদের প্রতিপালকের কাছে নিরাপত্তার গৃহ রয়েছে এবং তিনি তাদের বন্ধু তাদের কর্মের কারণে। [ সুরা আন’য়াম ৬:১২৭ ]
وَيَوْمَ يِحْشُرُهُمْ جَمِيعًا يَا مَعْشَرَ الْجِنِّ
قَدِ اسْتَكْثَرْتُم مِّنَ الإِنسِ وَقَالَ أَوْلِيَآؤُهُم مِّنَ الإِنسِ
رَبَّنَا اسْتَمْتَعَ بَعْضُنَا بِبَعْضٍ وَبَلَغْنَا أَجَلَنَا الَّذِيَ
أَجَّلْتَ لَنَا قَالَ النَّارُ مَثْوَاكُمْ خَالِدِينَ فِيهَا إِلاَّ مَا
شَاء اللّهُ إِنَّ رَبَّكَ حَكِيمٌ عَليمٌ
যেদিন আল্লাহ সবাইকে একত্রিত করবেন, হে জিন
সম্প্রদায়, তোমরা মানুষদের মধ্যে অনেককে অনুগামী করে নিয়েছ। তাদের মানব
বন্ধুরা বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা পরস্পরে পরস্পরের মাধ্যমে ফল লাভ
করেছি। আপনি আমাদের জন্যে যে সময় নির্ধারণ করেছিলেন, আমরা তাতে উপনীত
হয়েছি। আল্লাহ বলবেনঃ আগুন হল তোমাদের বাসস্থান। তথায় তোমরা চিরকাল
অবস্থান করবে; কিন্তু যখন চাইবেন আল্লাহ। নিশ্চয় আপনার পালনকর্তা
প্রজ্ঞাময়, মহাজ্ঞানী। [ সুরা আন’য়াম ৬:১২৮ ]
وَكَذَلِكَ نُوَلِّي بَعْضَ الظَّالِمِينَ بَعْضًا بِمَا كَانُواْ يَكْسِبُونَ
এমনিভাবে আমি পাপীদেরকে একে অপরের সাথে যুক্ত করে দেব তাদের কাজকর্মের কারণে। [ সুরা আন’য়াম ৬:১২৯ ]
يَا مَعْشَرَ الْجِنِّ وَالإِنسِ أَلَمْ يَأْتِكُمْ
رُسُلٌ مِّنكُمْ يَقُصُّونَ عَلَيْكُمْ آيَاتِي وَيُنذِرُونَكُمْ لِقَاء
يَوْمِكُمْ هَـذَا قَالُواْ شَهِدْنَا عَلَى أَنفُسِنَا وَغَرَّتْهُمُ
الْحَيَاةُ الدُّنْيَا وَشَهِدُواْ عَلَى أَنفُسِهِمْ أَنَّهُمْ كَانُواْ
كَافِرِينَ
হে জ্বিন ও মানব সম্প্রদায়, তোমাদের কাছে কি তোমাদের
মধ্য থেকে পয়গম্বরগণ আগমন করেনি? যাঁরা তোমাদেরকে আমার বিধানাবলী বর্ণনা
করতেন এবং তোমাদেরকে আজকের এ দিনের সাক্ষাতের ভীতি প্রদর্শন করতেন? তারা
বলবেঃ আমরা স্বীয় গোনাহ স্বীকার করে নিলাম। পার্থিব জীবন তাদেরকে প্রতারিত
করেছে। তারা নিজেদের বিরুদ্ধে স্বীকার করে নিয়েছে যে, তারা কাফের ছিল। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৩০ ]
ذَلِكَ أَن لَّمْ يَكُن رَّبُّكَ مُهْلِكَ الْقُرَى بِظُلْمٍ وَأَهْلُهَا غَافِلُونَ
এটা এ জন্যে যে, আপনার প্রতিপালক কোন জনপদের
অধিবাসীদেরকে জুলুমের কারণে ধ্বংস করেন না এমতাবস্থায় যে, তথাকার
অধিবাসীরা অজ্ঞ থাকে। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৩১ ]
وَلِكُلٍّ دَرَجَاتٌ مِّمَّا عَمِلُواْ وَمَا رَبُّكَ بِغَافِلٍ عَمَّا يَعْمَلُونَ
প্রত্যেকের জন্যে তাদের কর্মের আনুপাতিক মর্যাদা আছে এবং আপনার প্রতিপালক তাদের কর্ম সম্পর্কে বেখবর নন। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৩২ ]
وَرَبُّكَ الْغَنِيُّ ذُو الرَّحْمَةِ إِن يَشَأْ
يُذْهِبْكُمْ وَيَسْتَخْلِفْ مِن بَعْدِكُم مَّا يَشَاء كَمَا أَنشَأَكُم
مِّن ذُرِّيَّةِ قَوْمٍ آخَرِينَ
আপনার প্রতিপালক অমুখাপেক্ষী, করুণাময়। তিনি ইচ্ছা
করলে তোমাদের সবাইকে উচ্ছেদ করে দিবেন এবং তোমাদের পর যাকে ইচ্ছা তোমাদের
স্থলে অভিষিক্ত করবেন; যেমন তোমাদেরকে অন্য এক সম্প্রদায়ের বংশধর থেকে
সৃষ্টি করেছেন। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৩৩ ]
إِنَّ مَا تُوعَدُونَ لآتٍ وَمَا أَنتُم بِمُعْجِزِينَ
যে বিষয়ের ওয়াদা তোমাদের সাথে করা হয়, তা অবশ্যই আগমন করবে এবং তোমরা অক্ষম করতে পারবে না। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৩৪ ]
قُلْ يَا قَوْمِ اعْمَلُواْ عَلَى مَكَانَتِكُمْ
إِنِّي عَامِلٌ فَسَوْفَ تَعْلَمُونَ مَن تَكُونُ لَهُ عَاقِبَةُ الدِّارِ
إِنَّهُ لاَ يُفْلِحُ الظَّالِمُونَ
আপনি বলে দিনঃ হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা স্বস্থানে
কাজ করে যাও, আমিও কাজ করি। অচিরেই জানতে পারবে যে, পরিণাম গৃহ কে লাভ করে।
নিশ্চয় জালেমরা সুফলপ্রাপ্ত হবে না। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৩৫ ]
وَجَعَلُواْ لِلّهِ مِمِّا ذَرَأَ مِنَ الْحَرْثِ
وَالأَنْعَامِ نَصِيبًا فَقَالُواْ هَـذَا لِلّهِ بِزَعْمِهِمْ وَهَـذَا
لِشُرَكَآئِنَا فَمَا كَانَ لِشُرَكَآئِهِمْ فَلاَ يَصِلُ إِلَى اللّهِ
وَمَا كَانَ لِلّهِ فَهُوَ يَصِلُ إِلَى شُرَكَآئِهِمْ سَاء مَا
يَحْكُمُونَ
আল্লাহ যেসব শস্যক্ষেত্র ও জীবজন্তু সৃষ্টি করেছেন,
সেগুলো থেকে তারা এক অংশ আল্লাহর জন্য নির্ধারণ করে অতঃপর নিজ ধারণা
অনুসারে বলে এটা আল্লাহর এবং এটা আমাদের অংশীদারদের। অতঃপর যে অংশ তাদের
অংশীদারদের, তা তো আল্লাহর দিকে পৌঁছে না এবং যা আল্লাহর তা তাদের
উপাস্যদের দিকে পৌছে যায়। তাদের বিচার কতই না মন্দ। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৩৬ ]
وَكَذَلِكَ زَيَّنَ لِكَثِيرٍ مِّنَ الْمُشْرِكِينَ
قَتْلَ أَوْلاَدِهِمْ شُرَكَآؤُهُمْ لِيُرْدُوهُمْ وَلِيَلْبِسُواْ
عَلَيْهِمْ دِينَهُمْ وَلَوْ شَاء اللّهُ مَا فَعَلُوهُ فَذَرْهُمْ وَمَا
يَفْتَرُونَ
এমনিভাবে অনেক মুশরেকের দৃষ্টিতে তাদের উপাস্যরা
সন্তান হত্যাকে সুশোভিত করে দিয়েছে যেন তারা তাদেরকে বিনষ্ট করে দেয় এবং
তাদের ধর্মমতকে তাদের কাছে বিভ্রান্ত করে দেয়। যদি আল্লাহ চাইতেন, তবে
তারা এ কাজ করত না। অতএব, আপনি তাদেরকে এবং তাদের মনগড়া বুলিকে পরিত্যাগ
করুন। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৩৭ ]
وَقَالُواْ هَـذِهِ أَنْعَامٌ وَحَرْثٌ حِجْرٌ لاَّ
يَطْعَمُهَا إِلاَّ مَن نّشَاء بِزَعْمِهِمْ وَأَنْعَامٌ حُرِّمَتْ
ظُهُورُهَا وَأَنْعَامٌ لاَّ يَذْكُرُونَ اسْمَ اللّهِ عَلَيْهَا افْتِرَاء
عَلَيْهِ سَيَجْزِيهِم بِمَا كَانُواْ يَفْتَرُونَ
তারা বলেঃ এসব চতুষ্পদ জন্তু ও শস্যক্ষেত্র নিষিদ্ধ।
আমরা যাকে ইচছা করি, সে ছাড়া এগুলো কেউ খেতে পারবে না, তাদের ধারণা
অনুসারে। আর কিছুসংখ্যক চতুষ্পদ জন্তুর পিঠে আরোহন হারাম করা হয়েছে এবং
কিছু সংখ্যক চতুষ্পদ জন্তুর উপর তারা ভ্রান্ত ধারনা বশতঃ আল্লাহর নাম
উচ্চারণ করে না, তাদের মনগড়া বুলির কারণে, অচিরেই তিনি তাদের কে শাস্তি
দিবেন। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৩৮ ]
وَقَالُواْ مَا فِي بُطُونِ هَـذِهِ الأَنْعَامِ
خَالِصَةٌ لِّذُكُورِنَا وَمُحَرَّمٌ عَلَى أَزْوَاجِنَا وَإِن يَكُن
مَّيْتَةً فَهُمْ فِيهِ شُرَكَاء سَيَجْزِيهِمْ وَصْفَهُمْ إِنَّهُ حِكِيمٌ
عَلِيمٌ
তারা বলেঃ এসব চতুষ্পদ জন্তুর পেটে যা আছে, তা বিশেষ
ভাবে আমাদের পুরুষদের জন্যে এবং আমাদের মহিলাদের জন্যে তা হারাম। যদি তা
মৃত হয়, তবে তার প্রাপক হিসাবে সবাই সমান। অচিরেই তিনি তাদেরকে তাদের
বর্ণনার শাস্তি দিবেন। তিনি প্রজ্ঞাময়, মহাজ্ঞানী। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৩৯ ]
قَدْ خَسِرَ الَّذِينَ قَتَلُواْ أَوْلاَدَهُمْ
سَفَهًا بِغَيْرِ عِلْمٍ وَحَرَّمُواْ مَا رَزَقَهُمُ اللّهُ افْتِرَاء
عَلَى اللّهِ قَدْ ضَلُّواْ وَمَا كَانُواْ مُهْتَدِينَ
নিশ্চয় তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যারা নিজ
সন্তানদেরকে নির্বুদ্ধিতাবশতঃ কোন প্রমাণ ছাড়াই হত্যা করেছে এবং আল্লাহ
তাদেরকে যেসব দিয়েছিলেন, সেগুলোকে আল্লাহর প্রতি ভ্রান্ত ধারণা পোষণ করে
হারাম করে নিয়েছে। নিশ্চিতই তারা পথভ্রষ্ট হয়েছে এবং সুপথগামী হয়নি। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৪০ ]
وَهُوَ الَّذِي أَنشَأَ جَنَّاتٍ مَّعْرُوشَاتٍ
وَغَيْرَ مَعْرُوشَاتٍ وَالنَّخْلَ وَالزَّرْعَ مُخْتَلِفًا أُكُلُهُ
وَالزَّيْتُونَ وَالرُّمَّانَ مُتَشَابِهًا وَغَيْرَ مُتَشَابِهٍ كُلُواْ
مِن ثَمَرِهِ إِذَا أَثْمَرَ وَآتُواْ حَقَّهُ يَوْمَ حَصَادِهِ وَلاَ
تُسْرِفُواْ إِنَّهُ لاَ يُحِبُّ الْمُسْرِفِينَ
তিনিই উদ্যান সমূহ সৃষ্টি করেছে-তাও, যা মাচার উপর
তুলে দেয়া হয়, এবং যা মাচার উপর তোলা হয় না এবং খর্জুর বৃক্ষ ও
শস্যক্ষেত্র যেসবের স্বাদবিশিষ্ট এবং যয়তুন ও আনার সৃষ্টি করেছেন-একে
অন্যের সাদৃশ্যশীল এবং সাদৃশ্যহীন। এগুলোর ফল খাও, যখন ফলন্ত হয় এবং হক
দান কর কর্তনের সময়ে এবং অপব্যয় করো না। নিশ্চয় তিনি অপব্যয়ীদেরকে
পছন্দ করেন না। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৪১ ]
وَمِنَ الأَنْعَامِ حَمُولَةً وَفَرْشًا كُلُواْ
مِمَّا رَزَقَكُمُ اللّهُ وَلاَ تَتَّبِعُواْ خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ
إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِينٌ
তিনি সৃষ্টি করেছেন চতুষ্পদ জন্তুর মধ্যে বোঝা
বহনকারীকে এবং খর্বাকৃতিকে। আল্লাহ তোমাদেরকে যা কিছু দিয়েছেন, তা থেকে
খাও এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৪২ ]
ثَمَانِيَةَ أَزْوَاجٍ مِّنَ الضَّأْنِ اثْنَيْنِ
وَمِنَ الْمَعْزِ اثْنَيْنِ قُلْ آلذَّكَرَيْنِ حَرَّمَ أَمِ الأُنثَيَيْنِ
أَمَّا اشْتَمَلَتْ عَلَيْهِ أَرْحَامُ الأُنثَيَيْنِ نَبِّؤُونِي
بِعِلْمٍ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ
সৃষ্টি করেছেন আটটি নর ও মাদী। ভেড়ার মধ্যে দুই
প্রকার ও ছাগলের মধ্যে দুই প্রকার। জিজ্ঞেস করুন, তিনি কি উভয় নর হারাম
করেছেন, না উভয় মাদীকে ? না যা উভয় মাদীর পেটে আছে? তোমরা আমাকে প্রমাণসহ
বল, যদি তোমরা সত্যবাদী হও। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৪৩ ]
وَمِنَ الإِبْلِ اثْنَيْنِ وَمِنَ الْبَقَرِ اثْنَيْنِ
قُلْ آلذَّكَرَيْنِ حَرَّمَ أَمِ الأُنثَيَيْنِ أَمَّا اشْتَمَلَتْ
عَلَيْهِ أَرْحَامُ الأُنثَيَيْنِ أَمْ كُنتُمْ شُهَدَاء إِذْ وَصَّاكُمُ
اللّهُ بِهَـذَا فَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرَى عَلَى اللّهِ كَذِبًا
لِيُضِلَّ النَّاسَ بِغَيْرِ عِلْمٍ إِنَّ اللّهَ لاَ يَهْدِي الْقَوْمَ
الظَّالِمِينَ
সৃষ্টি করেছেন উটের মধ্যে দুই প্রকার এবং গরুর মধ্যে
দুই প্রকার। আপনি জিজ্ঞেস করুনঃ তিনি কি উভয় নর হারাম করেছেন, না উভয়
মাদীকে, না যা উভয় মাদীর পেটে আছে? তোমরা কি উপস্থিত ছিলে, যখন আল্লাহ এ
নির্দেশ দিয়েছিলেন? অতএব সে ব্যক্তি অপেক্ষা বেশী অত্যচারী কে, যে আল্লাহ
সম্পর্কে মিথ্যা ধারণা পোষন করে যাতে করে মানুষকে বিনা প্রমাণে পথভ্রষ্ট
করতে পারে? নিশ্চয় আল্লাহ অত্যাচারী সম্প্রদায়কে পথপ্রদর্শন করেন না। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৪৪ ]
قُل لاَّ أَجِدُ فِي مَا أُوْحِيَ إِلَيَّ مُحَرَّمًا
عَلَى طَاعِمٍ يَطْعَمُهُ إِلاَّ أَن يَكُونَ مَيْتَةً أَوْ دَمًا
مَّسْفُوحًا أَوْ لَحْمَ خِنزِيرٍ فَإِنَّهُ رِجْسٌ أَوْ فِسْقًا أُهِلَّ
لِغَيْرِ اللّهِ بِهِ فَمَنِ اضْطُرَّ غَيْرَ بَاغٍ وَلاَ عَادٍ فَإِنَّ
رَبَّكَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
আপনি বলে দিনঃ যা কিছু বিধান ওহীর মাধ্যমে আমার কাছে
পৌঁছেছে, তন্মধ্যে আমি কোন হারাম খাদ্য পাই না কোন ভক্ষণকারীর জন্যে, যা সে
ভক্ষণ করে; কিন্তু মৃত অথবা প্রবাহিত রক্ত অথবা শুকরের মাংস এটা অপবিত্র
অথবা অবৈধ; যবেহ করা জন্তু যা আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে উৎসর্গ করা হয়।
অতপর যে ক্ষুধায় কাতর হয়ে পড়ে এমতাবস্থায় যে অবাধ্যতা করে না এবং
সীমালঙ্গন করে না, নিশ্চয় আপনার পালনকর্তা ক্ষমাশীল দয়ালু। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৪৫ ]
وَعَلَى الَّذِينَ هَادُواْ حَرَّمْنَا كُلَّ ذِي
ظُفُرٍ وَمِنَ الْبَقَرِ وَالْغَنَمِ حَرَّمْنَا عَلَيْهِمْ شُحُومَهُمَا
إِلاَّ مَا حَمَلَتْ ظُهُورُهُمَا أَوِ الْحَوَايَا أَوْ مَا اخْتَلَطَ
بِعَظْمٍ ذَلِكَ جَزَيْنَاهُم بِبَغْيِهِمْ وِإِنَّا لَصَادِقُونَ
ইহুদীদের জন্যে আমি প্রত্যেক নখবিশিষ্ট জন্তু হারাম
করেছিলাম এবং ছাগল ও গরু থেকে এতদুভয়ের চর্বি আমি তাদের জন্যে হারাম
করেছিলাম, কিন্তু ঐ চর্বি, যা পৃষ্টে কিংবা অন্ত্রে সংযুক্ত থাকে অথবা
অস্থির সাথে মিলিত থাকে। তাদের অবাধ্যতার কারণে আমি তাদেরকে এ শাস্তি
দিয়েছিলাম। আর আমি অবশ্যই সত্যবাদী। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৪৬ ]
فَإِن كَذَّبُوكَ فَقُل رَّبُّكُمْ ذُو رَحْمَةٍ وَاسِعَةٍ وَلاَ يُرَدُّ بَأْسُهُ عَنِ الْقَوْمِ الْمُجْرِمِينَ
যদি তারা আপনাকে মিথ্যবাদী বলে, তবে বলে দিনঃ তোমার প্রতিপালক সুপ্রশস্ত করুণার মালিক। তাঁর শাস্তি অপরাধীদের উপর থেকে টলবে না। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৪৭ ]
سَيَقُولُ الَّذِينَ أَشْرَكُواْ لَوْ شَاء اللّهُ مَا
أَشْرَكْنَا وَلاَ آبَاؤُنَا وَلاَ حَرَّمْنَا مِن شَيْءٍ كَذَلِكَ
كَذَّبَ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِم حَتَّى ذَاقُواْ بَأْسَنَا قُلْ هَلْ
عِندَكُم مِّنْ عِلْمٍ فَتُخْرِجُوهُ لَنَا إِن تَتَّبِعُونَ إِلاَّ
الظَّنَّ وَإِنْ أَنتُمْ إَلاَّ تَخْرُصُونَ
এখন মুশরেকরা বলবেঃ যদি আল্লাহ ইচ্ছা করতেন, তবে না
আমরা শিরক করতাম, না আমাদের বাপ দাদারা এবং না আমরা কোন বস্তুকে হারাম
করতাম। এমনিভাবে তাদের পূর্ববর্তীরা মিথ্যারোপ করেছে, এমন কি তারা আমার
শাস্তি আস্বাদন করেছে। আপনি বলুনঃ তোমাদের কাছে কি কোন প্রমাণ আছে যা
আমাদেরকে দেখাতে পার। তোমরা শুধুমাত্র আন্দাজের অনুসরণ কর এবং তোমরা শুধু
অনুমান করে কথা বল। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৪৮ ]
قُلْ فَلِلّهِ الْحُجَّةُ الْبَالِغَةُ فَلَوْ شَاء لَهَدَاكُمْ أَجْمَعِينَ
আপনি বলে দিনঃ অতএব, পরিপূর্ন যুক্তি আল্লাহরই। তিনি ইচ্ছা করলে তোমাদের সবাইকে পথ প্রদর্শন করতেন। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৪৯ ]
قُلْ هَلُمَّ شُهَدَاءكُمُ الَّذِينَ يَشْهَدُونَ
أَنَّ اللّهَ حَرَّمَ هَـذَا فَإِن شَهِدُواْ فَلاَ تَشْهَدْ مَعَهُمْ
وَلاَ تَتَّبِعْ أَهْوَاء الَّذِينَ كَذَّبُواْ بِآيَاتِنَا وَالَّذِينَ
لاَ يُؤْمِنُونَ بِالآخِرَةِ وَهُم بِرَبِّهِمْ يَعْدِلُونَ
আপনি বলুনঃ তোমাদের সাক্ষীদেরকে আন, যারা সাক্ষ্য দেয়
যে, আল্লাহ তা'আলা এগুলো হারাম করেছেন। যদি তারা সাক্ষ্য দেয়, তবে আপনি এ
সাক্ষ্য গ্রহণ করবেন না এবং তাদের কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করবেন না, যারা
আমার নির্দেশাবলীকে মিথ্যা বলে, যারা পরকালে বিশ্বাস করে না এবং যারা
স্বীয় প্রতিপালকের সমতুল্য অংশীদার করে। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৫০ ]
قُلْ تَعَالَوْاْ أَتْلُ مَا حَرَّمَ رَبُّكُمْ
عَلَيْكُمْ أَلاَّ تُشْرِكُواْ بِهِ شَيْئًا وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا
وَلاَ تَقْتُلُواْ أَوْلاَدَكُم مِّنْ إمْلاَقٍ نَّحْنُ نَرْزُقُكُمْ
وَإِيَّاهُمْ وَلاَ تَقْرَبُواْ الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا
بَطَنَ وَلاَ تَقْتُلُواْ النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللّهُ إِلاَّ
بِالْحَقِّ ذَلِكُمْ وَصَّاكُمْ بِهِ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ
আপনি বলুনঃ এস, আমি তোমাদেরকে ঐসব বিষয় পাঠ করে
শুনাই, যেগুলো তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের জন্যে হারাম করেছেন। তাএই যে,
আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে অংশীদার করো না, পিতা-মাতার সাথে সদয় ব্যবহার করো
স্বীয় সন্তানদেরকে দারিদ্রে?র কারণে হত্যা করো না, আমি তোমাদেরকে ও
তাদেরকে আহার দেই, নির্লজ্জতার কাছেও যেয়ো না, প্রকাশ্য হোক কিংবা
অপ্রকাশ্য, যাকে হত্যা করা আল্লাহ হারাম করেছেন, তাকে হত্যা করো না; কিন্তু
ন্যায়ভাবে। তোমাদেরকে এ নির্দেশ দিয়েছেন, যেন তোমরা বুঝ। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৫১ ]
وَلاَ تَقْرَبُواْ مَالَ الْيَتِيمِ إِلاَّ بِالَّتِي
هِيَ أَحْسَنُ حَتَّى يَبْلُغَ أَشُدَّهُ وَأَوْفُواْ الْكَيْلَ
وَالْمِيزَانَ بِالْقِسْطِ لاَ نُكَلِّفُ نَفْسًا إِلاَّ وُسْعَهَا وَإِذَا
قُلْتُمْ فَاعْدِلُواْ وَلَوْ كَانَ ذَا قُرْبَى وَبِعَهْدِ اللّهِ
أَوْفُواْ ذَلِكُمْ وَصَّاكُم بِهِ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ
এতীমদের ধনসম্পদের কাছেও যেয়ো না; কিন্তু উত্তম
পন্থায় যে পর্যন্ত সে বয়ঃপ্রাপ্ত না হয়। ওজন ও মাপ পূর্ণ কর ন্যায়
সহকারে। আমি কাউকে তার সাধ্যের অতীত কষ্ট দেই না। যখন তোমরা কথা বল, তখন
সুবিচার কর, যদিও সে আত্নীয়ও হয়। আল্লাহর অঙ্গীকার পূর্ণ কর। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৫২ ]
وَأَنَّ هَـذَا صِرَاطِي مُسْتَقِيمًا فَاتَّبِعُوهُ
وَلاَ تَتَّبِعُواْ السُّبُلَ فَتَفَرَّقَ بِكُمْ عَن سَبِيلِهِ ذَلِكُمْ
وَصَّاكُم بِهِ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ
তোমাদেরকে এ নির্দেশ দিয়েছেন, যেন তোমরা উপদেশ গ্রহণ
কর। নিশ্চিত এটি আমার সরল পথ। অতএব, এ পথে চল এবং অন্যান্য পথে চলো না। তা
হলে সেসব পথ তোমাদেরকে তাঁর পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিবে। তোমাদেরকে এ
নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে তোমরা সংযত হও। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৫৩ ]
ثُمَّ آتَيْنَا مُوسَى الْكِتَابَ تَمَامًا عَلَى
الَّذِيَ أَحْسَنَ وَتَفْصِيلاً لِّكُلِّ شَيْءٍ وَهُدًى وَرَحْمَةً
لَّعَلَّهُم بِلِقَاء رَبِّهِمْ يُؤْمِنُونَ
অতঃপর আমি মূসাকে গ্রন্থ দিয়েছি, সৎকর্মীদের প্রতি
নেয়ামতপূর্ণ করার জন্যে, প্রত্যেক বস্তুর বিশদ বিবরণের জন্যে, হোদায়াতের
জন্যে এবং করুণার জন্যে-যাতে তারা স্বীয় পালনকর্তার সাথে সাক্ষাতে
বিশ্বাসী হয়। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৫৪ ]
وَهَـذَا كِتَابٌ أَنزَلْنَاهُ مُبَارَكٌ فَاتَّبِعُوهُ وَاتَّقُواْ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
এটি এমন একটি গ্রন্থ, যা আমি অবতীর্ণ করেছি, খুব মঙ্গলময়, অতএব, এর অনুসরণ কর এবং ভয় কর-যাতে তোমরা করুণাপ্রাপ্ত হও। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৫৫ ]
أَن تَقُولُواْ إِنَّمَا أُنزِلَ الْكِتَابُ عَلَى طَآئِفَتَيْنِ مِن قَبْلِنَا وَإِن كُنَّا عَن دِرَاسَتِهِمْ لَغَافِلِينَ
এ জন্যে যে, কখনও তোমরা বলতে শুরু করঃ গ্রন্থ তো কেবল
আমাদের পূর্ববর্তী দু'সম্প্রদা য়ের প্রতিই অবতীর্ণ হয়েছে এবং আমরা
সেগুলোর পাঠ ও পঠন সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৫৬ ]
أَوْ تَقُولُواْ لَوْ أَنَّا أُنزِلَ عَلَيْنَا
الْكِتَابُ لَكُنَّا أَهْدَى مِنْهُمْ فَقَدْ جَاءكُم بَيِّنَةٌ مِّن
رَّبِّكُمْ وَهُدًى وَرَحْمَةٌ فَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّن كَذَّبَ بِآيَاتِ
اللّهِ وَصَدَفَ عَنْهَا سَنَجْزِي الَّذِينَ يَصْدِفُونَ عَنْ آيَاتِنَا
سُوءَ الْعَذَابِ بِمَا كَانُواْ يَصْدِفُونَ
কিংবা বলতে শুরু করঃ যদি আমাদের প্রতি কোন গ্রন্থ
অবতীর্ণ হত, আমরা এদের চাইতে অধিক পথপ্রাপ্ত হতাম। অতএব, তোমাদের
পালনকর্তার পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে সুষ্পষ্ট প্রমাণ, হেদায়েত ও রহমত এসে
গেছে। অতঃপর সে ব্যক্তির চাইতে অধিক অনাচারী কে হবে, যে আল্লাহর আয়াত
সমূহকে মিথ্যা বলে এবং গা বাঁচিয়ে চলে। অতি সত্ত্বর আমি তাদেরকে শাস্তি
দেব। যারা আমার আয়াত সমূহ থেকে গা বাঁচিয়ে চলে-জঘন্য শাস্তি তাদের গা
বাঁচানোর কারণে। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৫৭ ]
هَلْ يَنظُرُونَ إِلاَّ أَن تَأْتِيهُمُ الْمَلآئِكَةُ
أَوْ يَأْتِيَ رَبُّكَ أَوْ يَأْتِيَ بَعْضُ آيَاتِ رَبِّكَ يَوْمَ
يَأْتِي بَعْضُ آيَاتِ رَبِّكَ لاَ يَنفَعُ نَفْسًا إِيمَانُهَا لَمْ
تَكُنْ آمَنَتْ مِن قَبْلُ أَوْ كَسَبَتْ فِي إِيمَانِهَا خَيْرًا قُلِ
انتَظِرُواْ إِنَّا مُنتَظِرُونَ
তারা শুধু এ বিষয়ের দিকে চেয়ে আছে যে, তাদের কাছে
ফেরেশতা আগমন করবে কিংবা আপনার পালনকর্তা আগমন করবেন অথবা আপনার পালনকর্তার
কোন নির্দেশ আসবে। যেদিন আপনার পালনকর্তার কোন নিদর্শন আসবে, সেদিন এমন
কোন ব্যক্তির বিশ্বাস স্থাপন তার জন্যে ফলপ্রসূ হবে না, যে পূর্ব থেকে
বিশ্বাস স্থাপন করেনি কিংবা স্বীয় বিশ্বাস অনুযায়ী কোনরূপ সৎকর্ম করেনি।
আপনি বলে দিনঃ তোমরা পথের দিকে চেয়ে থাক, আমরাও পথে দিকে তাকিয়ে রইলাম। [
সুরা আন’য়াম ৬:১৫৮ ]
إِنَّ الَّذِينَ فَرَّقُواْ دِينَهُمْ وَكَانُواْ
شِيَعًا لَّسْتَ مِنْهُمْ فِي شَيْءٍ إِنَّمَا أَمْرُهُمْ إِلَى اللّهِ
ثُمَّ يُنَبِّئُهُم بِمَا كَانُواْ يَفْعَلُونَ
নিশ্চয় যারা স্বীয় ধর্মকে খন্ড-বিখন্ড করেছে এবং
অনেক দল হয়ে গেছে, তাদের সাথে আপনার কোন সম্পর্ক নেই। তাদের ব্যাপার
আল্লাহ তা'আয়ালার নিকট সমর্পিত। অতঃপর তিনি বলে দেবেন যা কিছু তারা করে
থাকে। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৫৯ ]
مَن جَاء بِالْحَسَنَةِ فَلَهُ عَشْرُ أَمْثَالِهَا
وَمَن جَاء بِالسَّيِّئَةِ فَلاَ يُجْزَى إِلاَّ مِثْلَهَا وَهُمْ لاَ
يُظْلَمُونَ
যে একটি সৎকর্ম করবে, সে তার দশগুণ পাবে এবং যে, একটি
মন্দ কাজ করবে, সে তার সমান শাস্তিই পাবে। বস্তুতঃ তাদের প্রতি জুলুম করা
হবে না। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৬০ ]
قُلْ إِنَّنِي هَدَانِي رَبِّي إِلَى صِرَاطٍ
مُّسْتَقِيمٍ دِينًا قِيَمًا مِّلَّةَ إِبْرَاهِيمَ حَنِيفًا وَمَا كَانَ
مِنَ الْمُشْرِكِينَ
আপনি বলে দিনঃ আমার প্রতিপালক আমাকে সরল পথ প্রদর্শন
করেছেন একাগ্রচিত্ত ইব্রাহীমের বিশুদ্ধ ধর্ম। সে অংশীবাদীদের অন্তর্ভূক্ত
ছিল না। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৬১ ]
قُلْ إِنَّ صَلاَتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
আপনি বলুনঃ আমার নামায, আমার কোরবাণী এবং আমার জীবন ও মরন বিশ্ব-প্রতি পালক আল্লাহরই জন্যে। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৬২ ]
لاَ شَرِيكَ لَهُ وَبِذَلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَاْ أَوَّلُ الْمُسْلِمِينَ
তাঁর কোন অংশীদার নেই। আমি তাই আদিষ্ট হয়েছি এবং আমি প্রথম আনুগত্যশীল। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৬৩ ]
قُلْ أَغَيْرَ اللّهِ أَبْغِي رَبًّا وَهُوَ رَبُّ
كُلِّ شَيْءٍ وَلاَ تَكْسِبُ كُلُّ نَفْسٍ إِلاَّ عَلَيْهَا وَلاَ تَزِرُ
وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَى ثُمَّ إِلَى رَبِّكُم مَّرْجِعُكُمْ
فَيُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمْ فِيهِ تَخْتَلِفُونَ
আপনি বলুনঃ আমি কি আল্লাহ ব্যতীত অন্য প্রতিপালক
খোঁজব, অথচ তিনিই সবকিছুর প্রতিপালক? যে ব্যক্তি কোন গোনাহ করে, তা তারই
দায়িত্বে থাকে। কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না। অতঃপর তোমাদেরকে সবাইকে
প্রতিপালকের কাছে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। অনন্তর তিনি তোমাদেরকে বলে দিবেন,
যেসব বিষয়ে তোমরা বিরোধ করতে। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৬৪ ]
وَهُوَ الَّذِي جَعَلَكُمْ خَلاَئِفَ الأَرْضِ
وَرَفَعَ بَعْضَكُمْ فَوْقَ بَعْضٍ دَرَجَاتٍ لِّيَبْلُوَكُمْ فِي مَا
آتَاكُمْ إِنَّ رَبَّكَ سَرِيعُ الْعِقَابِ وَإِنَّهُ لَغَفُورٌ رَّحِيمٌ
তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছেন এবং একে
অন্যের উপর মর্যাদা সমুন্নত করেছেন, যাতে তোমাদের কে এ বিষয়ে পরীক্ষা
করেন, যা তোমাদেরকে দিয়েছেন। আপনার প্রতিপালক দ্রুত শাস্তি দাতা এবং তিনি
অত্যন্ত ক্ষমাশীল, দয়ালু। [ সুরা আন’য়াম ৬:১৬৫ ]
0 মন্তব্যসমূহ