তাওহীদ বা একত্ববাদের প্রকার




৫। প্রশ্ন : তাওহীদে রুবুবিয়্যাত বা আল্লাহর 'রব' সিফাতে তাওহীদ বলতে কি বুঝায়?
৫। উত্তর : আল্লাহর কার্যাবলীতে কাউকে অংশিদার না করা। অর্থাৎ একমাত্র তিনি সৃষ্টিকর্তা, রিযিক দাতা, জীবন-মৃত্যু ও উপকার-অপকারের মালিক ইত্যাদি।
আল্লাহ্‌ তাআলার বাণী :
اَلْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ
অর্থ : "সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজাহানের প্রতিপালক আল্লাহ্‌র জন্য।" সূরা আল-ফাতেহা : ২
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহকে সম্বোধন করে বলেন: "...তুমি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর প্রতিপালক...।" (বুখারী - মুসলিম)

৬। প্রশ্ন : ইবাদতে তাওহীদ বলতে কি বুঝায় ?
৬। উত্তর : ইবাদতের মালিক শুধু আল্লাহকেই জ্ঞান করা এবং সকল ইবাদত তাঁর জন্য উৎসর্গ করা। যেমন : দুআ, জবেহ্‌, মান্নত, বিনয়াবনত অবস্থা, প্রার্থনা, নামাজ, তাওয়াক্কুল ও ফয়সালা ইত্যাদির মালিক আল্লাহকে স্বীকার করা এবং শুধু তাঁর জন্যই সম্পাদন করা।
আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন :
وَإِلَهُكُمْ إِلَهٌ وَّاحِدٌ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الرَّحْمَنُ الرَّحِيْمُ
অর্থ : "আর তোমাদের ইলাহ একজন-ই, তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নেই, তিনি দয়াময় অতি দয়ালু।" সূরা আল-বাকারাহ্‌ : ১৬৩
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : "সর্ব প্রথম তাদেরকে এ সাক্ষ্য দেয়ার প্রতি আহ্বান করবে যে, আল্লাহ্‌ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।" (বুখারী - মুসলিম)
বুখারীর অন্য বর্ণনায় রয়েছে : "আল্লাহ্‌র একত্ববাদের ঈমানের প্রতি তাদেরকে আহ্‌বান করবে।"

৭। প্রশ্ন : রুবুবিয়্যাত ও ইবাদতের ক্ষেত্রে তাওহীদের লক্ষ্য কি?
৭। উত্তর : রুবুবিয়্যাত বা আল্লাহর সিফাতে 'রব' এবং ইবাদতে তাওহীদের লক্ষ্য হল, মানুষ আল্লাহর বড়ত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব অন্তরে ধারণ করত সকল ইবাদত তাঁর জন্য উৎসর্গ করবে। নিজ কর্ম ও আচরণে তাঁর অনুসরণ করবে। অন্তরে ঈমান সু-দৃঢ় রাখবে এবং পৃথিবীতে আল্লাহ্‌র বিধান প্রতিষ্ঠায় আত্মনিয়োগ করবে।

৮। প্রশ্ন : আল্লাহ্‌র নাম ও গুনাবলিতে তাওহীদ বলতে কি বুঝায় ?
৮। উত্তর : আল্লাহ্‌ তাআলা তাঁর কিতাবে নিজেকে যেসব গুণে গুণান্বিত করেছেন অথবা তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিশুদ্ধ হাদীসে তাঁর যেসব গুণাবলি বর্ণনা করেছেন তা প্রকৃত অর্থে, কোনরূপ অপব্যাখ্যা, তাঁর কোন সৃষ্টির সাথে সাদৃশ্য স্থাপন, তাঁর প্রকৃত গুণকে নিষ্ক্রিয় করা এবং কোন বিশেষ আকৃতি ধারনা করা ব্যতীত যথাযথ রূপেই বর্ণিত গুণাবলি তাঁর জন্য স্থির করা বুঝায়। যেমন : আরশে আসীন হওয়া, অবতরণ করা, হাত ইত্যাদি আল্লাহ্‌র পরিপূর্ণ শানের উপযোগী পর্যায়ে সাব্যস্ত কর বুঝা যায়। পবিত্র কুরআনের বাণী:
لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ وَهُوَ السَّمِيْعُ الْبَصِيْرُ
"কোন কিছুই তাঁর সাদৃশ্য নয়, তিনি সর্ব শ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।" সূরা আশ-শুরা : ১১

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : "আমাদের রব পৃথিবীর আকাশে প্রত্যেক রাতে অবতরণ করেন।" (বুখারী - মুসলিম) পৃথিবীর আকাশে আল্লাহ্‌ নিজস্ব শান ও স্বাতন্ত্রতা বজায় রেখে অবতরণ করেন, যার সাথে অন্য কোন কিছুর তুলনা হয় না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ